৭ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৩:৩৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
হাফসা আক্তার:
ঢাকা কাস্টম হাউসে যাত্রী হয়রানি, নতুন নয়, রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ। পদে পদে অনিয়ম দুর্নীতি ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই।
অভিযোগ রয়েছে, আইন ও বিচার শাখার অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টম কর্তৃক আটককৃত মালামালের নথি আইন ও বিচার শাখায় গেলে, চাইলা প্রু মারমার দালাল চক্র ও সিন্ডিকেটের কাছে সাধারণ যাত্রীরা হয়রানি শিকার হতে হয়। এই অফিসে নথি এলে নথি আটকে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। এই অফিস সহকারী চাহিদা অনুযায়ী উৎকোচ না পেলে ফাইল থেকে গায়েব হয়ে যায় নথি। আর প্রতিটি ফাইল ফোটাবের জন্য অফিস সহকারী চাইলাকে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা দিতে হয়। এই শাখায় সরকারি নিয়োগকৃত না হয়েও, সরকারি চেয়ার টেবিল ব্যবহারকারী শেফালীকে প্রতিটি ফাইলের জন্য ১৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা দিতে হয়। এই শাখা ঘুষ-দুর্নীতি আঁতুড়ঘর। বিচার শাখায় ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না। রয়েছে দালাল সিন্ডিকেট। দালাল দিয়ে কাজ করতে হয়। দালাল ছাড়া কাজ করা অসম্ভব। দালালের মাধ্যমে কাজ করলে বিদ্যুৎ গতিতে কাজ হয়। বিচার শাখায় গড়ে উঠেছে শক্তিশালী দালাল চক্র। ঘুষ দিলে কাজ হয় বিদ্যুৎ গতিতে, আর না দিলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় প্রবাসী বাংলাদেশি যাত্রীরা।
অভিযোগ রয়েছে, অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমার এক ডজন দালাল রয়েছে। দালাল ও সিন্ডিকেটের প্রধান মোস্তাফিজ ও রহমান, এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি নিজেই। আর এই দালাল সিন্ডিকেট ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না। আর দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। দালাল ছাড়া কাজ করতে চাইলে সেবা প্রার্থীদেরকে মাসকে মাস ঘুরতে হয়। যোগদানের পর থেকেই আইন ও বিচার শাখায় দুর্নীতির রামরাজত্ব গড়ে তুুলেন চাইলা প্রু মারমা।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবাসী সহ যাত্রীর কাছে পাওয়া শুল্কযুক্ত স্বর্ণের বার, স্বর্ণালংকার, শাড়ি, মোবাইল ফোন, থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন মালপত্র আটক করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তখন কাস্টম গোডাউনে মালপত্র আটক রেখে ডি, এম (ডিটেনশন ম্যামো) মামলা দিয়ে যাত্রীদের ছেড়ে দেয়াহয়। পরে শুল্ক পরিশোধের মাধ্যমে মালপত্র খালাস করতে বিমানবন্দর কাস্টমসে আসেন যাত্রীরা।
এ সময় মোস্তাফিজ ও রহমান দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন। শুধু আইন ও বিচার শাখায় প্রায় দুই ডজন দালাল তৎপর রয়েছে কাস্টমস অফিস ঘিরে। কিছু কর্মকর্তা ও চাইলা প্রু মারমার যোগসাজশে এ কাজটি করছে দালাল চক্র। শুল্ক পরিশোধ না করায় আটক বিভিন্ন পণ্য খালাস ঘিরে বাণিজ্য করছে এই দালাল চক্র। মালপত্র খালাসের নামে ‘কন্টাক্ট’ করে লাখ লাখ টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিরীহ প্রবাসী বাংলাদেশী যাত্রীরা। কর্মকর্তাদের হয়রানি এড়াতে প্রবাসীরাও ঝুঁঁকছেন দালালদের দিকে। বিশেষ করে নিয়ম না জানার কারণে স্বর্ণ এনে বিমানবন্দরে বিপদে পড়েন প্রবাসীরা। আর এতেই কপাল খুলেছে কর্মকর্তাদের ও দালাল চক্রের।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, আমি দেশের বাহিরে ঘুরতে গিয়েছিলাম বাইরে থেকে আশার সময় পরিবারের জন্য ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার জন্য একটি মেশিন নিয়ে আসি। ডি, এম (ডিটেনশন ম্যামো) বিচার শাখায় গেলে চাইলা প্রু মারমা বলেন, আপনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আসেন। তারপর ফাইল ফোটার দিবো। আর এখানে ঘোরাঘুরি করে লাভ নাই।
অভিযোগের বিষয়ে, অফিস সহকারী চাইলা প্রু মারমা মুঠোফোনে বলেন, ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা কেউ যদি আমার নামে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে এটার দায় কি আমার? শেফালীর বিষয় তিনি বলেন, এটা আমার কতৃপক্ষ জানে এটা আমি জানি না। প্রশ্ন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়পত্র নিয়ে, তিনি বলেন, আমার আর,ও স্যার আমাকে বলে দিয়েছে তাই আমি বলেছি, নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন আসিফ স্যার।
Leave a Reply