১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৮:১০ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
এ নিয়ে আইনজীবী হত্যা মামলায় মোট তিন আসামি জবানবন্দি দিলেন। এর আগে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) জবানবন্দি দেন প্রধান আসামি চন্দন দাস। এরপর শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) জবানবন্দি দেন আরেক আসামি রাজিব ভট্টাচার্য।
আলিফ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর পুলিশের এসি (কোতোয়ালি জোন) মাহফুজুর রহমান জানান, ঘটনার দিন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গনে স্লোগান দেন রিপন দাস। পরে চিন্ময়কে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় সেবক কলোনি এলাকায় চলে যান। সেখানে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জবানবন্দিতে আসামি রিপন জানান- ঘটনার দিন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে বঁটি দিয়ে কোপান তিনি নিজে। কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস ও রাজিব ভট্টাচার্য। হত্যাকাণ্ডে অংশে নেয়া ১০ থেকে ১২ জনকে চেনেন রিপন দাস।
রিপস দাস নগরের চকবাজার এলাকায় একটি ফার্মেসিতে কাজ করতেন। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১০ ডিসেম্বর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড দেন আদালত। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর কোতোয়ালি থানার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপরই আদালত এলাকায় শুরু হয় তার অনুসারীদের তাণ্ডব। কারাগারে নেয়ার জন্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানটি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন।
একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর এবং চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আলিফ লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারাঙ্গা এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।
আলিফ হত্যার ঘটনায় ২৯ নভেম্বর নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন তার বাবা জামাল উদ্দিন। এতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়। একইদিন কোতোয়ালি থানায় আরো একটি মামলা করেন আলিফের বড়ভাই খানে আলম। আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়।
এর আগে, পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তিনটি মামলা করে পুলিশ। এছাড়াও ৩ ডিসেম্বর একই অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলরসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মোহাম্মদ উল্লাহ চৌধুরী নামে এক ব্যবসায়ী।
এরপর ৮ ডিসেম্বর হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন এনামুল হক নামে একজন। এনামুল নিজেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কর্মী বলে উল্লেখ করেন। এতে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আবেদনটি গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। ২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৪০ জন। তাদের মধ্যে হত্যা মামলায় গ্রেফতার ১০ জন।
সবা:স:জু- ৩৫৮/২৪
Leave a Reply