৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৭:৪১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
অনলাইন ডেস্কঃ
উত্তরা থেকে টঙ্গী রাস্তা এখন ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য। দিনে রাতে চোখের পলকে এই রাস্তায় ছোঁ মেরে ছিনতাই করছে বেশ কয়েকটি চক্র। রামদা-হাতুড়ি নিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙেও ছিনতাই করছে এরা। রাজধানীর মহাখালী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ৯টি পয়েন্টে মানুষকে নিঃস্ব করছে এসব চক্র। আলোচিত এই ‘ছোঁ-মারা’ পার্টির ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
উন্নয়ন কাজ চলায় দিনরাত যানজট লেগে থাকে উত্তরা-টঙ্গীর রাস্তায়। এর মাঝে রাস্তার পাশ দিয়ে অথবা জ্যামে থাকা গাড়ির ফাঁক দিয়ে ব্যস্ত হয়ে হাঁটতে দেখা যায় কিছু কিশোর-তরুণদের। প্রাইভেটকার বা বাস দাঁড়ানো অবস্থায় শুরু হয় এদের অপারেশন। একজনের ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল কিংবা অন্য মূল্যবান জিনিস নিয়ে মুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যায় তারা।
শুধু হাত দিয়ে ছোঁ মারা নয়, টঙ্গীর রাস্তায়ও হরহামেশা দেখা যায় এমন চিত্র। রামদা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রাইভেটকারে হামলা চালাতেও দেখা গেছে ছিনতাইকারীদের। এসব ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠার পর সাধারণ মানুষে বেশে অভিযানে নামে গোয়েন্দারা। ছিনতাইকারীদের পেছনে তক্কে তক্কে ছিল পুলিশ। বাসে ছোঁ মারার সাথে সাথে হাতেনাতে কয়েকজনকে পাকড়াও করে তারা।
ছিনতাইকারী চক্রের ভাষায়, এরা নিজেদের ‘থাবা পার্টি’ বা ‘ছোঁ মারা’ পার্টি বলে। ঢাকার মহাখালী, বনানী, কাকলী মোড়, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর মোড়, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী পর্যন্ত ৯-১০টি পয়েন্টে সক্রিয় রয়েছে কয়েকটি চক্র। সবচেয়ে বড় চক্র মিজান-জয়-বাবু চক্র। এদের ১৬ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
ডিএমপির ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, এরা প্রতিদিনই এই কাজটি করে থাকে ৪টি দলে ভাগ হয়ে। একটি ভাগ হচ্ছে ছিনতাইকারী, ছোঁ মারা পার্টি। এরা ট্রেন-বাস-প্রাইভেট কারের জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল, ব্যাগ বা, গলা থেকে স্বর্ণের চেইন টান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মিজান চক্রের সদস্যরা ছিনতাই করা মোবাইল ও অন্য জিনিস নিয়ে দিতো সুমন, ফারুক ও সজিবের কাছে। যারা উত্তরখান এলাকার দোবাদিয়ার বিসমিল্লাহ মোবাইল সার্ভিসিং দোকান থেকে এসব মোবাইলের কেনাবেচা করতো।
ডিএমপির ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন কিংবা ভেঙ্গেচুরে যন্ত্রপাতি বিক্রি করে, তাদের সংখ্যা ২-৩ জন। আর মহাজন আছে ২-৩ জন। তারা মোবাইল বা স্বর্ণের চেইন কিনে নেয়। ছিনতাই করে ১২-১৩ জন। এই কাজগুলো তারা ঢাকা শহরে করে আসছে। আমরা অনেককে ধরতে পেরেছি। আবার, এরা যখন জেলে যায়, মহাজনরা এদের পরিবারকে সহায়তা দিয়ে চালায়। উকিল নিয়োগ করে ছিনতাইকারীদের ছাড়িয়েও আনে।
পুলিশ বলছে, চুরির মামলায় এরা বেশিদিন জেলে থাকে না। জামিনে বেরিয়ে আবার শুরু করে আগের অপকর্ম। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তাই এসব কিশোর-তরুণদের পুনর্বাসন জরুরি।
সূত্রঃ যমুনা টেলিভিশন
Leave a Reply