১৩ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৬:৩৮ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
রাহিমা আক্তার মুক্তা:
অনুসন্ধানী রিপোর্ট , রাজধানীর উত্তরা বিআরটিএ দুর্নীতির আখড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্য চলে এ যেন দেখার কেউ নেই। আর এসব নিয়ন্ত্রণে কাজ করে দালাল চক্র। প্রতি লাইসেন্স বাবদ ৩০০০ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়। প্রতিটা সেক্টরে ধাপে ধাপ এভাবে টাকা নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালায়। ঘুষ ছাড়া কোন সেবাই পাওয়া যায় না উত্তরা বিআরটিএ। প্রায় ৩০০ জনের মত দালাল কাজ করছে উত্তরা বিআরটিএ আর এসব দালালের মাধ্যমেই ঘোষের টাকা উপর লেভেলের কর্মকর্তার কাছে চলে যায়। ঘুষ খেয়ে মুখ বন্ধ হয়ে যায় অটো পাস এ যেন এক গণেশের কেরামতি খেলা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কথা উঠলেই যানবাহন-সংশ্লিষ্ট সবার চোখের সামনে এক ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র ভেসে ওঠে।
ভোগান্তির অপর নাম যেন বিআরটিএ। তবে দালালের শরণাপন্ন হলে সহজেই হয়ে যায় ভোগান্তির উপশম। আর এ জন্য গুনতে হয় মোটা অঙ্কের ঘুস।
গাড়ির ফিটনেস থেকে শুরু করে রুট পারমিট, মালিকানা, নাম্বার প্লেট প্রত্যেকটা জায়গায় ঘুসের বানিজ্য, তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স তো আছেই।
প্রতিটি কাজের জন্য ঘুস। দালালচক্রের মাধ্যমে প্রতিটি কাজের জন্য ভিন্ন ভিন্ন রেটে ঘুস আদায় করা হয়।
উত্তরা বিআরটিএ কার্যালয়ের এ চিত্র উঠে এসেছে অনুসন্ধানী প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, নম্বর প্লেট, ফিটনেস, লার্নার, মালিকানা পরিবর্তন, রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত কাজে সেখানে ঘুস বাণিজ্য ওপেন সিক্রেট।
ঘুস দিয়েই পাশ করা যায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায়; দক্ষতা প্রমাণের দরকার হয় না। ঘুস দিয়েই ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়া যায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির।
সরকারি ফি এটা এখন খাতা কলমে লেখা মাত্র,
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে এসে প্রতিটা ধাপে ধাপে ঘুষ দিতে হয় ঘুষ বাণিজ্য ছাড়া কাজ করা হয় না আর এসব ঘুষ বাণিজ্যের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা হয়রানির শিকার হয়েছেন এমনই এক ভুক্তভোগি মোঃ জাকির জানান তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আটজন দালালকে ২০০০০ টাকা দিয়েছেন কিন্তু তার কাজ সম্পন্ন হয়নি। আজকাল বলে ছয় মাস ধরে তাকে ঘুরাচ্ছে এই ভুক্তভোগী কাজলের বাড়ি রুপগঞ্জ তিনি এখনও ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় নি। আট জন দালালের মধ্যে দুজনের নাম পাওয়া গেছে দালাল কামাল দালাল সুমন। এ বিষয়ে উত্তরা বিআরটিএ দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন ধরনের বক্তব্য দিতে নারাজ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিআরটিএ ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র ভেসে উঠে ভোগান্তির অপর নাম যেন বিআরটিএ।
বস্তুত এ চিত্র কেবল উত্তরা বিআরটিএ কার্যালয়ের নয়, দেশের প্রায় সব বিআরটিএ কার্যালয়েই কম-বেশি এ অবস্থা বিরাজ করছে।
দালালদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়। কিছুদিন পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত ভালো থাকে; তারপর আবার সবকিছু আগের মতো।
এর কারণ দালালদের তৎপরতা চলে বিআরটিএ’র একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে। মূলত তারাই দালালদের পৃষ্ঠপোষক। তাই বন্ধ হয় না বিআরটিএ কার্যালয়ের দুর্নীতি এবং দালালদের অপতৎপরতায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্য চলে।
বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সড়কের নিরাপত্তার বিষয়টি। অদক্ষ চালক লাইসেন্স পেয়ে গাড়ি চালালে অথবা সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চললে এর পরিণতি কী হতে পারে, তা সবার জানা। বস্তুত এসব কারণেই দেশে সড়ক দুর্ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
তাই সরকারের উচিত এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং বিআরটিএ কার্যালয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা করা।
তবে সেক্ষেত্রে দেখতে হবে শর্ষের ভেতরেই যেন ভূত না থাকে। অর্থাৎ নজরদারির দায়িত্ব যাদের দেওয়া হবে, তারাও যেন দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে না পড়ে।
আমরা মনে করি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিজেদের দুর্নীতিমুক্ত রাখতে পারলে নিম্নপর্যায়ের দুর্নীতিও রোধ করা সম্ভব। মুশকিল হচ্ছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘুসের লোভ সংবরণ করতে পারেন না।
তাই আশকারা পায় অধস্তনরা, গজিয়ে ওঠে দালালচক্র। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয় তথা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় যদি বিআরটিএ’র দুর্নীতি রোধে আন্তরিক হয়, একমাত্র তাতেই মিলতে পারে সুফল। উত্তরা বিআরটিএ দুর্নীতির সাথে দালাল সহ যারা জড়িত তাদের নামসহ আসছে বিস্তারিত। চোখ রাখুন দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকায় ।
Leave a Reply