1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
  3. editorsobujbangladesh@gmail.com : sumona akter : sumona akter
উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আ ন ম বদরুদ্দোজা পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষায় মরিয়া - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১২:২২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আ ন ম বদরুদ্দোজা পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষায় মরিয়া

উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি আ ন ম বদরুদ্দোজা পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষায় মরিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজধানীর উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের রক্ষায় কাজ করার অভিযোগ ওঠেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের অভিভাবক এবং স্বৈরাচার বিরোধী শিক্ষকগণ বলছেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা পালিয়ে গেলেও বর্তমান সভাপতি ঢাকা উত্তর সিটিকরপোরেশন অঞ্চল-১০ এর নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা স্কুলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর হতেই স্কুল পরিচালনায় নানা অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এছাড়া মহামান্য হাইকোর্টের জাজমেন্টে ইতোপূর্বে চাকুরীচ্যুত মোঃ হাফিজুর রহমান মোল্যাকে বেআইনিভাবে অধ্যক্ষ পদে পূনর্বহালের চেষ্টা করেছেন। অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কঠোর বিরোধিতায় তাতে ব্যর্থ হয়ে ছাত্র হত্যা মামলার আসামীর স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে অত্র বিদ্যালয়ে পতিত স্বৈরাচারকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন তিনি, এমনটাই দাবি সংশ্লিষ্টদের। মহামান্য হাইকোর্ট তার নিয়োগকৃত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ৩ মাসের স্টে অর্ডার প্রদান করা সত্ত্বেও উক্ত অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অপসারণ করেননি বদরুদ্দোজা। তার প্রত্যক্ষ মদদে অবৈধভাবে পদে থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদার স্বৈরাচার বিরোধী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন বলে জানাগেছে।
৫ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের অফিস আদেশে গত ০৪-০৯-২০২৪ তারিখে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, অঞ্চল-১০ এর নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম। তার বদলির পরে গত ১৯ নভেম্বর’২৪ তারিখ আ ন ম বদরুদ্দোজা সভাপতি হিসেবে নাছিমা খানমের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং এর সাথে জড়িয়ে পরেন এবং সকল ক্ষেত্রে তিনি পতিত স্বৈরাচারের দোসর মুষ্ঠিমেয় শিক্ষকদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষায় মরিয়া হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক একাডেমিক এবং কো- কারিকুলাম কার্যক্রমে তিনি কোন ভূমিকা রাখেননি। ফলে অত্র প্রতিষ্ঠানে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে অদ্যাবধি প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীকে ছাপানো সিলেবাস, আইডি কার্ড, বাৎসরিক একাডেমিক ক্যালেন্ডার দেওয়া হয়নি। এমনকি বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব ও প্রতিযোগী প্যানেল শিক্ষক- কর্মচারীগণ যথাসময়ে সম্পন্ন করলেও বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা-২০২৫ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়নি। যা প্রতিষ্ঠানটির গত ৪০ বছর সময়কালে ঘটেনি।
অভিযোগ আছে, বিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের প্রত্যক্ষ মদদে স্বৈরাচারের দোসর কতিপয় শিক্ষক জুলাই-২০২৪ গণঅভ্যুথথানের নেতৃত্ব দানকারী শিক্ষার্থীদেরকে সকল ক্ষেত্রে বঞ্চনা ও নানাবিধ হয়রানি করছেন। যার অন্যতম উদারহরণ হলো গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া অত্র বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ১৭০০ শিক্ষার্থীর নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ষড়যন্ত্রমূলক তাদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য গত ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখ “তারুণ্য উৎসব” উদযাপন করেন। এ বিষয়ে অধিকাংশ শিক্ষক, বঞ্চিত শিক্ষার্থীবৃন্দ ও অভিভাবকগণ উক্ত উৎসব অনুষ্ঠানের তারিখ পরিবর্তনের আবেদন-নিবেদন করার পরেও সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাদের ষড়যন্ত্রমূলক সিদ্ধান্তে অনড় থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ১৭০০ জন শিক্ষার্থীকে উৎসবে অংশ নেওয়া হতে বঞ্চিত করেছেন।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, নিয়োগ পরীক্ষায় মাত্র ২০% নম্বর পেয়ে অকৃতকার্য হওয়ার পরেও ফ্যাসিবাদের সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের মদদে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পাওয়া এবং পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের ১১৭০২/২০২১ নং রীট পিটিশনের গত ১৭-০৮-২০২২ তারিখের জাজমেন্টে অধ্যক্ষ পদ হতে চাকুরিচ্যুত সেই হাফিজুর রহমান মোল্যাকে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করেন। এতে ছাত্র শিক্ষক ও অভিবাবকদের তোপের মুখে পড়ে তিনি বিদ্যালয়টিতে পতিত স্বৈরাচারকে প্রতিষ্ঠা করার বিকল্প পথে হাঁটতে শুরু করেন।
বিকল্প পথে নাটক সাজিয়ে, ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখ হতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী দিবা পর্বের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরিদুর রহমানকে গত ১১ জুলাই ২০২৪ থেকে বিদ্যালয়ে অনপুস্থিত দেখিয়ে শিক্ষা বোর্ডে গত ১২ ডিসেম্বর ২৪ তারিখে পত্র লেখেন সভাপতি বদরুদ্দোজা। অথচ প্রতিবেদকের হাতে আসা রেকর্ড পত্রে প্রমাণ মিলেছে তার উক্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও অসত্য। পরে শিক্ষা বোর্ডের জারিকৃত গত ১৯-১২-২০২৪ তারিখের পত্রের নির্দেশনা লংঘন করে অপেক্ষাকৃত জুনিয়র প্রভাষক ও প্রশাসনিক কাজে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ ইভানা তালুকদারকে গত ২২-১২-২০২৪ তারিখ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেন। যা বিধি সম্মত নয়। মোঃ ফরিদুর রহমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ১৯-১২-২৪ তারিখেও বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকে অফিসিয়াল কাজ করেছেন, তার অনেক তথ্য প্রমাণ সরবরাহ করা হয়েছে এ প্রতিবেদকের নিকট।
জানাগেছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের স্বামী মোঃ শফিকুল ইসলাম ঢাকা কোতোয়ালি থানায় ২১ নভেম্বর ‘২৪ তারিখে দায়েরকৃত ছাত্র-জনতা হত্যা চেষ্টার ১২ নং মামলার ৭২ নং আসামি। সিনিয়ারিটি লঙ্ঘন করে জুলাই গণঅভ্যুথথানে শিক্ষার্থী হত্যা চেষ্টা কারী হিসেবে অভিযুক্ত একজন ফ্যাসিস্টের স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে বদরুদ্ধোজা নিজেও পতিত স্বৈরাচারের দোসর হওয়ার প্রমাণ দিয়েছেন। বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, আ ন ম বদরুদ্দোজা ২৯ তম (২০১০) বিসিএস-এ প্রশাসন ক্যাডারে ১১ জুলাই ২০১১ তারিখের প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ প্রাপ্ত ১৭৭ জনের মধ্যে ১৫৩ ক্রমিকে পতিত স্বৈরাচারের বিশেষ কোটায় নিয়োগ পেয়েছে। ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২০২৪ সনের মে মাসে ১৯৭ নং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ পেয়ে বাগেরহাট জেলায় ২৭মে হতে ৩১ মে পর্যন্ত পতিত স্বৈরাচারকে ভোট চুরিতে গুরুত্বপূর্ণ খিদমত দিয়েছেন বদরুদ্দোজা। তিনি স্বৈরাচারের দোসর হওয়ার বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় জুলাই আন্দোলনকারী ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকগণ বেশ ক্ষুব্ধ। বিষয়গুলো নিয়ে সোচ্চার থাকা শিক্ষকদের মধ্যে থেকে বেচে বেচে প্রতিবাদী কয়েকজন শিক্ষককে ইতোমধ্যে তার প্রত্যক্ষ মদদে শোকজ করা হয়েছে।
জোষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করায় ২১৬/২০২৫ ও ১১৮৪/২০২৫ এ দুটি রীট পিটিশনেই মহামান্য হাইকোর্ট উক্ত নিয়োগের ওপর গত ২৭ জানুয়ারী ৩ মাসের স্টে অর্ডার প্রদান করেন। মহামান্য হাইকোর্ট স্টে অর্ডার দেয়ার পরেও বদরুদ্দোজা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ থেকে ইভানা তালুকদারকে অপসারণ করেননি। বরং তার পক্ষ নিয়ে আপীল করার নির্দেশনা চেয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে গত ০৯-০২-২০২৫ তারিখে পত্র লিখেন তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি, সভাপতি হিসেবে তিনি নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। প্রকাশ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিং উস্কে দিয়ে বিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী করেছেন। একাডেমিক জরুরী কাজে কোন সহযোগিতা না করে বরং পতিত স্বৈরাচারের দোসর মুষ্টিমেয় শিক্ষকদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষায় বেশি ব্যস্ত সভাপতি বদরুদ্দোজা। পবিত্র রমাদ্বান মাস চলছে,অথচ ১২ মার্চ তারিখেও প্রতিষ্ঠানটির ২২৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীর ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন-ভাতা প্রদান করেননি বদরুদ্দোজা।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে স্কুলের সভাপতি বদরুদ্দোজা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। এখানে পাল্টাপাল্টি রিটের কারনে সঠিক কাজ করা যাচ্ছে না। এর বেশী কিছু জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলার কথা বলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »