৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৫:১০ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
একসময় অভাবের কারণে বাবা আবদুল মোতালেবের হাত ধরে সেই শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় আসেন শহিদুল। ঢাকায় এসে ঘাটি গাড়েন আগারগাঁও বিএনপি বস্তুিতে। জানা গেছে, এই বস্তুিতেই তার বেড়ে ওঠা। করতেন পাশপোর্ট অফিসের দালালি। এখন সে মারাত্মক নেতা। তার ভয়ে পিলে চমকাবে যে কারো। স্থানীয় কাউন্সিলর, মন্ত্রী থাকে তার পকেটে। অর্থাভাবে লেখা পড়া ঠিকমতো করতে না পারলেও এলজিইডির নিয়োগ পত্রে দাখিল করেছে বিএ পাশের সার্টিফিকেট। অথচ খোজ নিয়ে জানা গেছে সে তেমন লেখা পড়া করে নাই। যে কারণে দপ্তরে কানা ঘুষা হয় দেশে লেখা পড়া করা এতো বেকার যোগ্য যুবক থাকতে কিভাবে শহিদুল সরকারি চাকরিতে এখনও বহাল রয়েছে। সুত্র বলছে ২০১৩-১৪ সালে এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমানের আমলে প্রায় চার হাজার চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী চাকরি স্থায়ী করনের জন্য আদালতে মামলা দাখিল করে। ঠিক সেই সুযোগে চতুর শহিদুল নিজের নামটি (এইচপিপিপি) নামক ভূয়া প্রকল্পে ১৮-১১-১৯৯৯ সালে হিসাব সহকারী হিসেবে নাম ঢুকিয়ে দপ্তরটিতে জায়গা করে নেন। অথচ খোজ নিয়ে জানা গেছে এ ধরনের কোন প্রকল্পের অস্তিত্ব এ দপ্তরে কখনোই ছিলোনা। পরবর্তীতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত চাকরি স্থায়ী করনের পক্ষে রিট মামলা/ সিপি নং ৩৫৩৬/২০১০, সিপি নং-৬০২/২০১১ ক্রমিক নং-১২ রায় দিলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্রামীণ সড়ক ও হাটবাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ২৩-১০-২০১২ তার নামটি স্থায়ী হয়। দেশের বেশির ভাগ সরকারি দপ্তরের তৃতীয়/ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কারনে বদনাম হচ্ছে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের। তারা রাজনীতির নাম ভাঙ্গিয়ে দপ্তরগুলোতে এক ধরনের সেচ্ছাচারি আধিপত্য বিস্তার করেছে। কেউ কেউ আবার একাধিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে তটস্থ করে রেখেছে। অনেকেই আবার স্থানীয় মন্ত্রী এমপিদের সাথে ছবি তুলে সেই ছবি অফিসে বা বাসায় ঝুলিয়ে রেখে সাধারণ মানুষকে বুঝাতে চান মন্ত্রী এমপিদের সাথে তার চরম সম্পর্ক, তারে ছাড়া তাদের বাঁচা দায়। সে যদি তাদের রাজনীতি না করে তাহলে গদি বাঁচানোই সম্ভব না। ভাব ভংগিমাতেও এরা অনেক এগিয়ে। যে কারণে সাধারণ মানুষ তাদের কথায় আকৃষ্ট হয় খুব সহজে। চাকরি, বদলি, টেন্ডার পাইয়ে দেয়া তাদের কাছে কোন ব্যাপারইনা। এখানেই প্রতারিত হয় সাধারণ মানুষ। এভাবে ভুক্তভোগীদের অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন- এদের খপ্পরে পড়ে। কিছু কিছু দপ্তরে কোন ধরনের কর্মচারী ইউনিয়নের অফিস নেই অথবা অনুমতি নেই তারপরও তারা অত্র দপ্তরের সভাপতি/সাধারন সম্পাদক পরিচয় দিয়ে দপ্তরগুলোতে একধরনের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদেরই একজন এলজিইডির শহিদুল ইসলাম বাবু (হুজুর বাবু)। দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ’র অনুসন্ধানী টিম যায় তার জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া ঠিকানায়, সেখানে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও মেম্বার জাকির হোসেনের সাথে কথা হলে তারা কেউ তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি। এমনকি মুক্তারের চর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা শেখও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন বাবু কেন এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিলো কর্তৃপক্ষের বিষয়টি যাচাই করা উচিত। ইতিহাস থেকে জানা যায় দপ্তরটি ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে ওয়ার্কস প্রোগ্রাম উইং রাজস্ব বাজেটের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল ব্যুরো (এলজিইবি) রূপে গঠিত হয়। ১৯৯২ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হিসেবে রুপান্তরিত করা হয়। প্রায় তিন দশকের স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটিতে অনেক ভালো মানুষের আগমন যেমন ঘটেছে, তেমনি কিছু দুর্নীতি বাজের আগমনও ঘটেছে। যাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের অর্থনীতি, বদনামও হয়েছে দপ্তরের। নিজ আখের গোছাতে কোন কৌশলই বাদ দিচ্ছেন না তারা। এবার পাওয়া গেল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) চীপের (প্রধান প্রকৌশলী) বিকল্প চীফ। নাম- শাহিদুল ইসলাম (বাবু), পিতা- আব্দুল মোতালেব, গ্রাম-শের আলী মাতবর কান্দি, ওয়ার্ড নং-৮, ইউনিয়ন-মোক্তারের চর উপজেলা-নড়িয়া, জেলা-শরিয়তপুর। পদবী – অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, শ্রেণী-তৃতীয়, গ্রেড-১৬, বেতন পায় সাকুল্যে ২৬২৭৬ টাকা। অথচ হাকান দামী গাড়ী, আছে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, নামে বেনামে জায়গা জমিসহ অনেক কিছু। চলনে বলনে মনে হবে কোন রাজা বাদশা। প্রধান প্রকৌশলীসহ দপ্তরটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের তার হুকুম ছাড়া নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই বলে জানা যায়। কেনইবা যাবে, মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নাকি তার ডান হাত। বাবুর কথার বাহিরে নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এক পাওয়ো সামনে এগোয়না। তিনি বলে বেড়ান ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবু না থাকলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পাশ করার কোন সম্ভাবনাই ছিলোনা। আপনারা ছবি দেখে বোঝেননা তার সাথে আমার কি সম্পর্ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডির একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজ সার্থ হাসিলের জন্য সে অনেকের গায়ে হাতও তুলেছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে টুঁশব্দ করার সাহস পায়না কেউ। বাবু চাকরি করে নামে মাত্র কিন্তু তার মুল কাজ হলো বদলি, টেন্ডার বানিজ্য। জানা যায় বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে বিএনপি জামায়ত ঘেষা এই কর্মচারী বছরের পর বছর আরসিসি ভবন (এলজিইডি) তে অফিসারদের মত এলজিইডির গুরুত্ব বিষয় সিদ্ধান্ত দিয়ে যাচ্ছে।
সামান্য একজন কর্মচারী যার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এলজিইডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারতারা তার কথা না শুনলে সে কথিত বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা পরিচয় দিয়ে কয়েকজন সন্ত্রাসী নিয়ে অফিসারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের সঙ্গে দুরব্যবহারের মাধ্যমে জোরপূর্বক বিভিন্ন ধরনের কাজের ফায়দা লুটে নিচ্ছে। নিয়োগ বদলী বাণিজ্য ঠিকাদারী কাজের অনৈতিক সুবিধা নিতে সে অফিসারদের বিভিন্ন ভাবে নাজেহাল করে যাচ্ছে বলে জানা যায়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। বিভিন্ন কর্মচারীদের মামলা পরিচালনা ও চাকুরী স্থায়ী করার জন্য সে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সুত্র বলছে বাবু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হলেও সে যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছে তা জাল। কম্পিউটার সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই। এমনকি এলজিইডির ইঞ্জিনিয়াররা সরকারি বরাদ্দের গাড়ি না পেলেও ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ঢাকা মেট্রো-গ ১৫-৪৮১৯ গাড়িটা সে ব্যবহার করে। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে দপ্তরটিতে। তার ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারের বিষয়টি সরকারি প্রটোকলের সাথে যায়না বলেও অনেকে মনে করে। আর এসব অনৈতিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সুবিধা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ছবি তার ছবির সাথে অফিস কক্ষে টাঙিয়ে দিনের পর দিন বীরদর্পে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে যাচ্ছে শহিদুল। তার হেনস্তার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী দৈনিক সকালের সময়’কে জানিয়েছেন সবাই অফিসে আসে সকালে আর বাবুর অফিস শুরু হয় বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। কেন এতো রাত পর্যন্ত অফিসে থাকে জানতে চাইলে অনেকেই বলেছেন বিভিন্ন ড্রাইভারের কাছে বাবু মাদক বিক্রি করে। তার পেশাগত কাজে খোজ খবর নিতে গত ১৬-০৫-২৪ বৃহস্পতিবার এলজিইডি ভবনে গেলে বাবুর হুকুমে আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে বেশ কিছু লোকজন তার উপর হামলা চালায় এতে কবির মারাত্মকভাবে আহত হয়। তারই প্রেক্ষিতে শেরেবাংলা নগর থানার এসআই ইমরুলের নেতৃত্বে একটি টিম গিয়ে তৎক্ষনাৎ এলজিইডিতে গিয়ে তাকে উদ্ধারসহ ঘটনার সত্যতা পায়। আঘাত পরবর্তী সময়ে কবির কে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। ভুক্তভোগী এব্যাপারে থানায় সাধারন ডাইরি দাখিল করেছেন। একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে সরকারি আচরণ বিধি লংঘন করে তার উপরের বড় বড় কর্মকর্তাদের ভাই সম্মোধন করেও কথা বলতে দেখা গেছে। এলজিইডিতে বৈধ কোন ট্রেড ইউনিয়ন না থাকলেও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে শহিদুল ইসলাম ওরফে (হুজুর বাবু) এলজিইডির মত স্বনাম ধন্য প্রতিষ্ঠানকে নানা প্রশ্নের সম্মুখিন করছে। তার মত একজন কর্মচারীর আচরনে পুরো এলজিইডি ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন বাবুর মত সন্ত্রাসী লোকের সরকারী চাকুরী করার যোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করছে না তা রহস্য জনক। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে বাবুর নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন না ধরে কেটে দেন।
Leave a Reply