১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১১:৩০ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
রাশিয়ার সহায়তায় পাবনার রূপপুরে নির্মিত দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লিতে আগামীকাল রবিবার স্থাপন করা হবে নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করবেন। এটাকে দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হৃদপিণ্ড। এটি স্থাপনে অংশ নেবেন রাশিয়ার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা।
প্রেসার ভেসেল স্থাপন অনুষ্ঠানে রূপপুর প্রকল্প এলাকা থেকে যোগ দেবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, নির্মাণকাজের প্রধান ঠিকাদার রোসাটমের অন্যতম প্রধান নির্বাহী এলেক্সে লিখাচেভ, প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর, নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসইর কর্মকর্তারাসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
রাশিয়া থেকে রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলটি গত বছর অক্টোবরে রূপপুর প্রকল্পে আনা হয়। ভেসেলটি চুল্লিতে স্থাপন করতে এক বছর ধরে অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশল চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ইউনিটের একটিভ ও প্যাসিভ ব্যবস্থার অনন্য সংমিশ্রণ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পিত মাত্রার নিশ্চয়তা দেবে।
আলেক্সি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ শিল্পের উন্নয়ন কেবল বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের সমস্যার সমাধান করবে না, এই অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান ও বৃদ্ধি করবে।
আণবিক শক্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপপুরে ২০০ মেগাওয়াটের একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রকল্পটি থেমে যায়। পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানান, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির (ক্লিন এনার্জি) মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে; যা থেকে দীর্ঘ মেয়াদে পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, রূপপুর প্রকল্পটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। ঋণ হিসেবে রাশিয়া দিচ্ছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। বাকিটা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
Leave a Reply