৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৯:২১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদন:
ধনকুবের খ্যাত প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ হিসাব রক্ষক আবু কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগে জমা পড়েছে। তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে মোঃ ফজলুল করিম, দুর্নীতি দমন কমিশনে আবু কালাম আজাদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে আবেদন করেছেন।
আবু কালাম আজাদ কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের হিসাব রক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন। চাকরির এক যুগের মাথায় হঠাৎ করেই তার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ার ঘটনায় চোখ ছানাবড়া স্থানীয়দের। এই কর্মকর্তার চলাফেরা করেন দামি প্রাইভেট কারে। সর্বসাকুল্যে বেতন ৩০ হাজার টাকা। অথচ তার হাফ ডজন সহকারির বেতন এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। ড্রাইভারের বেতন ২০ হাজার টাকা। অথচ সল্প সময়ে তিনি কিভাবে গড়ে তুলেছেন এত সম্পদ তা যে কারও কল্পনারও বাইরে।
কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের হিসাব রক্ষক ধনকুবের খ্যাত আবু কালাম আজাদকে রাজবাড়ী জেলা শহরের বাণীবহ গ্রামের জমিদার অভিহিত করা হয়। ক্ষমতা ও টাকার দাপট এতটাই যে, সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশের পূর্বে রীতি অনুযায়ি বক্তব্য নিতে গেলে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, তার চাকুরীর বেতনের সহিত বর্তমান যে বিপুল পরিমাণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তাহা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। উক্ত সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হলোঃ গ্রামের নিজেদের ভাঙা টিনের ঘরের পাশেই প্রায় কোটি টাকা খরচায় ৮০ শতাংশ জায়গা কিনেছেন। সেখান থেকে অল্প একটু এগুলেই বাণীবহ বাজার। যেখানে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকায় কিনেছেন ১২০ শতাংশ জমি। তার ওপর নির্মাণ করেছেন ৮০টি পাকা দোকান। এর পাশেই ৮ কোটি টাকা দামের গরুর হাটটিও এখন আবুল কালাম আজাদের। কাছাকাছি ১০৬ শতাংশের আরও একটি জমি রয়েছে এই ধনকুবেরের।
এখানেই শেষ নয়, রাজবাড়ী জেলা শহরের শ্রীপুর বাজারের পাশে প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গার উপরে গড়ে তুলেছেন একটি ফ্যাক্টরি। পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড ভবানীপুর গ্রামে দোতলা একটা বাড়ি করেছেন তের শতাংশ জায়গার উপরে।
বিশ্বস্তসুত্রে জানা যায় যে, নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করা আছে। উক্ত এফডিআর এর পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। স্ত্রী নামে,সন্তানদের নামে -বেনামে কমবেশী ৫০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন।
আবুল কালাম আজাদ এলাকাবাসি সূত্রে জানাগেছে, আবুল কালাম শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক। চতুর আবুল কালাম আইনগত ঝামেলা এড়ানোর জন্যে নিজের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও আতীয় স্বজনের নামে সম্পদ গড়েছেন। তার পরিবার ও আত্বীয় স্বজনের সম্পদ ও ব্যাংক ব্যালেন্স তদন্ত করলেই প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে বলে সংশ্লিষ্টগণ মনে করেন।
তার সর্বসাকুল্যে বেতন ৩০ হাজার টাকা। অথচ তার ড্রাইভারের বেতন ২০ হাজার টাকা। এই কর্মচারির সম্পদ ও বিলাসী জীবন যাপন দেখে খোদ পরিষদের কর্মকর্তরাও অবাক। আবুল কালাম আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের তদন্তের জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সাধারণ কর্মচারীগণ। এলাকার সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে রাজবাড়ীর একাধিক লোক আবু কালাম আজাদের আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেছেন।এই পর্যন্ত দুদক কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকাবাসী হতাশ।
অভিযোগের বিষয়ে, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের গিয়ে আবু কালাম আজাদকে অফিসে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply