৫ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৩:৩৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
আবুল কালাম মজুমদারঃ
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কামাল হোসেন অফিস ইন্সুরেন্স কোড নং ২০৭। বর্তমানে উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউ,পির উপ-সহকারী কৃষি অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। দৈনিক পএিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শাস্তি মূলক লোক দেখানো বদলির নির্দেশ দেয়া হয়। আবার প্রাইম লাইফ ইন্সুইরেন্সে উনার পরিবর্তে উনার সহধর্মিণী ফেরদৌসি বেগম অফিস ইন্সুইরেন্স কোড নং- ৪৬২২ কে নিয়োগ দেখানো হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর কুমিল্লা জেলা কৃষি প্রশিক্ষন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম নেতৃত্ব ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হলেও জানা যায় কামাল হোসেন বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা বা সুরাহা করে নেন। এবং উনার কিছুই হবে না বলে গর্ব করে বলেন।
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সম্পর্কে সাংবাদিক গন তদন্ত কমিটির প্রধান সিরাজুল ইসলাম কে জানতে চাইলে কোন কিছু বলা যাবে না বা এটা গোপনীয় বিষয় বলে এড়িয়ে যান।
একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে দীর্ঘদিন ১২ বছর ধরে প্রাইম লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে নিজ এলাকায় লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার এরিয়া অফিসের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একই সঙ্গে দুটো অফিসে চাকরি করছেন তিনি।
এ ঘটনায় তদন্তের মাধ্যমে সত্যতা পেয়ে বিভাগীয় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা যায় কৃষি অধিদপ্তরের নির্ভর যোগ্য লোক জানান।
প্রাইম লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির অফিস সূত্রে জানা যায়, কামাল হোসেন ২০০৭-৮ সালে দিকে প্রাইম লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নেন। পরে তিনি বাগমারা বাজার এরিয়া অফিসের ইনচার্জের দায়িত্ব পান। নিয়মিত অফিস করেন তিনি। এ এরিয়া অফিসের অধীনে বিজরা, বিজয়পুর, হরিশ্বচর, কাশিনগর, নালঘর, মিয়াবাজার, সুয়াগাজী, চক বাজার ও ভূশ্চি বাজার প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির জোন অফিস পরিচালনা করেন।
তিনি প্রতি মাসে কোম্পানি থেকে ৩৫-৪৫ হাজার টাকা বেতন ভাতা, একটি প্রাইভেট কার ও একজন ড্রাইভারের বেতন ও টি,এ,ডি,এ সহ সবমিলে প্রায় লাখ খানেক টাকার সুযোগ সুবিধা পান বলে জানা যায়।
গ্রাহক ভোগান্তি, কিস্তির টাকা আত্মসাৎ, স্বাক্ষর জাল করে গ্রাহক প্রবাসে থাকা অবস্থায় পলিসি চালু সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দশম গ্রেটে সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন।
অভিযোগ কারী লন্ডন প্রবাসীর মর্তুজা হক মুক্তা নামের এক বীমাকারীর অভিযোগ করে বলেন, লালমাই উপজেলার বাগমারা শাখায় সে নিজেও ছেলে মেয়ের নামে দুটি বীমা চালু করেন। কিন্তু তার ছেলে মেয়ে লন্ডনে থাকাবস্থায় বাগমারা শাখার ইনচার্জ কামাল হোসেন তাদের স্বাক্ষর জাল করে বীমা প্রমাণ পত্র দেওয়ার ঘটনায় সন্দেহের অবতারণা হলে মর্তুজা হক মুক্তা সাংবাদিক বরাবর বিষয় টা অবহিত করলে গত ৬মাস এ বিষয় তদন্ত করে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউ,পির কৃষি আব্দুল মান্নান বলেন, কামাল স্যার যখন আমাদের ইউনিয়নে চাকরি করতে মাঝে মধ্যে আসতেন। তখন দেখতাম তিনি সাদা একটি প্রাইভেটকার নিয়ে আসতেন। আর ওই প্রাইভেটকারটি বাঙ্গরা বাজার এলাকায় রাখতেন। সেখান থেকে সিএনজি যোগে রায় কোট মাহিনী বাজার আসতে। আমার একটার আগে চলে যেতেন। নিয়মিত না আসার কারণে এ কৃষি অফিসার কে আমরা পেতাম না। সে সপ্তাহে দু’তিন দিন আসতেন। এবং এসব কার্যকলাপের সহযোগী হিসাবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
তথ্য গোপন করে সরকারি নিয়ম-নীতি অমান্য করে এক সঙ্গে দু’টি প্রতিষ্ঠানে চাকরি আইনগত অপরাধ, মনির হোসেন নামে একজন বলেন যে দেশে এত বেকারত্ব সে দেশে এমন অপরাধের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেয়া উচিত।
এ বিষয়ে প্রাইম লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির লাকসাম এরিয়া অফিস ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, কামাল হোসেন ২০০৭-৮ সালের দিকে থেকে আমাদের কোম্পানিতে চাকরি করে আসছেন। তিনি বাগমারা বাজার এরিয়া অফিসের ইনচার্জের দায়িত্বে আছেন। তার অধীনে ১০ অফিস চলে। তবে সরকারি কর্মকর্তা এটা গোপন রেখে এতদিন কাজ করছেন।
এভাবে কামাল হোসেন বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়। আরও জানা যায়, কামাল হোসেন তথ্য গোপন করে একাই দুটি আয়কর রিটার্ন ফাইল পরিচালনা করেন। তার বিরুদ্ধে অপ্রদর্শিত আয় রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়।
এ অভিযুক্ত কামাল হোসেনের মুঠো ফোনে কল দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে বেশ কয়েক বার কল দিলে রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমি তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট পাঠিয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লা জেলা কৃষি কর্মকর্তা (ডিডি) মিজানুর রহমান বলেন, তথ্য গোপন করে একই ব্যক্তি দুটি লাভজনক পদে চাকরির কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।
Leave a Reply