১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ২:০১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
এম এইচ মুন্না :
সীমাহীন অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলার অপর নাম কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’ কারা কর্তৃপক্ষের স্লোগান হলেও প্রকৃতপক্ষে সেখানকার দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তারা নানাভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারটিকে। কারা অভ্যন্তরে মাদক সেবন, বন্দি বেচা কেনা, জুলুম করে অন্যায় ভাবে অর্থ আদায়, ফোন কল বেচাকেনা, ক্যান্টিনে আয়ের বড় অংশ আত্মসাৎ করা , ওষুধ বেচাকেনা হাসপাতালে ভর্তির নামে মোটা অংকের অনৈতিক লেনদেন এমনকি বন্দিদের খাবারের অংশ বাইরে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা অহরহ ঘটছে এ কারাগারে। সম্প্রতি কারাগার থেকে বের হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। জানা যায় প্রথমে বন্দিরা কারাগারে প্রবেশ করলে একটু অবস্থা সম্পন্ন বন্দিদের কারাগারে মেট রাইটাররা উচ্চমূল্যে ক্রয় করে নিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে। এই অর্থ সংগ্রহের জন্য তারা বন্দিকে অনেক সময় নির্যাতন করে থাকেন।
নতুন আসা বন্দিদের যেমন টাকা দিয়ে ওয়ার্ডে থাকতে হচ্ছে। তেমনি কারাগারের ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
জানা যায়, কারাগারের ভিতরে এক কাপ চা বাহিরের চেয়ে ভিতরে দুই গুণ বেশি টাকা বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার কাপ চা বিক্রি হলেও কতৃপক্ষ প্রতিমাসে ২হাজার থেকে ২২শ কাপের হিসাব নিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন। এছাড়া ভিতর ক্যান্টিনে মাছ মাংস, সিঙ্গারা, সবজি তরকারি, ফলমূল সহ আরো অনেক কিছু বিক্রি হয়। এছাড়া অভ্যন্তরে বানানো অনেক খাবার বাইরের ক্যান্টিনে বিক্রি করা হয়। এগুলো বিক্রি করে প্রকৃতি আয় গোপন করে সরকারি হিসাবে দেখানো হয়। এগুলো কারা কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।
সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিম্নমানের খাবার খাওয়ার কারণে অনেক বন্দি সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ভাত খায় না। তারা কারাগারের নিজেদের পছন্দের খাবার বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনে খায়। তাদের কাছে খাবার বিক্রি করে ভালো টাকা আয় হয়। এছাড়া তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বেঁচে যাওয়া সরকারি খাবার যেমন চাল, ডাল, তেলসহ অনন্য খাদ্য সামগ্রী কখনোই কারা কর্তৃপক্ষ সব কারাগারের সরকারি হিসাবে প্রদর্শন করে না।
সাধারণত আসামিরা মামলায় হাজিরা দিতে গেলে লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে ইয়াবা সংগ্রহ করে। নিজেরা সেবন করে এবং অন্যদেরকে অর্থের বিনিময় প্রদান করে কারাগারে ভিতরে মাদকের ব্যবসা করে।
অনেক কর্মচারী কারাগারের বাইরে থেকে গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করে মাদকের ব্যবসা করে থাকে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার জেলার মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম কে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
Leave a Reply