১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৩:২৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকা থেকে গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রামের আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়ে তার স্ত্রী তামান্না শারমিনের দেওয়া এক ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
৫৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তামান্নাকে আত্মবিশ্বাসী ও উৎফুল্ল ভঙ্গিতে বলতে শোনা যায়, “কাড়ি কাড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসবো।”
এছাড়া, প্রতিপক্ষ গ্রুপকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করবো আমরা।” ভিডিওতে ব্রাউন চুল ও লাল রঙের জামা পরা তামান্নাকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে।
ভিডিওর শেষ পর্যায়ে তিনি সাজ্জাদের মুক্তির জন্য সমর্থকদের দোয়া চেয়ে বলেন, “আমার জামাই গতকাল (শনিবার) রাতে অ্যারেস্ট হইছে, এ নিয়ে এত হইহুল্লোড় করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, অ্যারেস্ট হবেই। এগুলা নিয়ে টেনশন করে, দুঃখ প্রকাশ করে, কান্নাকাটি করার কিছু নাই।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যারা ভাবতেছেন, আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে, আর কোনো দিন বের (জামিন) হবে না, তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।”
তামান্নার এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে অনেকে তার বক্তব্যের সমালোচনা করছেন, আবার কেউ কেউ বিষয়টিকে ব্যঙ্গাত্মকভাবে দেখছেন।
প্রতিপক্ষকে হুমকি দিয়ে তামান্না শারমিন বলেন, ‘আমরা কাড়ি কাড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে (স্বামী) নিয়ে আসবো। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে এবং যারা এ ঘটনা ঘটাইছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাথায় রাইখো। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা শুরু। খেলা শুরু হবে এখন।’
তিনি বলেন, ‘আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে। খেলা শুরু করছো তোমরা, শেষ করবো আমরা। ঠিক আছে? যারা আমার জামাই সাজ্জাদের সাপোর্টার আছো, তারা দোয়া করবে, যেন ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করাই ফেলতে পারি। ঠিক আছে? ধন্যবাদ।’
এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা শপিং মলে ঘুরাঘুরি করার সময় সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। রোববার সকালে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ তাকে ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান সাজ্জাদ। এতে পুলিশসহ পাঁচজন আহত হন।
এরপর গত ২৯ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে এসে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমানকে রাস্তায় পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সাজ্জাদ। তাকে ধরতে এর পরদিন ৩০ জানুয়ারি পুরস্কার ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ জাহাংগীর আলম জাগো নিউজকে বলেন, সাজ্জাদ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। সে যেন সহজে বেরিয়ে আসতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির ১৭টি মামলা রয়েছে। গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরে আনিস, কায়সার ও আফতাব উদ্দিন নামে তিন বালু ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার মামলার আসামি সাজ্জাদ।
জানা গেছে, গত বছরের ১৭ জুলাই অস্ত্রসহ সাজ্জাদকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। আগস্টে সরকার পতনের পর আইনি সুযোগ কাজে লাগিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি।
Leave a Reply