1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ সরবরাহের অভিযোগ! - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৬:২৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
নিজে দোষ করে বন্ধুকে ফাঁসিয়ে দিলেন উপসচিব সাইফুল যৌথবাহিনীর অভিযান  সত্বেও  বেড়েই চলছে মাদক,জুয়া ও দেহ ব্যবসা টঙ্গীর জাভান হোটেলে মুসলিম ট্যূরস এন্ড ট্রাভেলস এর মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারকে একহাত নিলেন সারজিস আলম চাকরিচ্যুত মাদরাসা শিক্ষকের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের মুখে মার্কেটিং ম্যানেজারসহ ২২ জনের পদত্যাগ গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ সরবরাহের অভিযোগ! চাকরিচ্যুত মাদরাসা শিক্ষক দলবল নিয়ে এসে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উপর হামলা জাতীয় গৃহায়ণ মিরপুরের প্রকৌশলী শেখ সোহেল বদলী হলে ও রাজু আছেন বহাল তবিয়তে ১ মাস আগে বদলি হলেও চেয়ার ছাড়ছেন না প্রকৌশলী
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ সরবরাহের অভিযোগ!

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র’র বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যায় অর্থ সরবরাহের অভিযোগ!

হাসান আলী:

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ই/এম-৬ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাসের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের জন্য ছাত্রলীগ-যুবলীগকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে আদালতে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। এ মামলায় পবিত্র কুমার দাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন দমাতে ছাত্র-জনতার উপর গুলি ও হামলা করতে অর্থ দেওয়া ও সাবেক স্বৈরাচার সরকারের দলীয় লোকদেরকে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রধান আসামী। এ মামলায় নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস আসামীর তালিকায় ৭ নাম্বারে রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। গণপূর্তে করেছেন ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনার শিরোনামে ছিলেন। ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে মুহূর্তের মধ্যে দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তিনি ছিলেন গণপূর্তের অন্যতম একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।

সম্প্রতি চলতি বছরের ৪ মে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি মির্জা আজমের কাছ থেকে লোভনীয় স্থানে যাওয়ার জন্য কোটি টাকার বিনিময়ে পবিত্র কুমার দাস একটি ‘ডিও লেটার’ নিয়েছেন। যার কপি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।

ওই ডিও লেটারে উল্লেখ আছে,পবিত্র কুমার দাস গণপূর্ত (ই/এম) বিভাগ-৬ ঢাকায় কর্মরত আছেন। তাকে ই/এম বিভাগ-৪ ঢাকা বদলী করার জন্য প্রধান প্রকৌশলী বরাবর অনুরোধ করে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা মির্জা আজম।

জানা গেছে, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদকীয় কমিটিতে ছিলেন। গণপূর্তে চাকরি পাওয়ার পর তার আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তিনি কোটিপতি বনে গেছেন। দেশের বাইরে তিনি শতকোটি টাকা পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নানা ধরনের সংস্কারের জন্য মোট ২২টি কার্যাদেশ দিয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। এর মধ্যে একটি কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। বাকি ২১টি কার্যাদেশের বিপরীতে কোনো কাজই হয়নি। অথচ এরই মধ্যে সব কাজের ঠিকাদাররা তাদের পুরো বিল তুলে নিয়েছেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে দেওয়া এক চিঠিতে এমন অভিযোগ করেছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে মোট ২২টি কার্যাদেশ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুসারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব কাজ সম্পন্ন করে বিল উত্তোলন করবে।

তবে এক্ষেত্রে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-৬-এর আওতাধীন এই কাজ সম্পন্ন না করেই বিল তুলে নিয়ে ভাগাভাগি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কাজের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমার দাস এবং উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান রনি এই ঘটনার নেপথ্য নায়ক বলে জানা গেছে।

২২টি কাজের বরাদ্দ থাকা প্রায় ১০ কোটি টাকা ভুয়া বিল ভাউচারে আত্মসাৎ করেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত হলে তারা ফেঁসে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন গণপূর্তের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ২২টি সংস্কার কাজের জন্য আলাদা আলাদা কার্যাদেশ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সবগুলো কাজ সমাপ্ত হওয়ার প্রত্যয়নপত্র চেয়ে কাগজপত্র দাখিল করে। তবে অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে কাজের প্রকৃত চিত্র উঠে আসায় প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়নি। এরপরও ওইসব কাজের বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদাররা।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে দেওয়া মুগদা হাসপাতালের পরিচালকের চিঠিতে বলা হয়, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে গণপূর্ত ই/এম বিভাগ কর্তৃক নির্মাণ/সংস্কার কাজের বিপরীতে ২২টি কাজের প্রত্যয়নপত্রের জন্য কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। ওই ২২টি কাজের মধ্যে ২১টির দাখিলকৃত কার্যাদেশ অনুযায়ী কোনো কাজই সম্পাদন করা হয়নি। গণপূর্ত ই/এম বিভাগকে বারংবার বলার পরও তারা নির্মাণ ও সংস্কার কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করছে না।
জানা গেছে, মুগদা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ছয় সদস্যের কমিটির সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদনে কাজ না করার বিষয়টি উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, ২১টি কাজ সম্পন্ন করা হয়নি।

কমিটির সদস্য এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আনিছুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা সরেজমিন পরিদর্শনে যে তথ্য পেয়েছি, তা পরিচালক স্যারের কাছে হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু আমরা প্রান্তিক ভোক্তা। সেক্ষেত্রে কী কাজ সম্পন্ন হয়েছে সে রকম একটা মতামত দিতে হয়। প্রতিবারের মতোই কাজের সর্বশেষ অবস্থা নিরূপণের জন্য আমাদের একটি কমিটি রয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার এবং সম্পন্ন কাজ দেখে তারা একটি মতামত দিয়েছেন। আমরা লিখিতভাবে ওই বিষয়টা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। মন্ত্রণালয় টাকা দিয়েছে, বিচারের দায়িত্বও তাদের। আমরা কেবল আমাদের মতামত জানিয়েছি।
আরও জানা গেছে, ২২টি কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাবর অ্যাসোসিয়েটস, রফিক ট্রেডার্স, অনিক কনসোর্টিয়াম, ব্রাইট ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন, ম্যালার্ড করপোরেশন, স্মাইল এন্টার প্রাইজ, মেসার্স এস এ এন্টার প্রাইজ, মেসার্স জান্নাত এন্টার প্রাইজ, মেসার্স শেখ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মেসার্স ইউনাইটেড এন্টার প্রাইজ, দিপ্র কনস্ট্রাকশন, মেসার্স জাফির অ্যান্ড ব্রাদার্স, মা-বাবা কনস্ট্রাকশন এবং ওএসএল।
এর মধ্যে একাধিক কাজ করেছে অনিক কনসোর্টিয়াম এবং বাবর অ্যাসোসিয়েটস। পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন বলছে, শুধু ব্রাইট ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন ২২ লাখ টাকার উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করেছে। বাকিরা কেউই কাজ সম্পন্ন করেনি।

জানা যায়, মুগদা হাসপাতালের ওই কাজগুলো ছিল বিভিন্ন অকেজো সরঞ্জাম মেরামত এবং সংস্কার। মেরামত কাজের মধ্যে ছিল হাসপাতাল কম্পাউন্ডে নিরাপত্তার জন্য অকেজো/নষ্ট সিকিউরিটি লাইট, গার্ডেন লাইট, ভবনের চতুর্থতলায় অবস্থিত ফ্লাডলাইট মেরামত বা পরিবর্তনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ।

এ ছাড়া ভিন্ন ভিন্ন কার্যাদেশে কনফারেন্স রুমে অকেজো বা নষ্ট বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ফিটিংস ফিকচার মেরামত কিংবা পরিবর্তন; হাসপাতালের পঞ্চমতলার পশ্চিম পাশে স্থাপিত ওয়ার্ডগুলোর অকেজো বা নষ্ট বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ফিটিংস ফিকচার মেরামত কিংবা পরিবর্তন; মেডিকেল কলেজের নবমতলার পূর্ব পাশে স্থাপিত ওয়ার্ডগুলোর অকেজো বা নষ্ট বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং ফিটিংস ফিকচার মেরামত কিংবা পরিবর্তন; নিয়ন সাইন বোর্ডে অকেজো বা নষ্ট লাইট পাওয়ার সাপ্লাই মেরামত এবং ৫০০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি জেনারেটর সেটের মেরামত কিংবা সার্ভিসিংসহ বিভিন্ন সংস্কার এবং উন্নয়ন কাজ।
তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে এসব কাজ না করেই বিল তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার এবং কর্মকর্তা বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালে তিনি কাউকে পাত্তা দিতেন না। সিনিয়র কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাসকে বেয়াদব বলতেন। তার যা মন চাইতো তিনি তাই করতেন। দেশের বাইরে ‘সেকেন্ড হোম’ গড়েছেন। পাচার করেছেন শত শত কোটি টাকা। সঠিকভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে তার কাছে বিপুল সম্পদ এবং নগদ অর্থ পাবে।

এসব বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান রনি বলেন, ‘মুগদা হাসপাতালের যে কমিটি কাজ পরিদর্শন করেছে, তারা বুঝতে ভুল করেছে। বিষয়টি মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। তিনি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আমাদের নিয়ে বসবেন।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে গণপূর্তের (ই/এম) বিভাগ-৬-এর পবিত্র কুমার দাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি সবকিছু অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি নিয়ম মেনেই সব কাজ করেছি। কোনো দুর্নীতি করিনি।’

ডিও লেটার’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো রাজনীতি করি না। এটা ভুয়া চিঠি। কে বা কারা এই চিঠি আমার জন্য করেছে আমি জানি না।’

গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েকদিন হলো আমি এসেছি। আপনার কাছে যা শুনলাম এবং চিঠিতে যা অনিয়ম দেখলাম তা সত্যিই দুঃখজনক। এই অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »