১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৪:৫২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
পীরখ্যাত প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার প্রধান প্রকৌশলী পদে যোগদান করার পর থেকেই অস্থিরতা চলছে গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদপ্তরে । আওয়ামী ঘরানার প্রকৌশলীরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না অনভিজ্ঞ এই অধিকর্তাকে। তিনি যোগদান করার পর থেকেই বিএনপি -জামায়াত সমর্থিত প্রকৌশলীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে লোভনীয় জোন ও বিভাগে পদায়ন ও বদলী করে গোটা গণপূর্ত অধিদপ্তরকে জামায়াত-বিএনপি করণে লিপ্ত রয়েছেন কথিত পীর সিন্ডিকেট।
একাধিক সুত্রে জানাগেছে,প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার তার অনুগত কিছু প্রকৌশলী নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেছেন। এই সিন্ডিকেটের সাথে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ সখ্যতা রয়েছে। সিন্ডিকেট সদস্যরা গত এক বছরে কেবল বদলী খাতেই শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা অর্থের লোভে এতটাই অন্ধ হয়ে পড়েছেন যে, পদায়ন ও বদলীর ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালাও মানছেন না। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের বঞ্চিত করে চুয়েট ও বুয়েট থেকে পাস করা শিবির ও ছাত্রদল নেতাদের লোভনীয় জোন ও বিভাগে বদলী করে জামায়াত ও বিএনপিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে সরকার পতন আন্দোলনে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা এমন কি সয়ং লন্ডন প্রবাসী তারেক জিয়াকে অর্থ যোগানের অভিযোগ রয়েছে।
বিএনপি -জামায়াত ঘরাণার এসব প্রকৌশলীকে প্রাইজ পোষ্টিং দিয়ে লালন পালন করায় গণপূর্ত অধিদপ্তরে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কার্যক্রমেও শ্লথগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতার যোগদানের পর থেকে আজ অব্দি নতুন কোন প্রকল্প গ্রহন করতে পারেন নি। ফলে প্রকৌশলীরা বসে বসে বেতন নিচ্ছেন। গোটা অধিদপ্তরে একটা স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এ প্রসংগে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রকৌশলী বলেন,প্রধান প্রকৌশলী মো: শামীম আখতারের গণপূর্ত অধিদপ্তর চালানোর মত কোন যোগ্যতাই নেই। তিনি সব সময় পীরত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তার অনুগতদের আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য তিনি ঠিকাদারী লাইসেন্স করে দিয়েছেন। এবং বড় বড় ঠিকাদারী কাজ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। অনভিজ্ঞ এসব শিষ্য ঠিকাদাররা অতি নিন্মমানের কাজ করেই বিল তুলে নিচ্ছেন। প্রধান প্রকৌশলীর পীর সিন্ডিকেটের লোক হওয়ায় সঠিকভাবে কাজ না করলেও নির্বাহী প্রকৌশলীরা বিল দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি সরকারি এই গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তরটিকে পীর আউলিয়ার দরবার শরীফে পরিণত করেছেন। প্রতিদিন তার কাছে প্রচুর সংখ্যক শিষ্য বা ভক্ত তদবীর করতে এসে থাকেন। তাদেরকে সময় দিতে গিয়ে তিনি সবকারি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে রাখছেন। এতেকরে সরকারি কাজে জট সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া গণপূর্ত অধিদপ্তরের সরকারি যানবাহন,ড্রাইভার ও তেল ব্যবহার করে তিনি প্রায়ই ভক্ত ও শিষ্যদের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে যান। খানকা শরীফে ওয়াজ করতে যান । যা একটি গরহিত অপরাধ।
সুত্রমতে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে এসে বিতর্কিত তিনজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে চট্রগ্রাম,রংপুর ও গোপালগঞ্জ বিভাগে পদায়ন করেছেন। এই তিন জন প্রকৌশলী বুয়েট ও চুয়েটে পড়াকালে ছাত্র শিবির ও ছাত্রদলের নেতা ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের পারবারের অন্যান্য সদস্যরা এখনো বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতিতে যুক্ত বলে দাবী করেছে সুত্রটি। এই তিন প্রকৌশলী হলেন: চট্রগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: আবুল খায়ের, গোপালগঞ্জ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কাজী আবু হানিফ ও রংপুর জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো: আব্দুল গফ্ফার। এই তিন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর বদলী বা পদায়ণে ২০ কোটি টাকা ঘুস লেনদেন হয়েছে মর্মে গণপূর্ত ভবনে প্রচারণা আছে।
উল্লেখ্য যে, জামায়াত-বিএনপি ঘরাণার এই তিন প্রকৌশলীকে গুরুত্বপূর্ণ তিন জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে অতিগুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বদলী বা পদায়ণ করায় আওয়ামী লীগ ঘরাণার প্রকৌশলীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাদের প্রশ্ন- সারা জীবন ছাত্র লীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে তারা কি পেলেন?
Leave a Reply