1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
গুলশানে ২টি সহ রাজধানীতে স্পার নামে অশ্লীলতা, অসামাজিক কার্যকলাপ - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ২:৪৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

গুলশানে ২টি সহ রাজধানীতে স্পার নামে অশ্লীলতা, অসামাজিক কার্যকলাপ

গুলশানে ২টি সহ রাজধানীতে স্পার নামে অশ্লীলতা, অসামাজিক কার্যকলাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
‘আওয়ার থেরাপিস্ট ইজ ইয়াং… অ্যান্ড সো হট।’ বাংলায়, ‘আমাদের থেরাপিস্টরা কচি এবং খুব আকর্ষণীয়।’ গুলশানের অ্যারোমা থাই স্পা’র প্রিন্ট বিজ্ঞাপন এটি। নিজেদের ফেসবুক পেজে স্পন্সর বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির প্রচারণা এমন!

বিজ্ঞাপনটিতে গ্রাহকদের দুই ধরনের ম্যাসেজ দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ‘নুরু ম্যাসেজ’ ও ‘বডি টু বডি ম্যাসেজ’। আরও লেখা আছে, ‘উই হ্যাভ নিউ ফোর গার্লস (আমাদের সংগ্রহে নতুন চারটি মেয়ে আছে)।’

ম্যাসেজ পার্লারের এমন বিজ্ঞাপনে ম্যাসেজ ছাড়াও স্পষ্টভাবে অন্যকিছুর ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে! ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, বিজ্ঞাপনে ‘নুরু ম্যাসেজের’ কথা উল্লেখ রয়েছে। নুরু ম্যাসেজ বলতে শরীরের সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে ম্যাসেজ করা বোঝায়, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জনপ্রিয়। ‘বডি টু বডি ম্যাসেজ’ তার চেয়েও ভয়ংকর, এটি অনেকেরই জানাৃ।

শুধু অ্যারোমা নয়, ঢাকা শহরে তাদের মতো প্রায় ডজনখানেক স্পা সেন্টার অশ্লীল বিজ্ঞাপন আর মেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশে বডি ম্যাসেজের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অথচ তাদের কাছে নেই কোনো বৈধ কাগজ কিংবা ট্রেড লাইসেন্স। সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে হোটেল, বিউটি পার্লার, সেলুন আর ব্যায়ামাগারের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চলছে এ ব্যবসা, চলছে অশ্লীলতা।

পরিচয় গোপন করে সেবাগ্রহীতা সেজে কথা হয় গুলশানের স্পা জোন’র কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। গুলশান-১ এর ডিসিসি মার্কেটের বিপরীতে একটি ভবনে সেন্টার তাদের। কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখানে বয়সভিত্তিক বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১০-১২ জন মেয়ে দিয়ে ম্যাসেজ করানো হয়। বয়স ছাড়াও ম্যাসেজে পারদর্শী ও অপারদর্শীদের আলাদা ক্যাটাগরি রয়েছে। ইউনিভার্সিটিপড়ুয়া কম বয়সী মেয়েরাও আছে। যদি কেউ প্রশিক্ষিত মেয়েদের নিয়ে সারা শরীর ম্যাসেজ করাতে চান তাহলে খরচ পড়বে ঘণ্টাপ্রতি ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা। যদি এক ঘণ্টা ফুল কাজ করেন তাহলে পড়বে পাঁচ হাজার। ভালো ক্যাটাগরির আকর্ষণীয় মেয়েদের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ছয় থেকে সাত হাজার পড়বে।’
পুলিশের ঝামেলা হবে না তো? জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো সমস্যা নাই, আমাদের সব বৈধতার কাগজ আছে। আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করি, নিয়মিত মাসোয়ারা দেই। কোনো সমস্যা নাই।
কথা হয় গুলশানের ব্লু ট্যারেস স্পা নামের একটি স্পা অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারের কর্মকর্তার সঙ্গে। তারা সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে বিউটি সেলুনের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে পরিচালনা করছে ম্যাসেজ সেন্টার, করছেন অসামাজিক কার্যকলাপ!
ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ‘ভালো মেয়েদের দ্বারা’ বডি ম্যাসেজ করা হয়। ঘণ্টায় তিন থেকে চার হাজার টাকা লাগে। এখানে ‘ফুল কোর্সও’ রয়েছে, রেট সাত থেকে ১০ হাজার টাকা।
একই চিত্র গুলশান-বনানী এলাকার গুলশান সেলুন অ্যান্ড স্পা, লেটস রিল্যাক্স স্পা, ঢাকা গুলশান স্পা, ফেমাস স্পা’র। অশ্লীলতার ইঙ্গিত দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করে তরুণ ও বয়স্ক পুরুষদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

ঢাকা গুলশান স্পা’র একটি বিজ্ঞাপনে স্পা’র সঙ্গে ‘কমপ্লিট ফান’র ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পোস্ট করা হয়েছে অশ্লীল ভিডিও।
এর আগেও বেশ কয়েকবার স্পা’র নামে ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটিয়েছে কয়েকটি স্পা সেন্টারে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে স্পা’র নামে অসামাজিক কাজ করে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে গুলশান ও বনানী এলাকার ডব্লিউ বিউটি অ্যান্ড স্পা, মহাখালী ডিওএইচএস-এর ফনিক্স হেলথ কেয়ার, গুলশানের হোয়াইট বিউটি সেলুন অ্যান্ড স্পা সেন্টার এবং ডায়মন্ড বিউটি অ্যান্ড স্পা’য় অভিযান চালিয়ে ৪০ জনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের বিরুদ্ধে তরুণীদের দিয়ে স্পা করানোর পর সেসময়ের ছবি ধারণ করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ ছিল।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এ প্রসঙ্গে বলেন, বিউটি পার্লার বা হোটেলের আদলে কেউ যাতে অসামাজিক কার্যকলাপ না করতে পারে সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ। এছাড়া এসবের দ্বারা কেউ যাতে ব্ল্যাকমেইল বা হয়রানির শিকার না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
গুলশানে ২টি স্পা সেন্টারের আড়ালে চলছে অবৈধ দেহ ব্যবসা!
কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত স্পা সেন্টার গুলোর অবৈধ কর্মকা-। যেখানে প্রতিনিয়ত চলছে স্পা বা বডি মেসেজ এর নামে দেহ ব্যবসা।
সম্প্রতি গুলশানে এমন দুইটি স্পা সেন্টারের নাম উঠে এসেছে, যারা অজানা ক্ষমতাবলে চালিয়ে যাচ্ছে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে পতিতাবৃত্তি সহ অসামাজিক কার্যকলাপ। রোড-২৩/এ, হাউজ নং-১, এল-১ এর স্পা। রোড-৪১, হাউস-৭, এল-১ এর ঋরা স্পা।
গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এই দুইটি স্পা সেন্টারের সম্পর্কে জানা যায়, বডি মেসেজের নাম করে স্কুল-কলেজ ও ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ে সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বয়সী নারীদের একত্রিত করে দেহ ব্যবসা পরিচালনা, যৌন শোষণ, নিপীড়নমূলক কাজ করা হয়। যার মূল উদ্দেশ্য থাকে গ্রাহকের সাথে যৌন সম্পর্কে সৃষ্টির মাধ্যমে টাকা উপার্জন করা। এমনকি স্পা সেন্টার গুলোতে থাকে মাদকের ব্যবস্থা। যেখানে বিভিন্ন পর্যায়ের পুরুষ গ্রাহকরা খুব সহজেই টাকার বিনিময়ে পেয়ে যায় মাদকের নিরাপদ আখড়া। যা কিনা সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, আমাদের সব বৈধতার কাগজ আছে। আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করি, এবং নিয়মিত মাসোহারা দেই।

কিন্তু সরোজমিনে প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহের জন্য ঐ দুইটি স্পা সেন্টারে গেলে একটি স্পা সেন্টার সমঝোতা করার কথা বলে, এছাড়া স্পা’ নামক সেন্টারের মালিক জামান ও ম্যানেজার আসাদ কোন প্রকার তথ্য দিতে অস্বীকার করে প্রতিবেদককে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এবং স্পা সেন্টার থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।

এই বিষয়ে গুলশান থানার ওসি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত এই ধরনের অবৈধ প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মামলাও দিয়েছ। তাছাড়া এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা কাউকে চালাতে দেওয়া হবে না।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »