১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ১:২৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
সেলার ও গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে চান ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকম (ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের) মালিক জসিম উদ্দিন চিশতি। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক লাইভে এসে তিনি বলেন, আমি গ্রাহক ও সেলার টাকা ফেরত দিতে চাই আমাকে টাকা দেওয়ার সুযোগ করে দিন। তিনি এখন দেশের বাইরে রয়েছেন। ধামাকা শপিং ডটকম (ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের) মালিক জসিম উদ্দিন চিশতি বাণিজ্য মন্ত্রীর উদ্দেশ্য বলেন, আমি গ্রাহক ও সেলারদের টাকা ফেরত দিতে চাই, আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা আমি কিভাবে টাকা ফেরত দিব, এসময় তিনি বিকল্প ব্যবস্থা অথবা নতুন একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। তিনি এসময় কান্নাকাটি করে বলেন, আমার উদ্দেশ্য খারাপ না, উদ্দেশ্য খারাপ হলে ধামাকা শপিং ডটকম ক্লোজ করে দিতাম, আমার স্ব-পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। আমি ইচ্ছে করলেই আত্মগোপনে চলে যেতে পারতাম। তা না করে আমি কিন্তু ব্যবসা করতে চাচ্ছি। আমাকে আপনা সাহায্যে করুন পাশে থাকুন।
এদিকে, ধামাকা শপিং ডটকমের হাজারের উপরে তাদের কর্মচারী রয়েছে। তারা কেউই গত জুন থেকে বেতন পাচ্ছেন না। এসম্পর্কে মালিক জসিম উদ্দিন চিশতি বলেন, আমার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রীজ করে রেখেছে, কিভাবে বেতন দিবো, আমার অ্যাকাউন্ট গুলো আনফ্রিজ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি, ইনশাল্লাহ গ্রাহক সেলার এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের সবার টাকা পরিশোধ করে দিবো।
বিভিন্ন পণ্যের অফার ও ভার্চুয়াল সিগনেচার কার্ড বিক্রির মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৮০৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ধামাকা। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানতে পেরেছে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জসীম উদ্দিন চিশতীসহ অন্যরা মিলে ১১৬ কোটি ছয় লাখ টাকা অন্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন।
এ তথ্যের ভিত্তিতে ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের মালিক জসীম উদ্দিনসহ পাঁচ জন এবং তাদের তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত মাসে বনানী থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছে সিআইডি।এবিষয়ে তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং নয়,আইন মেনেই বিভিন্ন কোম্পানিতে টাকা সার্কুলেট করেছি, ইনশাল্লাহ,সব ধরণের কাগজ দিয়ে সেটা প্রমাণ করবো। এদিকে, আরো জানা যায়, ধামাকা শপিং ডট কম ছাড়াও তাদের আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন, ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড, মাইক্রোট্রেড ফুড এবং বেভারেজ লিমিটেড এবং মাইক্রোট্রেড আইসিক্স লিমিটেড ইত্যাদি।
এসম্পর্কে ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের সেলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যুব ব্যবসায়ী হিসেবে আমরা শেষ সম্বল বিক্রি করে, স্বজনদের কাছ থেকে ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা করেছি। এখন রাস্তার ফকির ও নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমরা সেলার ও তিন লাখ গ্রাহকের মানবিক দিক বিবেচনা করে ধামাকা শপিং ডটকমের ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়াসহ এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।’
ধামাকা শপিং ডটকমের সেলার অ্যাসোসিয়েশনের গণযোগাযোগ বিষয়ক সমন্বয়ক জাহিদুর ইসলাম বলেন, ‘ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিং ডটকমের সেলার বা মার্চেন্ট হিসেবে প্রায় ৬৫০ জন এসএমই উদ্যোক্তা ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ধামাকা শপিং ডটকমের নির্দেশনা ও চুক্তি অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করে যাচ্ছিলাম।
‘কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের সব ধরণের অ্যাকাউন্টগুলো ফ্রীজ করে দিয়েছে, ফলে আমাদের মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না, তিনি আরো বলেন,সেলার ও তিন লাখ গ্রাহকের মানবিক দিক বিবেচনা করে ধামাকা শপিং ডটকমের ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়াসহ এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ অনুরোধ করছি।’
এদিকে, ধামাকা শপিং ডট কমের এর একাধিক গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা বলেন, আমরা আরো সময় দিতে চাই, ধামাকাকে ব্যবসা করতে দিলে ইনশাল্লাহ্ আমাদের টাকা ফেরত পাবো। তারা সরকারের উদ্দেশ্য বলেন, তিন লাখ গ্রাহকের মানবিক দিক বিবেচনা করে ধামাকা শপিং ডটকমের ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়াসহ এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।’
ধামাকা শপিং ডট কম মূলত প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ৩ লক্ষাধিক। মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক, গৃহস্থলীপণ্য ও ফার্নিচারসহ বিভিন্ন অফারে বিক্রি করা হতো। ধামাকা শপিং ডট কম -এর বিভিন্ন অফারগুলো হলো, সিগনেচার কার্ড ২০ থেকে ৩০ শতাংশ, ধামাকা নাইট এ ৫০শতাংশ পর্যন্ত, রেগুলার এ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড়।
Leave a Reply