২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৭:১৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
পর্ব -৩
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চুয়াডাঙ্গা -২ আসনের সদ্য বিদায়ী সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর পাহাড় সমান দুর্নীতি করেও রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাহিরে।
দক্ষিণ -পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা – জীবননগর উপজেলা ও তিতুদহ- বেগমপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চুয়াডাঙ্গা ২ আসন।
এই আসনটির তিন পাশেই ইন্ডিয়া। বলা যায় ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে প্রকৃত অর্থে আওয়ামী লীগ মাত্র একবার বিজয়ী হয়েছিলেন, সেই বিজয়ী সংসদ সদস্য হলেন মির্জা সুলতান রাজা।
প্রকৃতপক্ষে এই আসনে হাবিবুর রহমান মোল্লা ও আরেকবার মোজাম্মেল হক নির্বাচিত হন। তাদের প্রতি সমর্থন জনগণের না থাকলেও আওয়ামী লীগ বিরোধী হওয়াতে তারা জয় লাভ করে। হাবিবুর রহমান মোল্লা বেহেস্তের টিকিট বিক্রি করে সরল সোজা গ্রামের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জয় লাভ করেন, তিনি সে সময়ে জামাতের প্রার্থী ছিলেন।মোজাম্মেল হক সাহেব বিএনপি প্রার্থী ছিলেন (বঙ্গজ)বলে এলাকায় বেশ পরিচিত ছিলেন, তিনি তার স্বচ্ছ ইমেজ ও ভালো মানুষ হওয়াতে তিনি জনগণের সমর্থন লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের প্রচুর কর্মী বাহিনী অত্যাচারিত হয় এবং সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়, যার কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের একটি দুর্বলতা কাজ করতে থাকে। সবাই বলতে থাকে মির্জা সুলতান রাজাই সব থেকে ভালো এমপি ছিলেন। এলাকার সাধারণ মানুষও মির্জা সুলতান রাজা কে এমপি হিসেবে একরকম ২০০৮ সালের ভোটের আগে থেকেই ভাবতে শুরু করেন।মির্জা সুলতান রাজা একরকম নিশ্চিত হয়ে যান তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হবেন।
কিন্তু মজার বিষয় হল ২০০৯ সালের নির্বাচন কে ঘিরে চুয়াডাঙ্গা -২ আসনে এমপি প্রার্থী হতে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আলী আজগার টগর গোপনে চেষ্টা চালাতে থাকেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী দু-একজন নেতাকে অর্থের মাধ্যমে ম্যানেজ করে ফেলেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সুযোগ্য সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদও নিজে প্রার্থী হন।কিন্তু এক অদৃশ্য কারণে আজাদুল ইসলাম আজাদ অর্থের বিনিময়ে আলী আজগার টগরের নিকট বিক্রি হয়ে যান।
আলী আজগার টগর, একটা রাজাকার পরিবারের সন্তান হয়েও আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া শুরু করেন। তিনি আজাদকে টাকা দিয়ে কিনে নেন, সাথে সাথে তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার সেলুনকে আলী আজগার টগর মামা বলে সমন্ধন করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে কিনে নেন। ২০০৮ সালে টগর হাসতে হাসতে নৌকা মার্কা নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেন। ২০০৮ সালে এসে রাজাকার পুত্রকে নমিনেশন দেওয়া ছিল আওয়ামী লীগের সব থেকে বড় রাজনৈতিক ভুল। আলী আজগার টগর কে নমিনেশন পাইয়ে দেওয়ার কারিগর ছিল জাহাঙ্গীর কবীর নানক সহ দুর্নীতিবাজ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
২০০৯ সালের জানুয়ারীর নির্বাচনে আলী আজগার টগর বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় মানুষের জমি দখল, হাট- বাজার,খাল -বিল, নদী – নালা দখল বিভিন্ন প্রকারের ট্রেন্ডার বানিজ্য, চোরাকারবারি সহ নানান প্রকারের ত্রাসের রাজত্ব। এমন কোন অন্যায় নেই যা তিনি করেন নাই।বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে একে একে আওয়ামী লীগের লোকদের সরিয়ে দেন। অনুপ্রবেশ ঘটান সন্ত্রাসী চোরাকারবারিদের।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আলী আজগার টগরের বাপ -চাচা স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রচন্ড বিরোধীতা করেন।তার অংশ হিসেবে আলী আজগার টগর এর পিতা আব্দুল ওহাব ওস্তাগার রাজাকারদের ওস্তাদ হিসেবে কাজ করতে থাকেন। যুদ্ধ চলাকালে টগরের পিতা সুবলপুর নামক ঘাটে বসে থাকতেন সারাদিন। তার কাজ ছিলো কোন মুক্তিযোদ্ধা নদী পার হয়ে এপারে কিংবা ওপারে যায়।
গ্রামের কোন মেয়ে নদীর ঘাটে গোসলে যায়। এদের ধরে নিয়ে জামাল রাজাকারের মাধ্যমে পাকিস্তানি ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিতেন তিনি। তারপরে কি হতো সকলেই অবগত আছেন। আলী আজগার টগর এমপির আপন চাচাতো ভাই জনাব শওকত আলী, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। তিনি একদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাতে গেলে টগরের পিতা লাথি মেরে ওই ভাষণটি ভেঙে ফেলেন। ঐ পরিবারের শওকত আলী ছাড়া বাকি সবাই স্বাধীনতা বিরোধী ধর্ষক রাজাকার ছিলেন। টগরের পিতার সহযোগী জামাল রাজাকার কে ধরে স্বাধীনতার পর দামুড়হুদা চৌরাস্তার মোড়ে সাধারণ জনগণ পিটিয়ে মেরে ফেলে।তাহলে টগরের পিতার কিছুটা হলেও অত্যাচারের নমুনা বুঝতে কষ্ট হয় নাই আপনাদের।
সে সময়ে আলী আজগার টগরের পিতা আব্দুল ওহাব ওস্তাগার ভয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। যার কারনে সে সময় উনি প্রাণে রক্ষা পান। পরবর্তীতে সেলুন মিয়া ও আজাদের আশীর্বাদে বাংলাদেশের ফিরে আসেন। সেলুন মিয়া ও আজাদুল ইসলাম আজাদ আওয়ামী লীগ করলেও তারা নিজ স্বার্থের বিরুদ্ধে একটুও কাজ করেননি।রাজনীতিতে প্রথম থেকেই তাদের উদ্দেশ্য ছিল অর্থ উপার্জন যা তারা শেষ দিন পর্যন্ত করেছেন। সেলুন মিয়া ও আজাদুল ইসলাম অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন ও চুয়াডাঙ্গা জেলার চাঁদাবাজি, ট্রেন্ডার বাণিজ্য সহ সকল প্রকার অপকর্ম চালিয়ে গেছেন । অনুপ্রবেশকারী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নিকট হইতে প্রতিমাসে আজাদুল ইসলাম আজাদ তিন লক্ষ টাকা নিতেন এবং আব্দুর রাজ্জাক খান মিনিস্টার গ্রুপের নিকট হতে তিন লক্ষ টাকা নিতেন।এই ভাবে দশ হাজার টাকা হইতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময় টগরের নিকট হইতে নিয়েছেন । কেউ নেতা হতে আসলেই টগরকে টাকা দিতে হতো টগরও টাকা দিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক কে যা পানির মতো পরিষ্কার।
আলী আজগার টগরের শ্বশুরকূল মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তারা জামাতে ইসলামের রাজনীতির সাথে যুক্ত । এমনকি টগরের শশুর জামাতের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাডিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।শ্বশুরকুল জামাতে ইসলাম করলেও জামাইয়ের অবৈধ টাকায় তারা অনেক বড়লোকে রূপান্তরিত হয়েছেন। আলী আজগার টগর একজন আওয়ামী লীগের এমপি হয়ে বউয়ের বড় ভাই যুদ্ধ অপরাধী ট্রাইব্যুনালে সে সময়ে জামাতের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেছিলেন। আর এমপি সাহেব দুই হাতে ইনকাম করে শশুরকুলের সকলকে কোটিপতিতে রূপান্তর করেছেন। নৈতিকতার দিক থেকে আলী আজগার টগর এত নিম্নমানের ছিল যে জীবননগরে সম্পূর্ণ জামাতকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে শেষ করে দিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা- ২ আসনে স্থানীয় নির্বাচন সময়ে এমপি সাহেব নিজের পছন্দের ব্যক্তিরা মনোনয়ন না পেলে তার পছন্দমত জামাতের প্রার্থীদের বিদ্রোহী দাঁড় করিয়ে দিতেন এবং অর্থ নিয়ে আওয়ামী লীগ এর প্রার্থীদের পরাজিত করাতেন। দুই উপজেলায় দুইজন আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন এবং ১৫ জন ইউপি চেয়ারম্যান কে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করিয়েছেন। তারপরও তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট অত্যন্ত প্রিয় লোক ছিলেন কারণ তিনি অঢেল টাকা আওয়ামী লীগের অসৎ কেন্দ্রীয় নেতাদের দিতেন! তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও বিএম মোজাম্মেল হক। জাহাঙ্গীর কবির নানক সরাসরি টাকা নিতেন। বিএম মোজাম্মেল হক টাকা নিতেন তার পি এস এর মাধ্যমে ও পরবর্তীতে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনার দোস্ত গ্রামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে।
লুটপাট কারী আলী আজগার টগর যে সকল প্রার্থীকে সরাসরি ফেল করিয়েছিলেন
১)মাহফুজুর রহমান মঞ্জু জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।
২)দামুড়হুদা উপজেলায় আজাদকে হারিয়েছেন জামাতের প্রার্থীর কাছে একবার ও আরেকবার সিরাজুল ইসলাম ঝন্টুকে হারিয়েছেন তার আপন ভাই ক্রসফায়ারের আসামি আলী মুন্সুর বাবু ওরফে গোল্ডেন বাবুর কাছে ।
৩)জীবননগর উপজেলায় আব্দুল লতিফ অমলকে হারিয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে ।
৪)নতিপোতা ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী আজিজকে পরাজিত করেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে ।
৫)কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে ভুট্টোকে পরাজিত করেছেন।
৬)কুড়লগাছি ইউনিয়নে হাবিবুল বাহার কে পরাজিত করিয়েছেন ।
৭)দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নে শহিদুল ইসলামকে পরাজিত করেছেন।
৮)সীমান্ত ইউনিয়নে জাকির হোসেনকে পরাজিত করেছেন।
৯)আন্দুল বাড়িয়া ইউনিয়নে মির্জা লিটনকে পরাজিত করিয়েছিলেন তার স্ত্রীর এক্স বন্ধু মুক্তার আলীর নিকট।
১০)মনোহরপুর ইউনিয়নে আব্দুল হান্নানকে পরাজিত করা।
১১)পরবর্তী নির্বাচনে কুড়লগাছি ইউনিয়নে কফিলউদ্দিন টুটুলকে পরাজিত করান।
১২)জীবননগর পৌরসভায় নাসির উদ্দিনকে পরাজিত করান ।
১৩)হাউলী ইউনিয়নে আবু সাঈদ খোকনকে পরাজিত করান।
১৪)বাঁকা ইউনিয়নে কাদের প্রধান কে পরাজিত করান।
১৫)রায়পুর ইউনিয়নে তাহাজ্জুদ আলী কে পরাজিত করান ।
এত বড় লিস্ট দিলাম এই কারণে যে এখানে তিনি বাণিজ্য করেছেন ১৫ জনের নিকট হতে এক এক জন ব্যক্তির কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৩০ লক্ষ সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তিনি এই জয় পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেন।
এমপি আলী আজগার টগরের ভাই আলী মুনসুর বাবুকে দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করান তার ভাই কে। তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জেলার মাদক সম্রাট লিস্টের চিহ্নিত মাদক সম্রাট হিসেবে ক্রসফায়ারে আসামি ছিলেন, আলী মুনসুর বাবু (গোল্ডেন বাবু) জীবন রক্ষার্থে ভারতে পলায়ন করেন এই এলাকায় সোনা ও মাদক সম্পূর্ণভাবে আলী আজগর টগর ও তার ভাই আলী মুনসুর বাবুদের হাতে চলে যায়! তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বড় অংকের টাকার মাধ্যমে সে কেস মীমাংসা করেন এবং তাদের দায় মুক্তি দেন। এই কথাগুলি যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে গত ১৫ বছরে চুয়াডাঙ্গা জেলার যতগুলি বিজিবি ও পুলিশের তালিকায় মাদক ব্যবসায়ীদের নাম আছে তার শীর্ষে আলী মুনসুর বাবু ও নফর আলীর নাম পাবেন।আর এদের সহায়তা করতেন দামুড়হুদা- জীবননগর দুই থানার তৎকালীন ওসি সাহেব গনেরা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা এনএসআই
ডেপুটি ডাইরেক্টর সোহেল সাহেবদের মতো কিছু অসৎ অফিসারদের সহায়তায়।মোট কথা চুয়াডাঙ্গার ডিসি,এসপি, এনএসআই, যেই আসুক না কেন টগর সাহেব তাদের নারী ও অর্থ দিয়ে কিনে ফেলতেন।
আলী আজগার টগর আরেক ভাই আরিফ জীবননগর উপজেলা দখল ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় যতোগুলো দপ্তর আছে সব দপ্তরে টেন্ডার, পশুরহাট,হাট – বাজার, এলাকার সব খাল বিল বাওড় নিয়ন্ত্রণ করেন এমপি মহোদয়ের বড় ভাই জনাব জাহিদুল ইসলাম সাহেব পৌরসভার টেন্ডার এলজিইডি নিয়ন্ত্রণ করেন ছোট ভাই ফারুক ও আলী মুনসুর বাবু দামুড়হুদা উপজেলার সমস্ত টেন্ডার হাট বাজার পশুর হাট বিল বাওড় ইত্যাদি ইজারা না দিয়েই পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ভোগ দখল করেন।
কেরু এন্ড কোম্পানির প্রতিটি টেন্ডার খোলার পরে ব্ল্যাংক সাবমিট কৃত দরপত্রে দর নিজ হাতে লিখে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নিজেকে পরিণত করতো। বিগত দিনের টেন্ডার যাচাই-বাছাই করলে সত্যতা পাবেন।কেরু এন্ড কোম্পানি প্রতিটি ওয়্যারহাউসে নিয়োগের সময় প্রত্যেক এজেন্টের নিকট থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে এমপি সরাসরি গ্রহণ করতেন এছাড়া প্রতিমাসে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দিতে হতো।কেরু এন্ড কোম্পানির হাজার হাজার বিঘা জমি তিনি নাম মাত্র রেটে ইজারা নিতেন, তারপর তিনগুণ তা সাধারণ মানুষের নিকট আবার ইজারা দিতেন। এভাবে দেখা যায় বেগমপুর- নেহালপুর,ফুরসেদপুর,হিজলগাড়ী সহ কেরু এন্ড কোম্পানির জমি তিনি ইজারা নিয়েছিলেন, একর প্রতি ইজারা নিতেন ১৬-১৮ হাজার টাকায়,সে জমি তিনি বিঘায় বিশ হাজার টাকা করে এলাকার কৃষকদের কাছে ইজারা দিতেন, কিন্তু সাধারণ মানুষকে পুনরায় ইজারা দিয়েছেনএকর প্রতি ৫০০০০ -৬০০০০ টাকায় তার অর্থ হল তিনি ৫০০০ হাজার একর জমি ইজারা নিয়েছেন প্রতি একর থেকে গড়ে ৩০০০০ হাজার টাকা করে লাভ করলে মোট লাভের পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা।
আলী আজগার টগর এবং তার ভাই আরিফ এর নেতৃত্বে জীবননগর উপজেলার গঙ্গাদাসপুর গ্রামের শতাধিক পরিবারের জমি দখল করেন। সেখানে আরিফের সহযোগী হিসেবে সুরুজ মিয়া মেম্বার ও জাহাঙ্গীর কমিশনার, মালেক মোল্লা, মিল্টন মোল্লা সহ আরো কয়েকজন আলূ আজগার টগর এমপির সহযোগী ছিলো এবং সরাসরি তার পক্ষে কাজ করেছে। বিষয়টি স্থানীয় পত্রিকায় অনেক লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু টগরের ভয়ে কেউ মুখ খোলে নাই। টগরের নেতৃত্বে জীবননগর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ৬০০ বিঘা জমির কাহিনী তো সকলে জানে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে সোলার প্লান্ট স্থাপন করার উদ্দেশ্যে এ প্রায় একশ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে যা অত্র এলাকায় যেকোনো কৃষককে জিজ্ঞাসা করলে তার সত্যতা পাবেন বিষয়টি স্থানীয় পত্র পত্রিকা এবং টেলিভিশনের সম্প্রচার করা হয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পঠানো হয় কিন্তু অদৃশ্য কারণে টগর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এখানে টগরের সহযোগী ছিল যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বেয়াদব নামে খ্যাত রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন। পরে অবশ্য টগরের সাথে তার অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন উক্ত গ্রামের লোকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের গ্রাম ছাড়া করান এই দূর্নীতিবাজ।
১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় মেমনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহন চ্যাটার্জী তার বাড়ি সহ বাড়ির আঙিনার গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং প্রচুর জমি জায়গা রেখে ভারতে পালিয়ে যান যা পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে তালিকা ভুক্ত করেন। উক্ত মোহন চ্যাটার্জির বিশাল সম্পত্তি বিভিন্ন কলাকৌশলে আলী আজগার টগর তার নিজ নামে করিয়ে নেন এবং নিজে নিজেই তিনি জমিদার হয়ে যান রাতারাতি।
আলী আজগার টগর ও তার ভাইদের ক্যাডারগণ হলেন আব্দুল মান্নান, তোতা, নফর আলী, মান্নান শাহ, বাংলা, আশরাফুল, মনির সরদার, অনিক, হীরক, আজিজ, হিরন ও জিয়াউল এরা সবাই প্রকাশ্যে বলে আমরা আওয়ামী লীগ করিনা আমরা টগর লীগ করি।
এই ক্যাডার বাহিনীর মূল কাজ মানুষকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে রাখা। কিছুদিন পূর্বে মান্নান ও তোতা একত্রে যুবলীগ নেতা পল্টুকে দিনের বেলায় পিটিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। টগরের ক্যাডার মান্নান মাংস কাটার ডাসা দিয়ে হারুন নামের দর্জিকে কুপিয়ে আহত করে সে ১৮ দিন পঙ্গু হাসপাতাল চিকিৎসার থাকার পর উক্ত হারুন দর্জি মৃত্যুবরণ করে। হারুনের স্ত্রী ও সন্তানরা বর্তমানে অত্যন্ত করুন ও অমানবিক জীবন যাপন করছেন। টগর প্রকাশ্যে বলে বেড়ায় নমিনেশন পাবেই কারণ শেখ রেহানার সাথে ও শেখ হেলালের সাথে তার একটি সম্পর্ক রয়েছে। বিগত নির্বাচনে শেখ হেলাল কে ৫০ কোটি টাকা প্রদান করে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হককে তিনি নিয়মিত অর্থ প্রদান করতেন। শোনা যায় বিএম মোজাম্মেল হকের ড্রাইভার, অফিসের স্টাফ ও বাসার স্টাফ এদের বেতন নিয়মিত টগর পরিশোধ করতেন।শোনা যায় বিএম মোজাম্মেল হক ধানমন্ডি ২৮ নাম্বার রোডে একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন যার মূল্য ১০ কোটি টাকা। ৮ কোটি টাকা টগর উৎকোচ হিসাবে দিয়েছেন। বিএম মোজাম্মেল হকের ড্রাইভার এর নিকট হইতে প্রাপ্ত এই তথ্য মিথ্যা হতে পারে না।এই কথা বলার কারনে ড্রাইভারের চাকরি চলে যায়। জাহাঙ্গীর কবীর নানককে নিয়মিত টাকা দিতেন। অফিস ভাড়া ৯৬ হাজার, টাকা ও অফিসের স্টাফদের বেতন বাবদ দেড় লক্ষ টাকা প্রতিমাসে প্রদান করতেন।এছাড়াও হাজী আলী আজগার টগর এমপি ও সোলায়মান হক ছেলুন এমপি’র ছোট ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন ঢাকায় নিয়মিত রংমহল বসাতেন যেখানে সুন্দরী নারী ও মদের বন্দোবস্ত ছিল। রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটনের দুইটি বাড়ী কানাডা একটি ফ্লাট অস্ট্রেলিয়া একটি ফ্লাট সিঙ্গাপুর ও দুইটি ফ্লাট ধানমণিতে রয়েছে,অথচ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে তিনি বাসের টিকেট বিক্রি করতেন।
আলী আজগার টগরের ৩৪ টা ফ্ল্যাট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে,গেন্ডারীয়া, মোহাম্মদ পুর,সাভার সহ বিভিন্ন জায়গাতে বাড়ি, কলকাতা সল্ট লেকে দুইটি ফ্ল্যাট, লন্ডনে একটি বড় বাড়ি আমেরিকার ফ্লোরিডাতে একটি গ্যাস পাম্প রয়েছে।
আলী আজগর টগর কত টাকা অবৈধভাবে রোজগার করেছে তার হিসাব নেই।
চুয়াডাঙ্গা -২ আসনের জনগণের দাবি এই দুর্নীতিবাজ আলী আজগার টগরকে অনতি বিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক তার ভাই মনসুর বাবু ওরফে গোল্ডেন বাবু তাকেও গ্রেফতার করা হোক। যাদের আইনের আওতায় আনা একান্তভাবে প্রয়োজন তাদের মধ্যে আলী আজগার টগর, রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার, সোলাইমান হক জোয়ার্দার ছেলুন এমপি লোটাস চেয়ারম্যান,মুন্সি আব্দুল হান্নান,রঞ্জু,নজরুল মল্লিক ও মনসুর বাবু, আরিফ,খুস্তার জামিল সহ আরো অনেকে। চুয়াডাঙ্গা -১ এর এমপির ভাগ্নে সজল এর নিকট ২০০ কোটি টাকা রয়েছে যার নাম সজল এদের অনতি বিলম্বে গ্রেফতার করে টাকা উদ্ধার করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চুয়াডাঙ্গার জেলার একাধিক ব্যক্তিরা বলেন এদের শাস্তি না হলে চুয়াডাঙ্গার আওয়ামী লীগ জীবনের ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
আলী আজগার টগর, আলী মুন্সুর বাবু ও তার সব ভাই প্রত্যেকে এলাকার ত্রাস ছিলো এবং দুর্নীতির সাথে জড়িত সুতরাং এদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার সাধারণ জনগন।
Leave a Reply