৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৭:২৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
আব্দুল খালেক, এলাকায় সবাই তাকে চেনেন হাফিজ রাজাকারের ছেলে। অনেকদিন হলো চাকুরী করছেন সহকারী পরিচালক পদে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল- জামুকায়। জামুকায় আগত বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে জানেন- এডি খালেক সাহেব হিসেবে। কেবল জানেন না, তার পিতা হাফিজ উদ্দিন একাত্তরের ভয়াল দিনগুলোতে ছিলেন কুখ্যাত এক রাজাকার। সেই ধারাবাহিকতায় হয়তো বা সুযোগ পেলেই এডি খালেক তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
কারণটি সহজ, রাজাকার পুত্র হয়েও তিনি এখন জামুকার এসিসট্যান্ট ডিরেক্টর- এডি। খবরদারী করছেন আস্ত একটি বিভাগের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। ফলে সমীহ করে তাকে স্যার বলতে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। ব্যাপারটা বিচিত্রই বটে।
এডি আব্দুল খলেক-এর পৈতৃক নিবাস ঠাকুরগাঁও সদরের রহিমানপুরে। ওই এলাকার মানুষজনের বড় একটি অংশ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। একারণে অল্প কিছু মানুষ বাদে রাজাকারের আড্ডা জমেছিল রহিমানপুর এলাকায়। সেই রাজাকারদের একজন ছিলেন আব্দুল খালেকের পিতা হাফিজ উদ্দিন।
একাত্তরের দুঃসহ দিনে কত নিরীহ মানুষের কপাল পুড়েছে হাফিজ উদ্দিনের হিংস্রতায়- সে হিসেব কেউ রাখেনি। একই কারণে তার ছেলে আব্দুল খালেক চাকুরী পেয়ে খবরদারীর সুযোগ পেয়েছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর। তার চাকুরী দেবার সময় এই গুরুতর বিষয় কেউ খেয়াল করার প্রয়োজনও মনে করেননি। এমন তো হচ্ছে কতই। বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিৎকার করলেই বা কার কি আসে যায়! ফলে তাই হচ্ছে- যা হবার। আর এভাবেই বুঝি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ?
এডি আব্দুল খালেকের কাছে মাসের পর মাস ঘুরছেন সমস্যা নিয়ে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এদের মধ্যে তার এলাকারও আছেন কয়েকজন। পাকে পাকে ঘুরাচ্ছেন তিনি; আজ আর কাল করে। কোন সুরাহা হচ্ছে না। পরিচয় পেয়ে মনের কোনে জমে থাকা অব্যক্ত বেদনার কথাগুলো এক নাগাড়ে উগড়ে দিলেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভূক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
‘আপনারা অভিযোগ করেন না কেন’- এমন প্রশ্নে ভূক্তভোগীরা জানান, অভিযোগ করে লাভ নেই; দেখছি তো এখনকার কাজ কারবার। অভিযোগে কাজ তো হবেই না; বরং ঝামেলা বাড়বে। সে কারণে ঘোরাঘুরির কষ্টই ভালো। মুখ বুজে তাই সয়ে যাচ্ছি অত্যাচার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জনৈক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চিঠি জাল করে এক ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা গেজেট জারি করায় মূখ্য ভূমিকা রাখেন এডি খালেক। ঘটনা চাউর হলে তিনি অভিযোগের মুখে পড়েন। বিভাগীয় তদন্তে তার বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জাল ও ভূয়া পত্রের উপর কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ফলে দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলাসহ অসদাচারণের প্রমাণিত অভিযোগে তাকে সাবর্ডিনেশন করা হয়েছিল। জানা যায়, এমন অভিযোগে আরও একাধিকবার অভিযুক্ত হয়েছেন এডি আব্দুল খালেক।
এ ব্যাপারে জানার জন্য একাধিকবার এডি আব্দুল খালেক-এর ফোন নাম্বারে কল করলেও তিন ফোন ধরেননি।
Leave a Reply