২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৯:৫৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
১৭ মার্চ ২০২০ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ হয়ে যায়। যা সীমিত পরিসরে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে শুধুমাত্র প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক খোলে দেওয়া হয়। চলতি মাসেই খুলে দেওয়া হচ্ছে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। করোনাকালীন এই সময়ে অনেক শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, অনেক শিক্ষক মারা গেছেন এবং নন এমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ বন্ধ থাকার কারণে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি নবায়ন ও কমিটি গঠনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। করোনাকালীন সময়ে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশানুরুপ ছাত্র-ছাত্রী ও ভর্তি করাতে পারেনি। কোনো দিকনির্দেশনা ছাড়াই নানান অজুহাতে শতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি স্থগিত করা হয়।
ঘুষ-বানিজ্যের মাধ্যমে ও দলীয় নেতাদের সুপারিশের আলোকে কিছু প্রতিষ্ঠানকে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয় এবং ৪৮ টি প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি স্থগিত রাখা হয়। পরবর্তীতে ঐ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কলেজ পরিদর্শক বরাবর আবেদন ও অঙ্গিকারনামাসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা নেয়া হয়। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের চাহিদা মাফিক অর্থের বিনিময়ে ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়ে বাকী ১৮ টি প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন কলেজের মাধ্যমে ফরম পুরনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভোক্তভূগী একটি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন- বোর্ডের চেয়ারম্যনের নির্দেশনা অনুযায়ী উক্ত কলেজে ফরম পুরনের জন্য গেলে কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তি ফি দুই বছরের মাসিক বেতন পরিশোধ করলে ফরমফিলাপ করিয়ে দিবে। যা অত্যন্ত অমানবিক। এমতাবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে অভিভাবকরা, আর শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়েছে দিশেহারা। বোর্ডের নির্দেশনা মানছেনা কোনো কলেজেই। এই অবস্থায় বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিকার চাওয়া হলে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পুনরায় বিভিন্ন সরকারী কলেজে ফরমপুরনের জন্য সময় দেন। যা কোনোভাবেই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ফরমপুরন করানো যাচ্ছেনা। তিনি আরো বলেন- ঘুষ ছাড়া এখন আর কোনো কিছুই হয়না। তাদের চাহিদা মাফিক টাকা দিতে না পারায় আমাদেরকে অনুমতি দিচ্ছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অধ্যক্ষ বলেন- আমাদের কলেজের পাঠদান ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে থেকে পাঠদান স্থগিত করা হয়। কিন্তু ২০২১ এইচ এস সি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরমপুরণ এবং ৯ম ও ৮ম শ্রেণির রেজি. কার্যক্রমও বন্ধ রেখেছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করলে চেয়ারম্যান স্কুল সংশ্লিষ্ট বিষয়টি বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর আবেদেনের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য বলা হলে বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর আবেদন করলে কোন নিষ্পত্তি না করে তিনি চেয়ারম্যানের কাছে যেতে বলেন। এভাবেই ঘুরতে ঘুরতে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তিনি বলেন- শিক্ষাবোডের্র উচিত হবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হয়রানীর কথা বিবেচনা করে শর্তসাপেক্ষে রেজি. ও ফরমপুরনের অনুমতি দিলে বর্তমান এ সংকট দুর হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন- আমরা এখন কোথায় যাব কি করব? বোর্ড চেয়ারম্যানের এই হঠকারী সিদ্ধান্ত আমাদের সন্তানদের জীবন ধব্বংসের মুখে। আমরা মনেকরি প্রতিষ্ঠান গুলোকে সুনির্দিষ্ট সময় দিয়ে সমস্যা সমাধান করা দরকার। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। চলবে——
Leave a Reply