1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
  3. editorsobujbangladesh@gmail.com : sumona akter : sumona akter
তেঁতুলিয়ায় চার ভুয়া সাংবাদিক গ্রেফতার, পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৮:২৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

তেঁতুলিয়ায় চার ভুয়া সাংবাদিক গ্রেফতার, পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

তেঁতুলিয়ায় চার ভুয়া সাংবাদিক গ্রেফতার, পাঁচজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

পঞ্চগড় :প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সাংবাদিকতার পরিচয়ে এক মাদরাসায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চার ভুয়া সাংবাদিক আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় তেঁতুলিয়া মডেল থানায় পলাতক ক্যামেরাম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনায়েত কবির মামলার তথ্যটি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার তেঁতুলিয়া শালবাহান দাখিল মাদরাসা হতে তাদেরকে আটক করে রাতে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ্য করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে ৪১৯/৪২০/৩৮৪/৩৪ ও ৫০৬ ধারায় মামলা হয়েছে। আজ দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে।

আটককৃতরা হলেন, আল হেদায়েতুল্লাহ সিদ্দিকী (২৫), আব্দুর রহিম (২৫), দেলোয়ার হোসেন (৩৫), গাড়ী চালক অহিদুল ইসলাম (৩৫)। এ সংঘবদ্ধের মধ্যে পালিয়ে গেছেন ক্যামেরাম্যান হামিদুল ইসলাম। এদের মধ্যে আল হেদায়েতুল্লাহ সিদ্দিকী নীলফামারীর সদরের কিসামত পঞ্চপুুকুর এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে, আব্দুর রহিম দিনাজপুর খানসামা এলাকার নদীপাড়া এলাকার ইসকিন্দার আলীর ছেলে, গাড়ী চালক অহিদুল ইসলাম নীলফামারীর সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে ও দেলোয়ার হোসেন দিনাজপুর খানাসামার আব্দুস সামাদের ছেলে। পলাতক ক্যামেরাম্যান হামিদুল ইসলাম নীলফামারীর পঞ্চপুকুর সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

এদের মধ্যে হেদায়েতুল্লাহ দৈনিক অগ্নিশিখা পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি, আব্দুর রহমান দৈনিক শিক্ষা ডটকম রংপুর ব্যুরো চিফ, দেলোয়ার হোসেন নীলফামারী জেলার স্টাফ রিপোর্টার বলে পরিচয় দেন।

মাদরাসার শিক্ষকরা জানান, সোমবার দুপুরে একটি মাইক্রোবাস করে সাংবাদিক পরিচয়ে তেঁতুলিয়ার শালবাহান দাখিল মাদরাসায় যান পাঁচ ব্যক্তি। মাদরাসা প্রবেশ করেই মাদরাসার শিক্ষক ও সুপারের কাছে তারা বিভিন্ন তথ্য চেয়ে বসেন। এর মধ্যে মাদসারার সুপার রফিকুল ইসলাম তথ্য নিতে লিখিতভাবে প্রশ্ন দিতে বললে কিভাবে তথ্য নিতে হয় মর্মে বিভিন্ন হুমকি প্রদর্শন করতে থাকেন। তারা সাংবাদিক কীনা সন্দেহ হলে মাদরাসা থাকায় অবস্থায় স্থানীয় সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজনদের খবর দিলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী। পরে তিনি তাদের সাথে কথা বললে অসংলগ্ন পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে তারা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।

বিকেলে ওই মাদরাসায় এই সংঘবদ্ধ দলটি তেঁতুলিয়ার আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ নিয়ে হাজির হন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। আলহাজ ডালিম উদ্দিন মহিলা দাখিল মাদরাসা, মাঝিপাড়া শালবাহান রোড দাখিল মাদরাসা হতে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী মাদরাসার শিক্ষক ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিকেলে তাদেরকে তেঁতুলিয়া নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বীর কার্যালয়ে নেয়া হলে বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সঠিকভাবে তথ্য দিতে না পেরে তারা প্রতারক বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। এ সময় তারা তিন-চারটি প্রতিষ্ঠান হতে ৯ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে সে টাকা ফেরত দিতে চায় তারা। পরে রাতে তাদেরকে মডেল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ্য করলে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা গেছে, তারা সাংবাদিকতার পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করে আসছেন বলে জানা যায়।

শালবাহান দাখিল মাদরাসার সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরের আগেই একটি মাইক্রোবাস নিয়ে আমাদের মাদরাসায় প্রবেশ করে। মাদরাসা ঢুকেই তথ্য চাইতে শুরু করেন। আমি বলি, কী তথ্য জানতে চান তা লিখিতভাবে দিতে বললে তারা আমাকে কিভাবে তথ্য নিতে হয় হুমকি প্রদর্শন করে। তাদের আচরণ দেখে সন্দেহ হলে বিষয়টি আমি আমাদের শিক্ষা অফিসারকে জানাই। তারা বেশ কয়েকটি মাদরাসায় গিয়ে রিপোর্টের ভয়ভীতি দেখি টাকা নিয়েছে জানতে পারি। পরে তাদেরকে ইউএনও স্যারের কার্যালয়ে নেয়া হয়। এ ঘটনায় তারা প্রতারক বলে স্বীকার করলে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

আলহাজ্জ ডালিম উদ্দিন মহিলা দাখিল মাদরাসার শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, নোহা মাইক্রোবাস নিয়ে তারা মাদরাসায় আসে। মাদরাসায় এসে বিভাগীয় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলে আপনার মাদরাসার উন্নয়নমূলক রিপোর্ট করবো। পরে তারা ১০ হাজার টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে তারা মাদরাসার নামে উল্টাপাল্টা নিউজ করার হুমকি দিতে থাকে। পরো বাধ্য হয়ে আমরা ৪০০০ টাকা দেই। একই অভিযোগ করেন মাঝিপাড়া শালবাহান রোড দাখিল মাদরাসার সুপার রুহুল আমিন। তারা আমার কাছ থে ২০০০ টাকা নেয়। আমরা এখন টাকা ফেরত চাই।

তবে ওই সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে তারা জানায়, তারা পেশায় সাংবাদিক। তারা রোববার (২৫ নভেম্বর) রংপুর থেকে তেঁতুলিয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসেছিলেন। পেশাগত সাংবাদিক হওয়ায় তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পজিটিভ রিপোর্ট করার যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। টাকা নেয়ার কথাও স্বীকার করেন তারা। তারা ভুল করেছেন বলে স্বীকার করেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী বলেন, দুপুরে শালবাহান দাখিল মাদরাসা থেকে ফোনে জানতে পারি সেখানে কতিপয় কয়েকজন সাংবাদিক গিয়ে ঝামেলা করছেন। খবর পেয়ে দ্রæত মাদরাসায় গিয়ে মাদরাসার সুপার, শিক্ষকদের সাথে কথা বলে অভিযোগ শুনি। পরে ওই পাঁচজনের সাথে কথা বললে কথার অসংলগ্নতা পাই। ওই সময়ের মধ্যে তারা আরও কিছু মাদরাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত হই। পরে তাদেরকে আমাদের ইউএনও স্যারের কাছে নিয়ে যাই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »
error: Content is protected !!