৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৮:৪৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার।।
আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে দুর্নীতির কয়েকজন বরপুত্র ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এরা হলেন, শুধু ট্রেড লাইসেন্সধারী চাঁদাবাজ আবু মোতালেব, অপকর্মের হোতা আমজাদ হোসেন, চাঁদাবাজ নিয়াজ আলী চিশতি, খোরশেদ আলম, ভুয়া ভোটার করার হোতা আমিন হেলালি, ঋণ খেলাপি খন্দকার রহুল আমিন প্রমুখ। অভিযোগ রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এরা প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
তথ্যমতে, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই নির্বাচনে ২৫০ জনের অধিক ভুয়া ভোটার অন্তর্ভূক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুয়া ভোটার তালিকা নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। ভোটারদের অভিযোগ টাকার বিনিময়ে এফবিসিসিআইয়ের কয়েকজন পরিচালক ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ২৫০ জনের অধিক ভুয়া ভোটার তৈরি করে তাদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে অনেক পুরাতন ভোটারকে জোর করে বাদ দেওয়ার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এরফলে বিনা কারণে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তিরা হাইকোর্টে মামলা করে সুবিচার পাওয়ার আশা করছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৫০ টি এ্যাসোসিয়েশন হতে ভোটারের নাম প্রেরণ করা না হলেও এগুলো থেকে ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে প্রতি সংগঠন হতে ৫ জন করে ২৫০ জন ভুয়া ভোটার করা হয়েছে। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নিয়ন্ত্রিত সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস এ্যাসোসিয়েশন হতে অন্তত ৭ জন এমডির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া রেজুলেশন তৈরি করে ঢাকার নবাবপুর রোডের ৫ জন, এনার্জি কোম্পানিজ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৫ জন, প্রাইভেট ইকোনমিক জোনস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এএসএম আব্দুল মোনেমের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৩ জন, রপ্তানিমুখী জাহাজ নির্মাণ শিল্প মালিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহেল বারীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৫ জন এবং বাংলাদেশ লুব ব্লেন্ডার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ৫ জন ভোটার করার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রত্যেক ভুটা ভোটারের কাছ থেকে সদস্য করার বিনিময়ে ১ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি আমিন হেলালি, পরিচালক আবু মোতালেব, আমজাদ হোসেন, নিয়াজ আলী চিশতী সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, গত ৩ জুন নাম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ থাকলেও ১১ জুন রবিবার বিকেল পর্যন্ত ভুয়া ভোটার বানানো হয়েছে। অনেক সংগঠনের সভাপতিকে ডেকে নাম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। সভাপতির নিজের ভোট রেখে বাকি ৪টি ভোটারের নাম দিতে বাধ্য হয়েছেন। যেসব সভাপতি রাজি হতে চায়নি তাদের টিও লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিতর্কিত পরিচালক আবু মোতালেব নির্বাচনে এফবিসিসিআইয়ের আর্বিট্রেশন ট্রাইবুনালের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিতর্কিত আবু মোতালেব ফের প্রার্থী হয়েছেন।। এফবিসিসিআইয়ের বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও দুর্নীতির বরপুত্র আবু মোতালেব এবার ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ থেকে পরিচালক পদে প্রার্থী হয়েছেন। নিজের কোন ব্যবসা বাণিজ্য না থাকলেও শুধু ট্রেড লাইসেন্সধারী ঢাকা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু মোতালেব এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এফবিসিসিআইকে মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তিনি পুরান ঢাকার ছোট-বড় প্লাস্টিক খাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদাবাজি করে থাকেন। অবৈধ পলিথিন উৎপাদনকারীদের সহযোগীতা দিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে থাকেন।
মূলত চাঁদাবাজিই তার পেশা। এছাড়া জিবি সদস্য করে এফবিসিসিআইয়ের ভোটার বানিয়ে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে আবু মোতালেবের বিরুদ্ধে। এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিম্নমানের খাবার ও নাস্তা সরবরাহের বিনিময়ে কমিশন বাণিজ্য করে থাকেন। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা তার চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ। এ কারণে আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে জিবি মেম্বারদের বড় অংশ তাকে বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছে।
এছাড়া, দুর্নীতির আরেক বরপুত্র আমজাদ হোসেন এবার এফবিসিসিআই নির্বাচনে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের হয়ে পরিচালক পদে নির্বাচন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনিও এসব কর্মে সরাসরি জড়িত। আমিন হেলালির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মেম্বার নাইটস ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান উদযাপনের ফান্ড থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নিয়াজ আলী চিশতি গভীর রাত পর্যন্ত এফবিসিসিআইতে অবস্থান করে বিভিন্ন অপকর্মে করেন। ভুয়া ভোটার বানাতে তিনি গভীর রাতকেই নিরাপদ মনে করেন। এ কারণে সবাই যখন চলে যায় তিনি তখন এফবিসিসিআইতে অপকর্মে লিপ্ত হউন।
জিবি সদস্যরা মনে করছেন, এ ধরনের প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে এফবিসিসিআইয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। তাই এদের এবার বর্জন করতে হবে।
##
Leave a Reply