২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৮:০১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
মোঃ এনামুল হক, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অমর চক্রবর্তীর ঘুষ বাণিজ্য, সেবাগ্রহীতাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, সেবাপ্রদানে অনিহাসহ বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামে “দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ”।
অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা অমর চক্রবর্তী সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের সাথে তুই-তোকারি, তোর কাজ হবে না, তেল খরচ কি তোর বাপ দিবে, কাগজ পত্র দেখার কোন টাইম নাই, মুই যা করিম তাই’ ইত্যাদি চিল্লাচিল্লি করছেন। বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে দেখা যায় যারা ঘুষ দিচ্ছে তাদের কথা শুনছেন যারা ঘুষ দিচ্ছেন না তাদের বলছেন আজকে মাথা ঠিক নাই। পরে আইসেন তবে কাজ অনুযায়ী ১টি কিংবা একাধিক নোট গুজে দিলেই ঠান্ডা মাথায় কথা বলছেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা অমর চক্রবর্তী। এর মধ্যে একজন বাক প্রতিবন্ধী সেবা নিতে আসলে গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারন শুরু করে সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধির ধারন কৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় উক্ত বাক প্রতিবন্ধীকে ছন্দের সুরে অতি আনন্দের সহিত জানায় তার পক্ষে রিপোর্ট তৈরি করেছেন, এর মধ্যে কৌশলে বলেন সবকিছু তোর পক্ষে আছে এলা তাড়াতাড়ি টাকা দে, যদি টাকা না দিস তাহলে সবকিছু তোর বিপক্ষে চলে যাবে, দে টাকা দে, তুই যদি এলা টাকা না দিস তাহলে তোর প্রতিপক্ষের নিকট টাকা নিয়ে তোর বিপক্ষে রিপোর্ট দিয়ে দিবো। প্রতিবন্ধী ভুক্তভোগী বলেন আমার কাগজপত্র সব ঠিক আছে, জমি আমার দখলে আছে, তবুও কেন টাকা দিতে হবে। এই কথা শুনে অমর চক্রবর্তী বলেন, তুই কিভাবে ভাল থাকিস আমি দেখে নিবো। প্রতিবন্ধী ভয়ে আতংকিত অবস্থায় জিজ্ঞেস করেন কত টাকা দিতে হবে। কর্মকর্তা বলেন, আপাতত ১০ হাজার দে। আরেক সেবা গ্রহীতা নারীকে সেবা দেওয়ার জন্য খরচাপাতি চাইলে ভুক্তভোগী নারী বলেন, সেইদিন তো টাকা দিলাম আজকে আরো দিতে হবে। অমর চক্রবর্তী বলেন, তোমাদের পক্ষে যে রিপোর্ট দিবো তোমাদের তো চ্যাও ব্যাও আমি কিছুই দেখি না, পয়সা-কড়ি দিবেন না রিপোর্ট উল্টা পাশে করে দিম।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, অমর চক্রবর্তীর এমন আচরণ নতুন কিছু নয়, এলাকাবাসী জানায় ভূমি অফিসে কথা বলতে গেলেও টাকা দিতে হয়, টাকা ছাড়া কাজ তো দুরের কথা কথাই বলেন না ভূমি কর্মকর্তা অমর চক্রবর্তী। উক্ত এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে আদালতে চলমান মামলার বিষয়ে রিপোর্ট প্রদানের বিষয়ে টাকার বিনিময়ে একপক্ষের দলীল অন্য পক্ষকে দিয়ে বলেন, মুই যে তোমাক দিছু তোমরা ঘুণাক্ষরেও কাউকে বলেন না, দেও এলা টাকা দেও, টাকা দিয়ে বাড়ি যাও।
ঘুষ বাণিজ্যে এবং অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে অমর চক্রবর্তীর মন্তব্য জানতে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে জানতে দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল আলম বলেন, যেহেতু বিষয়টি লিখিত আকারে অভিযোগ পাইনি, তাই আমি মৌখিক ভাবে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
Leave a Reply