১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৭:৫৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে মাদক কারবার করতো চক্রটি। ৫০ কেজি গাঁজাসহ র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন চক্রের চারজন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
আটকরা হলেন, বগুড়া জেলার ধুনট থানার খাদুলি গ্রামের প্রয়াত আবু বক্কর শেখের ছেলে মো. মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ, তার সহযোগী কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার চরণল গ্রামের প্রয়াত বসু মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল শাহীন ওরফে নোমান হোসেন, একই গ্রামের মো. আমির আলীর ছেলে আল-আমিন হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার গোপেরবাগ গ্রামের মো. নবীনের ছেলে মো. ফয়সাল।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে একটি ব্যক্তিগত গাড়ির পেছনে বিশেষ কায়দায় লুকানো তিনটি ব্যাগ থেকে ৫০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, মাদক কারবারি চক্রের মূলহোতা মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ নিজেকে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক লোকাল পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমির খবরের সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিতেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে চতুরতার মাধ্যমে কুমিল্লাসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অবৈধ মাদকদ্রব্য গাঁজার চালান এনে তার অন্য তিন সহযোগীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের হেফাজতে রেখে বিক্রি করতেন।
তার প্রধান সহযোগী ফয়সাল বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। ছুটির দিনে বা অবসর সময়ে সুযোগ বুঝে ফয়সাল ওই গাড়িটিকে ব্যবহার করে এই চক্রের সঙ্গে মিলে মাদক চোরাচালান করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গাড়ির মালিকের ব্যবহৃত আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের স্টিকার ব্যবহার করে তিনি নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিপুল মাদকদ্রব্য আনা নেওয়া করতেন। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক পরিবহনের সময় পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি চৌকি থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিত।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, মূলহোতা মুকুল হোসেন গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি অবৈধ পথে সহজেই অধিক অর্থ উপার্জনের আশায় ২০১৬ সাল থেকে মাদক কারবারে যুক্ত হন। মাদক কারবারে জড়িত থাকায় চলতি বছর তিনি চাকরিচ্যুত হন। পরে চলতি বছরের জুন মাস থেকে নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমির খবরের গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি নেন। চাকরির পাশাপাশি তিনি পত্রিকার লগো ব্যবহার করে গাড়িতে মাদক চোরাচালান করতেন।
পরে তার বিরুদ্ধে এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাকে গত দুমাস আগে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হয়। চাকরিচ্যুত হওয়ার সময় তিনি লুকিয়ে দৈনিক মাতৃভূমির খবর পত্রিকার লগো সম্বলিত একটি বুম নিয়ে আসেন। যা ব্যবহার করে মাদকদ্রব্য বহনকারী গাড়ি চালানোর সময় সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিতেন। নারায়ণগঞ্জসহ কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৌশলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গাঁজা এনে তার তিন সহযোগীসহ মাদকের বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করেন।
এদিকে মূলহোতা মুকুল হোসেনের নামে ২০০৮ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর দায়ে একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত একাধিক মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে হাজতবাস করেছেন।
Leave a Reply