৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৬:৪৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
বিপ্লব নিয়োগী তন্ময় নবীনগর ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, নবীনগর উপজেলার থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে শান্ত কুমার রায় ওরফে সেলফি শান্ত ৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র নবীনগরের সলিমগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে ৩ কোটি এবং বাঞ্ছারামপুরের পাহাড়িয়াকান্দি, নরসিংদী, চট্রগ্রাম থেকে মোট ৫ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।শান্ত কুমার রায় (৩০)এর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত থানায় ১২ অভিযোগ জমা পড়েছে। নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, যে ১২টি অভিযোগ জমা পড়েছে তাতে ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা পাওয়ার দাবি করা হয়েছে তার কাছে।আপাতত এই তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে এসেছে।
কারোর কাছ থেকে জমি বিক্রি করা, সিগারেট ব্যবসা, স্বর্ণের ব্যবসায় ইনভেস্ট করার কথা বলে।বাটপার শান্ত মূলত বড় বড় নেতাদের সাথে সেলফি তুলে নিজেকে বড় নেতা দাবি করতেন। নেতাদের পিছনে টাকা খরচ করে নিজেকে বড় জাহির করতেন। অপর দিকে আড়াই কোটি টাকা নিয়ে ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজার মামুন লাপাত্তা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি উপজেলার জিনদপুর এলাকার। জিনদপুর বাজারে নূর টেলিকমের মালিক সৈয়দ ফয়েজ আহমেদ ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী। তার প্রতিষ্ঠানেই ম্যানেজার হিসাবে মামুন কাজ করতো।
চাকরির সুবাদে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে তার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।একাধারে কয়েক বছর চাকরি করে এলাকার সহজ সরল গ্রাহকদের লোভ দেখিয়ে তিনি জালিয়াতি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, যে অর্থের পরিমান আড়াই কোটির মতো হবে বলে এলাকাবাসী জানায়।
হরুয়া গ্রামের বাসিন্দা দিপংকর নামে এক প্রতিবন্ধী যুবক জানায়, তার বোনের বিয়েতে খরচ করবে ভেবে জমি বিক্রির ২ লাখ টাকা মামুনের হাতে দিয়ে জমার রশিদ গ্রহন করেন। পরবর্তীতে জানতে পারেন তার একাউন্ট ফাকা!
সরজমিন হরুয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শারিরীক প্রতিবন্ধি ওই যুবক মন খারাপ করে উঠোনের এক কোনায় মন খারাপ করে বসে আছেন।
তার সাথে কথা বলে জানা যায়,
শারিরীক প্রতিবন্ধী দীপংকর কর্মক্ষম হওয়ায় বাড়িতে থেকে একটি টংঘরে বিড়ি সিগারেট ও মোবাইলের রিচার্জ কার্ড বিক্রি করে কোন রকমে মা ও বোনকে নিয়ে টানাপোড়েনে দিন কাটিয়ে আসছে।
স্থানীয়রা জানায়,গ্রাহকদের সাথে সখ্যতা করে বেশী লাভের লোভ দেখিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা রাখার কথা বলতো সে। এভাবেই বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেগুলো গ্রাহকের একাউন্টে জমা না করেই নিজের কাছে রেখে দিতেন।
গ্রামের সহহ সরল গ্রাহক হাতে এক টুকরো রশিদ পেয়ে
নিশ্চিত হতেন টাকা নিরাপদ রয়েছে। সদা হাস্যোজ্জ্বল মামুনের প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে লাপাত্তার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্র জানায়, জিনদপুর ইউনিয়নের হরুয়া গ্রামের চান মিয়া ওরফে চাম্পার ছেলে মামুন। চালচলন ছিলো সাদাসিধা, সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখেই চলতো সে।
ভুক্তভোগী ইমরান আহমেদ বলেন, আমার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করা এবং ইজারার পার্টনার করার কথা বলে মামুন ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন। থানা থেকে জিম্মায় এসেই তিনি পালিয়ে গেছেন। তহিদুল ইসলাম তৃষা নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার কাছ থেকে এফডিআর বাবদ এক লাখ আর ডিপিএস বাবদ ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন। যিনি তাকে সন্দেহ করতেন, তখনই ওই লোকের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি করতেন।
আরেক ভুক্তভোগী ইকবাল হোসেন বলেন, আমার কাছ থেকে মামুন এফডিআর করার জন্য ২ লাখ টাকা এবং ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে ২ লাখ ২৮ হাজার নিয়েছে।
মামুনের খোজ নিতে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, খালি বাড়িতে তার মা বসে আছেন। মামুনের কথা জানতে চাইলে তিনি হাওমাও করে কাদতে থাকেন। এতো টাকা নিয়ে সে কি করেছে জানতে চাইলে মামুনের মা বলেন, মামুন ২০ শতক করে পৃথক ২ স্থানে ৪০ শতক জায়গা ক্রয় করেছেন।এর বাইরে আর কিছুই জানেন না তিনি।
এমকে জসিম নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক নেতার অভিমত,মামুন সারোয়ার বড়জোর এই চাকরি বা ইনকাম করে চার পাঁচ বছর হবে।
এর বেশি হবে না।
এরমধ্যে সে জায়গা জমি ক্রয় করা, বাড়িঘরে দালানকোঠা সহ অন্যান্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণ করছে।
এই টাকাগুলো সে পাইলো কই ?
এমন চিন্তা কি কোন মানুষ করেছেন ?
আমার জানামতে যারা এখন আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন তারা সবাই এই এলাকারই বাসিন্দা। এলাকার এতো এতো মানুষ সবাই কি বেখেয়ালি! একজনের চালচলনে হটাৎ পরিবর্তন চলে আসলো এই বিষয়টা কেউই আন্দাজ করতে পারলোনা।
Leave a Reply