৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৯:১৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:
সিরাজগঞ্জ কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় এমন খেলায় এখন মত্ত হয়ে উঠেছেন কিশোর-যুবকরা। শুধু কিশোর কিংবা যুব সমাজই নয় ক্ষেত্র বিশেষে বয়স্ক লোকেরাও জড়িয়ে পড়ছেন এমন বিধ্বংসী খেলার নেশায়। এতে যেমন সামাজিক অবক্ষয় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে তেমনি অর্থনৈতিকভাবেও অনেক পরিবার হচ্ছে সর্বশান্ত। সমাজ ও পরিবারে বাড়ছে অশান্তি, তাদেরই মধ্যে কয়েকজন ঘর বাড়ি ছেড়েছেন আর ফায়দা নিচ্ছে আব্দুল রহিম সরকার ও তার মেয়ের জামাই নিশাদ এজেন্ট।
দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে এ ধরণের জুয়ায় অংশগ্রহণ করেন জুয়াড়িরা। বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করেন তারা। সে সব এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ওয়ান এক্স বেটিং সাইট। এসব অ্যাপ রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পরিচালিত হয়ে থাকে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ‘এজেন্ট’ নামধারী দালাল চক্রের ব্যক্তিকে পরিশোধ করতে হয় দেশীয় টাকা। যে পরিমাণ টাকা এজেন্টকে পরিশোধ করা হবে সে অনুপাতে ক্রিপ্টো কারেন্সি দেয়া হবে জুয়াড়ি ব্যক্তিকে।
টাকাগুলো লেনদেন করতে সাধারণত ব্যবহার করা হয় বিকাশ, রকেট ও নগদ নামের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। তবে এ অঞ্চলে বিকাশের ব্যবহার হয় মাত্রাতিরিক্ত বেশি। এসব টাকার বেশির ভাগ অংশই চলে যায় যে দেশ থেকে অ্যাপটি পরিচালিত হয় সেই দেশে। এভাবেই অত্যাধুনিক ফর্মুলায় সকলের চোখের সামন দিয়েই প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশে। শুধু যে নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নেই এমন হচ্ছে তা কিন্তু নয়, সমস্ত দেশেরই একই অবস্থা। এমন কোনো খেলা নেই যা এই অ্যাপে খেলা যায় না।
কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কথিত সভাপতি আব্দুল রহিম সরকার ও তার মেয়ের জামাই নিশাদের নেতৃত্ব এই অনলাইন জুয়ার কারসাজি চলছে, নাটুয়ারপাড়ার বিভিন্ন পয়েন্ট ও খেলার মাঠে বসে এমন ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেন তরুণরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জুয়াড়ি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খেলি। হারতে হারতে জীবনটা বরবাদ করে ফেলেছি। একবার জিতলে একমাস দুইমাস যায় হারতে হারতে। এটা একটা নেশার মতো। এসব খেলায় কোনো লাভ নেই। নিঃস্ব হয়ে অনেকে ঘরবাড়ি এমনকি এলাকা ছাড়া হয়েছেন।
এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিগণরা দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ কে জানান, এই খেলার কারণে এলাকায় অনেক চুরি বেড়ে গেছে। একটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে সমাজ। এ থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আমাদেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এই বিষয়ে কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম দৈনিক সবুজ বাংলাদেশকে বলেন, এটা এমন একটি খেলা যা জুয়াড়িরা মোবাইলে খেলে থাকেন। দেখে বুঝার উপায় নাই, তবে আমরা বসে নেই। প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহার করে আমাদের অভিজ্ঞ টিম মাঠে কাজ করছে।
Leave a Reply