৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৮:৩৫ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
ভয়ংকর দুর্ধর্ষ চরিত্রহীন লম্পটের চরিতার্থের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন স্বামী স্ত্রী উভয়। লোমহর্ষক এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে খুলনা জেলার রুপসা থানার আইজগাতী ইউনিয়নে।ঘটনার খলনায়ক চরিত্রহীন নারীলোভী এই লম্পটের নাম খুরশীদ আলম (৩৫) পিতা তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা ওরফে (নাটা তোফা মোল্লা) সাং দেয়াড়া উপজেলা রূপসা জেলা খুলনা। এই তোফা মোল্লা ও তার পরিবার এলাকায় অনেকের জায়গা জমি অবৈধ ভাবে ভোগ দখল করে বনে গেছেন প্রতিপত্তি ও বৃত্তশালী অবস্থাসম্পন্ন। এদিকে দৈনন্দিন দিনাতিপাত জীবনযাপন করা একই এলাকার মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মুক্তার স্বামী সরলমনা সাদামাটা কামরুল হোসেন (৫০) পিতা মৃত আলী হোসেন সাং দেয়াড়া উপজেলা রূপসা জেলা খুলনা। কোন মতে জীবন জীবিকার তাগিদে যা আয় করে তা দিয়েই জীবন যুদ্ধের সংগ্রাম করে কোনোমতে তাদের সংসার চলে যাচ্ছিলো। এর মধ্যে কামরুল ও মুক্তার সংসারে দুটি কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। বড় মেয়ের নাম কারিমা, এবং ছোট মেয়ের নাম কাইফা। কিন্তু বেশিদিন আর টিকলো না তাদের সুখ শান্তির পরিবার । শয়তান কালো মেঘের মতো কামরুল ও মুক্তার পরিবারে হানা দিয়ে কালো থাবা বসিয়ে দিল, শয়তানের প্রেতাত্মা লম্পট খুরশীদ। এই নর পিশাশের নজর পড়লো কামরুলের স্ত্রী মুক্তার উপর।অভাব অনটনের সংসারে কামরুলের স্ত্রী মুক্তাকে ফুসলিয়ে বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখিয়ে দুর্বলতার সুযোগ নেয় খুরশীদ । লম্পট চরিত্রের খুরশীদ বিভিন্ন রকম তালবাহানা ও প্রণয়ের মাধ্যমে একসময় কামরুলের স্ত্রী মুক্তার সহিত অবৈধভাবে শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মুক্তা (৩৮) তার পিতা জলিলমুন্সি,গ্রাম-পিঙগেড়িয়াসাইনবোর্ড বাগেরহাট। কামরুল হরহামেশা তাদের অনৈতিক চলাফেরা মেলামেশা বুঝতে পেরে উভয়ের ব্যাপারে প্রতিবাদ জানায়। এটাই তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায় কামরুল ও কামরুলের আত্নীয় -স্বজন ব্যাপারটা জেনে ফেললে কামরুলের প্রতিবাদের কারণে তাকে শারীরিক বেদম প্রহার ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এই লম্পট খুরশীদ।মানুষরূপী নরপশু খুরশীদের বিভিন্ন রকমের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে কামরুল গুরুতর অসুস্থ হয়ে একসময় মৃত্যুবরণ করে। কামরুলের মেয়ে দুটির বয়স তখন ৮ ও ১০ বছর হবে। একটি পরিবারকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়ে পিশাশ খুরশীদ গোপনে একটি বাসা ভাড়া নেয় খুলনা শহরের ময়ূর ব্রিজের পাশে আরাফাত প্রকল্প আরাফাত মসজিদের পাশে মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি। চতুর খুরশীদ এমন এক জায়গায় বাসা ভাড়া নেয় যেখানে সচরাচর কেউ কোন টু শব্দ বা প্রতিবাদ করতে পারবে না। যে বাড়িতে খুরশীদ বাসা ভারা নেয় ওই বাড়িওয়ালা মোস্তাফিজুর রহমান উচ্চ পদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তার সহকারি। সেখানে কারণে বা অকারণে কৌতূহলী কেউ আর ওই বাসায় ঠিকানায় যেতে সাহস করে না। যেহেতু খুরশিদ এই ঠিকানাটা গোপন রেখেছে সেহেতু আত্মীয়-স্বজন ঠিকানার হদিস মেলে না। এভাবে কেটে গেল প্রায় নয় বছর। মুখোশধারী পিশাশ খুরশীদ নিজেকে অবিবাহিত বলে দাবী করে। কিন্তু বাড়িওয়ালা জানে যে তারা স্বামী -স্ত্রী। কেউ খুরশীদকে জিজ্ঞেস করলে বলে নাবালিকা মেয়ে দু’টি অসহায়, তাই আমি তাদের একটু আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করি! এভাবেই চলতে থাকে খুশিদের বেহায়াপনা। হঠাৎ গত মার্চ মাসে অজ্ঞাত কারণে আকস্মিকভাবে মুক্তা খাতুন ওই বাসাতে মারা যায়। মারা যাওয়ার পর নিকট আত্মীয়দের কাউকে না জানিয়ে খুরশিদ দ্রুত লাশ বাগেরহাট মুক্তার বাবার বাড়ি নিয়ে দাফন করে দেয়। তথ্যমতে মুক্তার বাবা বেঁচে নেই। মুক্তার ভাই আপত্তি করেছিল যে,কি কারনে আমার বোন মারা গেল তার পোস্টমর্টেম না করে আমার বোনকে দাফন করবো না। কিন্তু ধূর্ত খুরশিদ যে কোনো ভাবে মুক্তার ভাই বা তার পরিবারের যারা আছে তাদের ম্যানেজ করে লাশ দ্রুত দাফন করে ফেলে। পশুরুপী ভয়ংকর খুরশীদ মেয়ে দুটির মায়ের মৃত্যুর কারণ কাউকে না জানাতে তাদের মুখও বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করেছে। এই নরপশু খুরশিদ যখন সবকিছুর ব্যবস্থা প্রায় করেই ফেলেছিল, তখন বিষয়টি অন্য জায়গায় প্যাচ লাগে।খুরশিদের কাবাবে হাড্ডি হয়ে মৃত কামরুলের ছোট ভাই রবিউল বিষয়টি কোনভাবে মেনে নিতে পারেনি। রবিউল তীব্র প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়ায়। যেহেতু তার ভাইকে চোখের সামনেই মারা যেতে দেখেছে, এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী একটি ষড়যন্ত্রের জালে ফেঁসে চক্রান্তের শিকার হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। তার প্রতিবাদী বক্তব্য তার ভাইয়ের স্ত্রী কে মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ মারা যাওয়ার পূর্বের রাতে বাসায় একজন কোয়াক হাতুরে ডাক্তার ডেকে এনে অসুস্থতার কথা বলে মুক্তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। এবং সকালেই মুক্তার মৃত্যু ঘটে। রবিউলের বক্তব্য, এ সময় মুক্তা প্রেগন্যান্ট হয়েছিল। তাই লম্পট খুরশিদ তার আসল চরিত্র ঢাকতে নিজেকে বাঁচানোর জন্য তাকে হত্যা করেছে। ভয়ংকর লোমহর্ষক এই ঘটনার খলনায়ক খুরশিদ নিজেকে নর্দান ইউনিভারসিটি থেকে ল পাশ করেছে বলে দাবী করে।এলাকার সকলকে নিজের পরিচয় দেয় সে একজন আইনজীবি। কিন্তু অত্র এলাকার অনেকে তাকে টাউট মনে করে। কুর্নিশকালেও কেউ তাকে কখনো আইনজীবী হিসেবে কর্মরত হিসাবে দেখতে পায়নি। সে অত্যন্ত জোচ্চর প্রতারক, মিথ্যাবাদী,লোভী এবং দুশ্চরিত্র হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে তাকে সম্পৃক্ত থাকতে দেখেছে বলে ওখানকার জনসাধারন যানায়। মৃত কামরুলের ভাই রবিউল নিরুপায় হয়ে তার ভাতিজি দুটোকে হাজির করে ঘটনার বিবরণ এবং মুক্তার মৃত্যুর রহস্য জানানোর জন্য দুই মাস আগে রুপসা থানার অন্তর্গত আইচগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন করে।ওই আবেদনে মৃত কামরুলের ভাই রবিউল মুখোশধারী খুরশীদকে বিবাদী করে। তার মুখোশ উন্মোচন করার জন্য।ওইদিন থলের কালো বিড়াল বেরিয়ে আসবে ভেবে খুরশিদ বিষয়টি জানতে পেরে বেলফুলিয়া ইসলামিয়া হাই স্কুলের একজন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে আইচগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ করে। তখন চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে জানায়, যেহেতু বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের এখতিয়ার বহির্ভূত, সেহেতু বিষয়টি এখানে শুনানি হবে না। আবেদনকারী অর্থাৎ মৃত কামরুলের ভাই রবিউলকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট আবেদন করে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পরিষদ থেকে বলা হয়। খুরশিদ চেয়ারম্যানের কথায় আশ্বস্ত হতে না পেরে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। নিজের পেশী শক্তি ওস্বার্থন্বেষী মহলকে ব্যবহার করে করে জুতা চাটা চামচার মত স্থানীয় এমপির ছত্র-ছায়ায় বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে মৃত কামরুলের ছোট ভাই রবিউল আর্তনাদ করে এখনও তার ভাবীর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রবিউলের বক্তব্য হলো- আমিতো ভাই ভাবিকে আর ফিরে পাবো না,আমার দুটি ভাতিজিকে যে অপরাধীর কারণে পিতা-মাতা হারা হতে হয়েছে তবে কি এর প্রকৃত ঘটনার বিচার দেখে যেতে পারবো না? অপরাধী কি তার অপরাধের শাস্তি পাবে না? আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি এর সঠিক তদন্ত করে বিচার করবে না? দেশের সুশীল সমাজ সহ সকলের প্রতি আমার নিবেদন আমি যেন আমার ভাই ও ভাবীর সঠিক বিচার পাই। এটা কি রবিউলের অন্যায় আবদার? দেশে আইন থাকা সত্ত্বেও খুরশীদের মত অপরাধীরা এভাবেই বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াবে? আমার ভাতিজি দুটির কি এমন অপরাধ তারা তার বাবা-মায়ের আদর ভালবাসা থেকে কেন বঞ্চিত হলো? আমার এ সকল প্রশ্নের সঠিক জবাব কোথায়? এবং কার কাছে গেলে পাব? চোখের সামনে ভাইয়ের মৃত্যু, ভাবির অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু, ভাতিজিরা বাবা-মা হারা, এর দায়ভার কে নিবে? সকল বিষয়ের বিচার যদি নিজের চোখে দেখে মরতে পারি তবেই আমার আত্মা শান্তি পাবে।
Leave a Reply