৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৬:১৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নীলফামারী প্রতিনিধি:
সামাজিক দায়বদ্ধতায় থেকে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অগ্রগতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে তরুণেরা। এসব তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের দেশের উত্তর প্রান্তের নীলফামারীর সন্তান আব্দুল মোমিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সোনার বাংলা বিনির্মানে একজন সৈনিক হিসাবে কাজ করাই যেন স্বপ্ন ছিলো, প্রবল ইচ্ছে ছিলো সমাজের জন্য কিছু করা। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনের সাথে সাফল্যের সাথে কাজ করে। স্বপ্ন দেখেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভিত্তিক নিজেই একটি সামাজিক উন্নয়ন মূলক সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। সেই লক্ষ থেকে ২০১৪ সালে স্ব-উদ্যোগে গড়ে তোলেন কয়েকজন উদীয়মান যুবকদের নিয়ে দ্বীপ্তমান যুব উন্নয়ন সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটি গঠন করার পর সবাই আগ্রহের সাথে পাশে থাকলেও
কিছুদিনের মধ্যে অনেকেই দূরে চলে যায়। নিজের জমানো অর্থ ও সুধীজনের দান অনুদানে প্রতিষ্ঠানটি সামজিক উন্নয়ন মূলক কাজ করে যায়৷ বরাবরই আর্থিক কারনে থেমে যেতে চায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম তবে সকল প্রতিকূলতা পেরিয়ে কাজ করে যেতে চান সমাজের জন্য। যে বয়সে বন্ধুবান্ধবের সাথে সময় কাটানো মুহুর্ত সেই বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি দ্বায়িত্ব নিয়েছিলেন সমাজ গঠনের কাজ। সমাজ গঠনের জন্য কিছু করতে পাড়াই যেন জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। সমাজের অনেকেই সাধুবাদ জানালেও।কিছু মানুষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পিছুপা হয় নাই। অদম্য সাহসী যুব সংগঠক ও উদ্যোক্তা আব্দুল মোমিন কে মানসিকক ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে নাই। তিনি মনে করেন সমাজ উন্নয়নের একজন সৈনিক হিসাবে যত প্রতিবন্ধকতা থাকুক না কেন আমি সাধ্য মতো কাজ করে যাবো।
আব্দুল মোমিনের হাতে গড়া ২০১৪ সালে সমাজিক উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠান দ্বীপ্তমান যুব উন্নয়ন সংস্থা ২০১৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন অর্জন করে। দ্বীপ্তমান যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্টালগ্ন থেকে প্রতিষ্টাতা সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করে আব্দুল মোমিন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত এই শ্লোগানকে ধারণ করে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রতিরোধ, নারী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবা, প্রতিভা বিকশিত সমাজব্যবস্থা, পাখি, পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষা, শোষণ, দারিদ্র্য, দুর্নীতি মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলার গঠনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও ইভটিজিং প্রতিরোধে আলোচনা সভার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সফল ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে অর্ধশতাধিক। কারগরি ও আর্থিক ভাবে আইনি সহায়তা প্রদান করেছে নির্যাতিত অসহায় নারীদের। নীলফামারীতে শব্দ দূষণ রোধে যখন সবাই নিরব ভূমিকায় তখন আব্দুল মোমিনের নেতৃত্বেই পরিবেশ রক্ষায় শব্দ দূষণ রোধে সমাজিক আন্দোলনের কর্মসূচি জেলা ও উপজেলায় করে। শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব ও আমাদের করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা, লিফলেট বিতরণ ও শব্দ দূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মানববন্ধনের মাধ্যমে যুবকদের নিয়ে শব্দ দূষণ রোধে আইন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণী রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চারা ও বীজ বিতরণ এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে জেলায় বৃক্ষ রোপনের ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করেছে। এই অদম্য সফল যুব সংগঠকের নেতৃত্বে মানববন্ধন, লিফলেট বিতরণ, প্রচারণা এবং জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী আলোচনা সভা করেছে। শতাধিক তরুন যুবক সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মাদকদ্রব্য পরিহার করে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। মাদক প্রতিরোধে সামনের কাতারে থেকে প্রতিহত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। সারাদেশের ন্যায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী আলোচনা সভার মাধ্যমে জেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। করোনায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ৫ হাজার সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরন ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করেছে। স্কুল ও কলেজে ভর্তির জন্য আর্থিক সহযোগিতা, ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা, ফরম ফিলাপের আর্থিক সহায়তা করে যাচ্ছে, রয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রে নানামুখী অবদান। এই যুব সংগঠক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রতিভা বিকশিত সমাজ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ের বেকার যুবক ও যুব নারীদের স্বনির্ভর করার অংশ হিসেবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বেকার যুবকদের গরু মোটাতাজা করন ও হাঁস-মুরগি প্রশিক্ষণ সহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে সফলতার সাথে। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে বেকার যুবক ও যুব নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রেখেছে। অনেক বেকার যুবক হয়েছে স্বাবলম্বী। নীলফামারীর স্থানীয় উদ্যোক্তা তৈরীর জন্য উৎপাদনশীলতা বিষয়ক কর্মশালা ও ৫ দিন ব্যাপি পাটজাত পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরী করেছেন। দিয়ে যাচ্ছেন উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য পরামর্শ, প্রতিটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে পাশে থেকে উৎসাহ প্রদান করে যাচ্ছেন। শীতে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়াদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, করোনায় ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতা, এতিম শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরন করেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন উপলক্ষে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ, জাতীয় সমাজসেবা দিবস, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস, জাতীয় যুব দিবস, বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে স্বাধীনতা অম্লানে শ্রদাঞ্জলি অর্পণ করে থাকেন। শান্তির পথে তরুণদের অংশীদারিত্ব বাড়াতে অগ্রগতির মশাল হাতে যুবকদের প্রতিনিধি হয়ে মানবতার কল্যাণে আমৃত্যু কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে গড়তে চান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত আগামীর সোনার বাংলা। তার এই কাজে সহযোগিতা এবং সবসময় পাশে যারা প্রেরণা যুগিয়েছেন, তাদের সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তার লালিত স্বপ্ন আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যেমন সফলতার সাথে কাজ করেছে, তেমনি একজন তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবেও নিজের জায়গা তৈরী করে নিয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, সাভারে ‘স্মল বিজনেস এন্ড এন্টারসিপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ‘বিষয়ে এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন(বিসিক) নীলফামারীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে গড়ে তুলেছেন উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান, উৎপাদন হচ্ছে কলম, খাতা, জুতা ও স্যান্ডেল। উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে অনেক বেকার যুবকের। বাজারে রয়েছে এ পণ্যের ব্যাপক চাহিদা। অদম এই তরুণ উদ্যোক্তা ও যুব সংগঠক আব্দুল মোমিনের হাত ধরে সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে উঠেছেন অনেকেই। তিনি নিজে যেমন কাজ করে যাচ্ছেন তেমনি অন্যান্য উদীয়মান প্রজন্মের যারা আছে তাদের সম্পৃক্ত করতে চান আগামীর নীলফামারী গঠনের জন্য। ২০২৩ সালের প্রথম থেকে তিনি কাজ শুরু করেছেন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে, আমার চোখে আগামীর নীলফামারী। যার মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনাময়ের দিকে ধাপিত হবে নীলফামারী জেলা।
Leave a Reply