৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৬:৪৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
চট্টগ্রাম অফিসঃ
চট্টগ্রামের কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে যাত্রী হয়রানি, ২৮ জুন গ্রেফতার হওয়া ৯ যাত্রীর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং ঘাটের অনিয়ম- দুর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন ও সন্দ্বীপ নাবিক নামের দুটি সংগঠন।
আজ শুক্রবার (৩০জুন) সকাল ১০ টায় সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক পুষ্পেন্দু মজুমদারের উপস্থাপনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলেগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সভাপতি হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি, সন্দ্বীপ নাবিক এর আহবায়ক মো. সোহেল, সাংবাদিক চারু মিল্লাত ও সমাজকর্মী মো. সাইফ। মানববন্ধনে সন্দ্বীপের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামীলেগের সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রামের কুমিরা- গুপ্তছড়া নৌরুটে কতিপয় সিন্ডিকেট, সন্ত্রাসী, রক্তপিপাসুরা সন্দ্বীপের মানুষকে মানুষ বলে গণ্য করে না। বিআইডব্লিওটিএ-জেলা পরিষদের দ্বন্দ, মামলার নামে ধোকাবাজি মূলত ইজারাদারের পকেট ভারি করার কৌশল। এই ঘাটে বারবার নিরীহ যাত্রীদের হত্যা করা হলেও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কোন পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। অথচ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাধারন যাত্রীরা প্রতিবাদ করায় ৯ জনকে মিথ্যা মমলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের আটক ও নির্যাতন করা হয়েছে তারা সন্দ্বীপের গর্বিত সন্তান।’
সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলনের সভাপতি হাসানুজ্জামান সন্দ্বীপি বলেন, ‘কুমিরা ঘাটের ঘটনায় ৯ জন সাধারন যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার প্ররোচনা দিয়েছে ঘাটের কর্মচারিরা। তারেক নামের এক কর্মচারি কর্তৃক সাধারন এক যাত্রীকে নির্যাতনের ছবি সবাই দেখেছেন। অবিলম্বে তাকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করতে হবে। যাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে সরাসরি প্রতিবেদন দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
সন্দ্বীপ নাবিক এর আহবায়ক মো. সোহেল বলেন, ‘কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাটে প্রতিদিন যাত্রীদের হয়রানি, লাঞ্ছিত করা হয়। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরা, ব্ল্যাকে টিকেট বিক্রি হয়। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় ৯ জন সাধারন যাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
সাংবাদিক চারু মিল্লাত বলেন, ‘সন্দ্বীপের মানুষকে এই যুগেও কোমরপানিতে ভিজে, অনেকক লাঞ্ছনা ভোগ করে সন্দ্বীপ আসতে হয়। পাশের ভাসানচরে রোহিঙ্গারা নৌপথে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, অথচ বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও সন্দ্বীপবাসী নিরাপদ নৌ যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এই দূর্ভোগ ইচ্ছাকৃতভাবে সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। এই দূর্ভোগ লাঘব হলে রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কমিশন বন্ধ হয়ে যাবে, বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে।’
সমাজকর্মী মো. সাইফ বলেন, ‘কুমিরা- গুপ্তছড়া ঘাটের ইজারাদারের গুন্ডাবাহিনী সাধারন যাত্রীদের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। যাত্রীদের মারধর করে রক্ত ঝরিয়েছে। গাড়ির ভেতর জিম্মি করে ছুরি দেখিয়ে হত্যার চেস্টা করেছে। মোবাইল, মানিব্যাগ চুরি করে নিয়ে গেছে। ৯ জন যাত্রীকে আটক করে তাদের ঈদের নামাজ পড়তে দেওয়া হয়নি।’
বুধবার (২৮ জুন) চট্টগ্রামের সিতাকুন্ড উপজেলার কুমিরা ঘাটে সন্দ্বীপগামী যাত্রী ও ঘাট কর্তৃপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় ঘাট কর্তৃপক্ষের লোকজন ৯ জনকে আটক ও মারধর করে সিতাকুন্ড থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা নৌঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভবন ভাঙচুর করার ঘটনায় বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক নয়ন শীল বাদী হয়ে সিতাকুন্ড থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭০ জনকে আসামি করা হয়। বৃহঃপতিবার বিকেল ৫ টায় জামিনে মুক্ত হন তারা।
Leave a Reply