৩০শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ১:৪৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার॥
রাজধানীর হাতিরঝিল থানার হাজত থেকে উদ্ধার হওয়া সুমন শেখের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মরদেহ সরাসরি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে পুলিশ চাপ দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুমনের পরিবার মরদেহ গ্রহণে আপত্তি জানিয়েছে। তারা এ বিষয়ে মামলা করতে আদালতে গেছেন।
আজ রোববার দুপুর ১ টা ৪০ মিনিটে এ প্রতিবেদন লেখার সময় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়া মরদেহটি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে ছিল। আর নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনরা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে ঢাকার আদালতে গেছেন বলে জানা গেছে।
মরদেহ সরাসরি বাড়ি নিয়ে যেতে চাপ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ। তিনি কাছে দাবি করেন, মরদেহ নিয়ে যেতে পুলিশের পক্ষ থেকে সুমন শেখের পরিবারকে একাধিকবার বলা হয়েছে।’
পুলিশ বলছে, স্বজনরা মরদেহ না নিলে সরকারি নিয়ম মোতাবেক আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের (বেওয়ারিশ লাশ দাফনকারী বেসরকারি সেবাধর্মী সংস্থা) মাধ্যমে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
নিহত সুমন শেখের বাবা পেয়ার আলীর সাথে তার কর্মস্থল রামপুরা ওয়াপদা রোডের মক্কা ডেকোরেটরে এ প্রতিবেদকের কথা হয় আজ। পুলিশের ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত পেয়ার আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, পুলিশের সাথে পারব? ছেলেটাকে ধরে নিয়ে এভাবে মেরে ফেলল, আল্লাহ বিচার করবে।’
পেয়ার আলী বলেন, ‘পুলিশ মর্গ থেকে লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে। আমরা বলেছিলাম রামপুরায় আনবো, ঢাকায় দাফন করব। রামপুরায় আনলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করতে পারে তাই পুলিশ আনতে দিচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুত্রবধূ (নিহতের স্ত্রী) স্থানীয় কয়েকজন লোককে নিয়ে কোর্টে গেছেন মামলা করতে। তারা ফিরলে লাশ আনার বিষয়ে করণীয় ঠিক হবে।’
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ সূত্র জানায়, শনিবার বিকালে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্নের কথা উল্লেখ করেনি।’
স্বজনদের প্রশ্ন, পুলিশ তো বাসা থেকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পেটাতে পেটাতে থানায় নিয়ে যায় সুমনকে। থানায়ও নির্যাতন করা হয় ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পেটানোর সেই দাগগুলো কোথায় গেল।
নিহত সুমন মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতনে রামপুরায় ইউনিলিভারের পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র ‘পিউরইট’ বিপণন অফিসে কর্মরত ছিলেন। পুলিশের দাবি, ওই অফিসের পক্ষ থেকে দায়ের করা ৫৩ লাখ টাকা চুরির মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার রাত ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন থানার হাজতখানায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে সুমনের পরিবার বলছে, সুমন ভোররাতে ‘আত্মহত্যা’ করলেও পুলিশ শনিবার বিকালে তাদের খবর দেয়।
সুমন রাজধানীর পূর্ব রামপুরায় ৬ বছর বয়সী সন্তান রাকিব ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার দক্ষিণকান্দি গ্রামে।
Leave a Reply