৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৫:৪৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
বিশেষ প্রতিবেদক:
ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর যেন পরিণত হয়েছে এক ঝাক আওয়ামীলীগ পান্ডাদের ভক্তের মেলায়। অধিদপ্তরে অনেকেই প্রায় এক যুগ ধরে চেয়ার আঁকড়ে ধরে আছেন। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পুরো আমল জুড়ে এসব কর্মকর্তারা ঢাকা ও আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল থেকে ফয়দা লুটেছেন। এসব কর্মকর্তাদের অনেকের সাথেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সচিবের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক।
সূত্র জানায়, স্বৈরাচার সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি অংশ এসব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌঁছে যেত সাবেক সচিব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পকেটে। কেউ কেউ সচিবের বাসায় বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে বলেও জানা গেছে।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভক্তবৃন্দের মেলায় দিনকে দিন অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর। শোনা যাচ্ছে, কোন এক অদৃশ্য পক্ষের নির্দেশে গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা। সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের অনেক দোসরদের সঙ্গে এসব কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত যোগসাজস রয়েছে বলে সূত্র থেকে জানা গেছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আনসার বিদ্রোহের মত ফায়ার সার্ভিসেও বড় ধরনের একটি তুলকালাম’ ঘটাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন অধিদপ্তরের কিছু বিপদগামী কর্মকর্তা। তাদের সাথে জড়িত রয়েছেন আজ্ঞাবহ কয়েকজন ছোট কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমল সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে ডিরেক্টর অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তাজুল ইসলাম, ডিডি সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ডিডি আখতারুজ্জামান অন্যতম। তাদের ষড়যন্ত্র বিস্তারে ফুট ফরমায়েশ করছেন একাধিক ফায়ার ফাইটার সহ দুইজন ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর। তাদের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস এর মত সুশৃংখল একটি বাহিনীতে আনসার বিদ্রোহের মত পরিস্থিতি তৈরি করতে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বিশ্বস্ত সূত্র।
ইতিমধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের ভেতরে বিভিন্ন ভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এসবের সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের সময় মধু খাওয়া সুধিধাবাদী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দোসর দীর্ঘদিন ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চাকরি করা এই কর্মকর্তারা।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (ডিএডি ঢাকা এডি ঢাকা এবং সর্বশেষ ডিডি ঢাকা) সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এডি ওয়ার হাউস মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং ডিরেক্টর অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তাজুল ইসলাম। ডিডি আখতারুজ্জামান।
সূত্র জানায়, এরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ভিতর তীব্র অসন্তোষ তৈরির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়েছেন। পাশাপাশি এক্সটিংগুইশার ব্যবসায়ী ফায়ার ফাইটার হান্নান এবং সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার রেজায়ে রাব্বিকে বেছে নিয়েছে।
মহাপরিচালক ফায়ার এবং ফায়ার সার্ভিস এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা করেন যা আনসার বাহিনীর মতো বিদ্রোহের প্রথম ধাপ হিসাবে মনে করছেন উক্ত সেক্টরে সংশ্লিষ্টরা।
ফায়ার সার্ভিসের মত সেবামূলক একটা সুশৃংখল বাহিনীর বিরুদ্ধে কিভাবে ‘চেইন অফ কমান্ড’ ভঙ্গ করে সংবাদ সম্মেলন করার বিষয়টা বিদ্রোহ পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসাবে মনে করছেন অনেকেই।
এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে অবশ্যই আওয়ামী লীগের কোন অদৃশ্য রাঘব বোয়ালরা ইন্ধন দিতে গোপনে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের একজন বিভাগীয় প্রধান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এমন বিদ্রোহ পরিকল্পনা যদি হয়েও থাকে সেটা যেন বাস্তবায়ন না করতে পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই কৌশলী হওয়া উচিত। পাশাপশি পরিকল্পনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুদ্দিন আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে একাধিক সূত্র থেকে এমন গুঞ্জন রয়েছে। তবে এসব নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ফায়ার সার্ভিস রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক সুশৃংখল প্রতিষ্ঠান। এখানে কোন দুষ্কৃতিকারীর প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
Leave a Reply