১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৪:২০ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
মোহাম্মদ মাসুদ :
ডিবি প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে হঠাৎ করেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঘিরে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। অথচ এই গ্রেফতারের নির্দেশ এসেছিল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই—প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরী, আইজিপি এবং ডিএমপি কমিশনারের তরফ থেকে। তাহলে এখন প্রশ্ন ওঠে, বলির পাঁঠা হচ্ছেন কেন একজন সৎ, দক্ষ ও পরিশ্রমী পুলিশ কর্মকর্তা?
রেজাউল করিম মল্লিক দায়িত্ব নেওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভেঙে পড়া ইউনিটকে নতুনভাবে গুছিয়ে তোলেন। তিনি প্রচারের আলোতে আসেননি, প্রেস ব্রিফিং বা মিডিয়া নাটকের আশ্রয় নেননি। হারুন-যুগের ‘ভাতের হোটেল’ সংস্কৃতির বাইরে থেকে কাজ করেছেন। অথচ এমন একজন কর্মকর্তাকেই সরিয়ে দেওয়া হলো, যাকে পুলিশ বিভাগের অনেকেই জনপ্রিয়, ভদ্র এবং পেশাদার অফিসার হিসেবে চেনেন।
সরকারি উপদেষ্টাদের কেউ কেউ এখন বলছেন, মেঘনা আলমের গ্রেফতার প্রক্রিয়া ছিল ত্রুটিপূর্ণ। যদি সত্যিই তা হয়ে থাকে, তাহলে ডিবির সংশ্লিষ্ট ইউনিট বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যেত। কিন্তু গোটা দায় একজন ইউনিটপ্রধানের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রশ্ন উঠছে—এই সিদ্ধান্ত কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?
যদি পুলিশের অভ্যন্তরে কর্মঠ, নির্লোভ কর্মকর্তারা এভাবেই বলি হন, তাহলে গোটা বাহিনীর মনোবলই শুধু নয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার গোড়াতেই ফাটল ধরবে। একজন কর্মকর্তাকে তার কাজের স্বীকৃতির বদলে রাজনৈতিক চাপে সরিয়ে দেওয়া হলে, পরবর্তী অফিসাররা কতটা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, তা ভাববার বিষয়।
এই সিদ্ধান্তটি কেবল একজন ব্যক্তিকে অপদস্থ করার নয়, বরং গোটা প্রশাসনিক শৃঙ্খলার ওপর এক প্রকার প্রশ্নচিহ্ন। তাই আমরা মনে করি, রেজাউল করিম মল্লিকের অপসারণের ঘটনাটি খতিয়ে দেখা উচিত এবং ভবিষ্যতে এমন পদক্ষেপের ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীলতা ও স্বচ্ছতা থাকা বাঞ্ছনীয়।
লেখক :
সম্পাদক ও প্রকাশক
দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ
Leave a Reply