১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৯:১৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক: বোপমার সাবেক সভাপতি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে বোপমার সভাপতি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা গ্রহণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক (২০১৮) তাকে ব্যক্তিগতভাবে, মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে এ সকল গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি তা অগ্রাহ্য করে উল্টো তাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন। সূত্র জানায়, আব্দুস সালাম বোপমার অর্থ-ব্যায়ের কোন হিসাব বুঝিয়ে না দিয়ে, ইসি মিটিং-এর কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও সাহায্য করেনি। এছাড়া রাষ্ট্র থেকে প্রাপ্ত অর্থ সংগঠনের কোন কাজে না লাগিয়ে নিজে আত্মস্যাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছা্ড়া তিনি সাবেক ট্রেজারার এর স্বাক্ষর জ্বাল করে নিজে টাকা তুলে, ভুল তথ্য দিয়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বিভ্রান্ত করেছেন। এফবিসিআই তাকে বার বার নিষেধ করা সত্বেও বিভিন্ন অর্গানিক ব্যবসায়ী, চাষী ও ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন। তার প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে ২০০১৬ সালে এফবিসিসিআই থেকে বোপমার সদস্যপদ স্থগিত করে ও ২০১৮ সালে তৎকালিন এফবিসিসিআই এর মহাসচিব বানিজ্য সচিবকে তার দূর্ণীতির বিস্তরিত বিবরণ দিয়ে তার নামে আর কোন টিও লাইসেন্স না দেওয়ার অনুরোধ করে চিঠি লেখেন স্বারক নং: এফবিসিসিআই/এমএলএ/বাম-৪৩/১৮/২২৪. তাং- ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮।
অভিযোগ আছে অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার ব্রিগেডিয়ার আবু নাসের আলমগীর সাহেবের থেকে ১২০০,০০০/- বারো লক্ষ টাকা, মোহাম্মদ হারুন থেকে ২৮০০,০০০/- আটাশ লক্ষ টাকা, আকিজ গ্রুপ থেকে ৮০০,০০০/- আট লক্ষ টাকা, এসিআই থেকে ৬০০,০০০/- ছয় লক্ষ টাকা, কাজি এ্যান্ড কাজী টি থেকে ৬০০,০০০/- ছয় লক্ষ টাকা, বদরুল ইসলাম থেকে ৩০০,০০০/- তিন লক্ষ্ টাকা প্রিয়া এগ্রো, আল মারা্হ টি, আইটিভি২৪ডটকম, বিএল ইন্টারন্যাশনাল, ৩০০,০০০/- তরঙ্গ থেকে ২০০,০০০/-, জুলনরায় থেকে ৫০০,০০০/- খালেদ আমিন, সেবক এগ্রোভেট- গিয়াস উদ্দীন- জি এস এস এগ্রো প্রোডাক্টস, থেকে ১৮০০,০০০/- ঢাকা এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রি, মেঘা অর্গানিক বাংলাদেশ, অর্গানিক রেষ্টুরেন্ট, মোহম্মাদিয়া গ্রুপ লাবিব গ্রুপসহ ৫০/৬০ টি ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এ সকল আর্থিক অনিয়মের কথা জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামানের গুলশান থাকায় একটি সাধারণ ডায়েরী ও নথিভূক্ত করেন (ডায়েরী নং-১৬৩, তাং ০৩/০৮/২০১৯)
গত আগষ্ট/২০২১ সালে বোপমাকে বাঁচাতে এফবিসিসিআই-এর কাছে সংগঠনের সদস্যরা একটি চিঠি দেন, যেখানে আব্দুস সালামের সকল দুর্নিতী তুলে ধরা হয়। চিঠিতে এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস সালামের আজীবন সভাপতি থাকার ইচ্ছা এবং সেই সূত্রে স্বেচ্ছাচারিতার কথা তুলে ধরা হয়। সূত্র জানায়, বোপমা-র সদস্যরা আক্ষেপের সুরে জানায় আব্দুস সালামের খাম খেয়ালীর কারণে বোপমার কোন প্রজেক্ট সফল হতে পারছেনা।
সংগঠনের বর্তমান সদস্যদের কয়েকজন জানান, কেউ সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেই তাদের কাছে তিনি অনৈতিক অর্থ দাবী করেন, না পেলে সেই কমিটিকে তিনি অবৈধ বলে প্রচার করেন।
সালামের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বোপমা ২০০৮ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিবন্ধন লাভ করলেও এদীর্ঘ সময়ে একটি বারের জন্যে অডিট করা হয় নাই। অথচ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিপিসি থেকে প্রতি বৎসর বিভিন্ন ট্রেনিং ও সফরের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়ে থাকে। এসব অর্থের কোন হিসাবের প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি।
সালাম, সাধারণ ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি এফবিসিসিআই-এর নির্বাচন এলে প্রতিবার টাকার বিনিময়ে সদস্যপদ বিক্রয় করেন। এমনও অভিযোগ আছে যে যারা কোন ধরণের অর্গানিক ব্যবসার সাথে জরিত নয় এমনকি বোপমা’র সদস্যপদ ও নেই তাদেরকেও তিনি এফবিসিসিআই-এর সদস্যপদ বানিয়ে দিয়েছেন, ইতিপূর্বে আবু বকর সিদ্দীক, জাকিয়া সুলতানা, , নাহিদ পারভিন, সাহিদ উল্লাহ, সাইয়েদ সাইদুর রহমান ও অভি চৌধুরীকে মেোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এফিবিসিসিআই এর সদস্য করে যাদের কারো কোন অর্গানিক ব্যবসা নেই এমন কি তারা কখনো বোপমার সদস্যও না। শুধু তাই নয় ২০১৫-২০১৭ সালের নির্বাচনে জাকিয়া সুলতানা মিথিলা পরিচালক পদে নির্বাচন করতে জনাব সালাম নির্বাচনে এসোসিয়েশনের রেজুলেশন বাবদ ২০,০০,০০০/- বিশ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং নগদ ৫০০,০০০/- গ্রহণ করে।
এবারও সে প্রতি সদস্যের কাছে ৫০০,০০০/-টাকা করে দাবী করে দিতে অস্বিকার করাতে বোপমার নির্বাচিত বর্তমান এ কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতেছে।
তার সহায়তাকারী কামরুজ্জামান মৃধা, আদম পাচারকারী সাখওয়াত হোসেন ও অভি চৌধুরী্, ইতিমধ্যে কামরুজ্জামান মৃধা ৫০/৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছে। তাদের মধ্যে টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সমস্যা হলে পরষ্পর বহিষ্কার পাল্টা বহিষ্কারও করে। ২০১৬ সালে জনাব সালাম ১৩০০,০০০/- টাকার বনিমিয়ে বোপমা কামরুজ্জামান মৃধা কাছে বিক্রয় করে দেন যা অবৈধ ও অনৈতিক।
জনাব সালামের আর একটা পেশা কোন না কোন একটা বিষয় সামনে এনে ইউরোপ ও ধনি দেশ গুলোতে আদম পাচার করা। এর এ কাজে সরাসরি সহায়তা করেন গ্লোবাল ওয়াল্ড লি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখওয়াত হোসেন। অভিযোগ আছে ২০১৮ সালে ৬ জন, ২০১২, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯ সালে কয়েক বার অসংখ্য লোককে মোটা অংকের বিনিময়ে সে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করছে। আর এ কাজে বাধা দেওয়াতে সে সময়ের সকল সাধা্রণ সম্পাদকরা তার চক্ষুশুল।
আব্দুস সালামের অনিয়ম দূর্ণিতীতে অতীষ্ট হয়ে বোপমা’র সদস্যরা গত ২৫শে মে ২০১৭ ইসি পরিচালক (অতি: সচীব) বাণিজ্য সংগঠন, টিও শাখা-২, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তার অপসারণ চেয়ে একটি সুপারিশ পাঠায়। উক্ত সুপারিশে বোপমা’র সভাপতি আব্দুস সালামকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার আবেদন করা হয়।
উল্লেখ থাকে যে বাংলাদেশ অর্গানিক কৃষির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপদ খাবার সরবরাহ করার মহৎ উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় নীতিমালা তৈরী হয়েছে। ইতোমধ্যে এ সেক্টরে অনেক উদ্যোক্তা তৈরী হয়েছে। এসকল উদ্যোক্তাগণ একাজকে আরো গতিশীল করতে একটি সমষ্ঠিগত উদ্যোগের লক্ষ্যে বোপমার সদস্যভুক্ত হয়। এটি একটি জাতীয় ফোরাম, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন সম্ভাবনাময় অর্গানিক কৃষি খাতের সহিত জড়িত ব্যক্তিবর্গ এবং দেশ ও জাতির স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে সংগঠনের সাবেক সভাপতি মো: আব্দুস সালামের সকল দূর্নীতির ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে জাতি উপকৃত হইবে।
Leave a Reply