৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৯:৩৫ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার॥
ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গণপরিবহন সংকটকে পুঁজি করে সড়ক, রেল, নৌ-পথে ভাড়া ডাকাতি ও ইচ্ছেমতো যাত্রী হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
একইসঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে এমন ভাড়া নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল, নৌ-পথের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শুক্রবার (৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই অভিযোগ ও দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সিটি সার্ভিসের বাসের ভাড়া কোনো কোনো পথে ৫ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে সায়েদাবাদে ৫০ টাকার বাস ভাড়া ৩০০ টাকা নিতে দেখা গেছে। শ্যামলী থেকে গুলিস্থানে ৩০ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। টার্মিনাল কেন্দ্রিক নয় এমন পথে যাত্রী প্রতি ওঠা-নামা ভাড়া কোনো বাসে ৫০ টাকা আবার কোনো বাসে ১০০ টাকা আদায়ের নৈরাজ্য এখনো চলছে।
লেগুনার ভাড়া সম্পর্কে বিবৃতিতে বলা হয়, নগরীর প্রতিটি লেগুনা সার্ভিসের ভাড়া কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিনগুণ আদায় করা হচ্ছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলী ও সদরঘাট থেকে গুলিস্থান পথে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরত্বে লেগুনা ভাড়া ১৫ টাকা আদায় করা হলেও এখন কখনো ৩০ টাকা কখনো ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। একই চিত্র নগরীর সকল লেগুনা রুটে দেখা যাচ্ছে।
রিক্সা ভাড়া নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রিক্সা ভাড়া ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। সিএনজিচালিত অটোরিক্সা গুলশান, বনানী, বাড়িধারা থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াত করা গেলেও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই পথে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত সিএনজি অটোক্সিার ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দূরপাল্লার যাত্রাপথে ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-রাজশাহী, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি রুটে বিদ্যমান ভাড়া থেকে গন্তব্য ভেদে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা-কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি প্রতিটি রুটে এহেন ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এই চিত্র অব্যাহত আছে। পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে।
এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, দিনমজুর এ ধরনের স্বল্প আয়ের মানুষজনকে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে স্বল্প ভাড়ায় যেতে বাধ্য হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশালের বিভিন্ন নৌপথের ভাড়া কমানো হলেও এখন এই পথেও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে ঠেকেছে। আর রেলে টিকিট কালোবাজারি অনলাইনে টিকিট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে নির্ধারিত মূল্যের তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথেও এহেন ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে যাত্রী সাধারণ এখন দিশেহারা বলে জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে এই ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
Leave a Reply