৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৬:৪২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হয়েও অধরা সোহেল
মনিরুজ্জামান মনি :
জনগণের মৌলিক অধিকার বাসস্থান তৈরির নিমিত্তে এবং সরকারের পূত কাজ সম্পাদনের লক্ষ্যে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিতে ১৯৮৬ সালে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।বিভিন্ন পরিক্রমায় পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে গৃহায়ন ও গণপূত মন্ত্রণালয় নামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় ১৩ টি দপ্তর বা সংস্থা কাজ করে তার মধ্যে অন্যতম গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ । তাদের বিভিন্ন কাজের মধ্যে বিশেষ করে সরকারি স্থাপনা, নকশা, হাউজিং এটেস্ট বন্দোবস্ত অন্যতম। আর সেই বন্দোবস্ত কাজের ভিত্তিহীন নকশা বহির্ভুত স্থাপনা তৈরি নোটিশ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করে চলছেন মিরপুর গৃহায়নের অঘোষিত সম্রাট শেখ সোহেল ও রাদিউজ্জামান
রাজু ওরফে রাতুল গং।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,ক্যাসিনো দুর্নীতি সহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ মিরপুর বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ সোহেল রানা ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলী রাদিউজ্জামান রাজু ওরফে রাতুলের বিরুদ্ধে গত ২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বরের দুূুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত স্মারক নম্বর-০০০১.০০০০৫.০২.০১.১০১.১৯.২২৯৭৬
নোটিশ প্রদান করেন,কিন্তু রাজনৈতিক চাপে আজ অবধি অমিংমাংষিত রয়েছে দুদকের ফাইলটি তাই টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ।
ক্যাসিনো দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে গত কয়েকদিন আগে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকায়ও নিউজ প্রকাশিত হয় ।
সুএ জানায় দীর্ঘ সময় অতিক্রম হলেও কোন তদন্ত হয়নি শেখ সোহেল রানা ও রাদিউজ্জামান রাজুর অভিযোগের বিষয়ে । এক সময়ের আলোচিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার চাচা,শেখ কবিরের ডান হাত হিসেবে পরিচিত শেখ সোহেল রানা ও রাদিউজ্জামান রাজু ওরফে রাতুল সিন্ডিকেট ৫ তারিখের ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক বিজয়ের পর
খোলস পাল্টে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতার আত্মীয় পরিচয় চলা শুরু করেছেন ।
সাংবাদিকদের সামনেও স্বেচ্ছাসেবক দলের এক শীর্ষ নেতার পরিচয় দেন ।
শেখ সোহেল রানা ও রাদিউজ্জামান এর বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য এসেছে প্রতিবেদকের কাছে ।
তাদের আছে একাধিক বাড়ি, দামী গাড়ী,মার্কেট সহ সম্পদের তথ্য ।
এক সময়ের আলেচিত ক্যাসিনো দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। তাদের সিন্ডিকেট রাজধানীর মিরপুরে অবৈধভাবে নির্মিত বাড়ি,জমি জায়গা সংক্রান্ত বিষয় গুলো ধামাচাপা দিয়ে অথবা কাগজে সংশোধন করে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই চক্র।
অবৈধ স্বৈরশাসক আমলে মিরপুরের পল্লবী এলাকার ডি ব্লকের খেলার মাঠ, শহীদ মিনার ও অগ্রদূত সমাজকল্যাণ ও ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সংগঠন নামের জায়গায় হাউজিং এটেস্টে ১৫ এবং ১৬ নং প্লটটি ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভূমিদস্যু আব্দুল মান্নান শেখের নামের বরাদ্দ দিয়ে ছয় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে শেখ সোহেল ও রাজু গং, তেমনি ভাবে, মিরপুর ১ নম্বর ঈদগার মোড়ে জনৈক প্রবাসীর জমি, ভূমিধসু ও নেতা মান্নান শেখ কে বুঝিয়ে দিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা ।
যার সকল দায়ভার গড়িয়েছেন মিরপুর বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী জমাদ্দার তাবেদুন নবীর উপর, একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, (কল রেকর্ড সংরক্ষিত) সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী জমাদ্দার তাবেদুন নবী ছিলেন সহজ সরল, সাদাসিধা মানুষ । তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েই অদৃশ্য কারণে সোহেল,রাজু গং বহাল তবিয়তে আছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, সকল দোষ সোহেল ও রাজুর । নিজেদের দোষ ঢাকতে তারা সবাই মিলে একজন ভালো মানুষ তাবেদুন নবীকে ফাঁসিয়েছেন ।
জনশ্রুতি আছে একই ভাবে মিরপুরের টোলারবাগ এলাকায় ২৮ ডেসিমেল জায়গায় ১১ কোটি টাকায় সমাধান করেছেন, এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর পিছনে ২১ কাঠার জায়গা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনকে বুঝিয়ে দিয়ে তারা নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন সোহেল,রাজু গং ।
সর্বসাকুল্যে ৪০/৫০ হাজার টাকা বেতনে চাকুরী করে এতো টাকার সম্পদ গড়া, দামি গাড়িতে চলা, বাকী চাকুরী জীবনে সম্ভব নয় বলে অনেক কর্মকর্তা অভিমত প্রকাশ করেছেন। একজন কর্মকর্তা প্রশ্ন করে বলেন, তারা যে এত বিদেশ সফরে যায় কোনদিন কি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে গেছেন ? আপনারা একটু খবর নিয়ে দেখতে পারেন ।
মিরপুর,আদাবর,ঢাকা শহরে রয়েছে নামে ও বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।জনশ্রুতি আছে ৬০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দুদকের ফাইলটি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিগত সরকারের আমলে আমার এক আত্মীয়ের প্লটের ত্রুটি দেখিয়ে ২ কোটি টাকা নিয়েছেন যার স্মারক নং-২৫.৩৮.২৬৪৮.৬০৩.৩৯.০০১.২৩.
এরকম প্রতিদিনই কোন না কোন সমস্যা সমাধানের জন্য, তারা হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা ।
গত ২৯ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালতে আহসান হাবিব তামিম নামে জবির গণিত বিভাগের এক ছাত্রকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে শেখ সোহেল রানাসহ ৯৫ জনের নামে মামলা হয়। সোহেল রানাকে যে মামলার আসামি করা হয়েছে ওই মামলার ১ নম্বর আসামি শেখ হাসিনা। মামলাটিতে সোহেল রানাকে ৮৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলায় তার পরিচয় লেখা রয়েছে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ।
তামিম হত্যার বিচার চেয়ে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে দাবি করে মামলাটি করেন আব্বাস আলী নামে এক ব্যক্তি। পরে মিরপুর মডেল থানাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেন আদালত।
অভিযুক্ত শেখ সোহেল রানার কাছে ফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
বিষয়টি ভিত্তিহীন।টাকা লেনদেন করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন । নোটিসের পরিবর্তে অফিস থেকে চিঠি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন থাকলেও আমি আপনাকে কেন দিব?
অভিযুক্ত রাদিউজ্জামান রাজু ওরফে রাতুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ’এ বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন,অভিযোগের নোটিশের বিষয়ে তিনি জানতে পেরেছিলেন তবে অসত্য । তিনি বিষয়টা ঐসময় মীমাংসা হয়ে গিয়েছে বলে জানান। টাকা লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
আগামী পর্বে এক ঠিকাদারের সঙ্গে ব্যবসায়িক পার্টনার , মিরপুরের এক মার্কেটে ১০ টি দোকান বাড়ি দামী গাড়িসহ সকল সম্পদের এবং রাতুল সোহেল গংদের বিস্তারিত তথ্য আরো তুলে ধরা হবে।
Leave a Reply