১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১২:৫৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
মানুষকে ধোঁকা দিতে শিক্ষা লাগে না, তবে সামান্য বুদ্ধি আর চালাক-ই যথেষ্ট। এই বুদ্ধি আর চালাকিকে পুঁজি করেই কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার মানিকারচর বাজার সহ আশেপাশের বাজার গুলোতে পল্লি চিকিৎসকের ধোঁকাবাজি যেন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এলএমএএফ, আরএমপি, ডিএমএস ডিগ্রী দিয়েই চিকিৎসা চালাচ্ছে অনেকেই। না বুঝে ফার্মাকোলজি, না বুঝে গাইনেকোলজি, না বুঝে এনাটমি ও ফিজিওলজি। রোগীদের রোগ নির্ণয় করার মতো তাদের কোনো জ্ঞান না থাকলেও এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড মেডিসিনই তাদের মূল জ্ঞান। এই কয়েক প্রকার ঔষধ দিয়েই রোগীদের চিকিৎসা চালিয়ে নামি-দামি ডাক্তার বনে গেছে অনেকেই। কেউবা হয়ে উঠেছে কোটিপতিও।
নামের আগে ডাক্তার লিখতে না পারলেও সামান্য জ্বর, সর্দি ও কাশি হলে রোগীদের মৌখিকভাবে এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ঔষধ কৌশলে চালিয়ে দিচ্ছে হাতুড়ে ডাক্তাররা। লিখিত কোনো প্রমাণ না থাকায় তাদের প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহল। স্টেরয়েড ও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলেই অল্প সময়ে রোগীর রোগ নিরাময় সহ চিকিৎসকের পরিচিতি লাভ করা একেবারেই সহজ।
উপজেলার সহজ সরল মানুষ গুলোকে যখন তারা চিকিৎসা দিয়ে থাকে, তখন এন্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে। রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার সাথে সাথে রোগী খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন। তখন রোগী ও স্বজনরা মনে করে ওনারা অনেক বড় ডাক্তার। আসলে ওনারা যে কতো বড় ডাক্তার এটা সাধারণ জনগণ না বুঝলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ঠিকই বোঝেন। তবে কিছুই করার থাকেনা চিকিৎসকদের!
কথিত মেঘনা উপজেলার মানিকারচর বাজারের নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু ডাক্তারের ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পল্লি চিকিৎসক বলেন, নুরু ডাক্তার রোগীদের অনেক ইঞ্জেকশন ও স্টেরয়েড ড্রাগ ব্যবহার করে থাকেন। যার ফলে রোগীরা খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তার দোকানে নারকোটিক ঔষধ, ফিজিশিয়ান সেমপল ও বাহিরের কিছু ঔষধ অহরহ বিক্রি করছে। তার প্রেসক্রিপশন করার বৈধতা না থাকলেও সাদা কাগজে লিখে দিচ্ছে রোগীদের ঔষধ। এই অনিয়ম চিকিৎসা ব্যাবস্থা চালিয়ে তিনিও হয়ে গেছেন নামি-দামি ডাক্তার।
এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ডাঃ সায়মা রহমান দৈনিক সবুজ বাংলাদেশকে বলেন, নুরু ডাক্তারের ব্যাপারে যদি কোন প্রমাণ থাকে তাহলে আমাকে দিন। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, পল্লী চিকিৎসক লাইসেন্স ব্যতীত নারকোটিক জাতীয় ঔষধ বিক্রি করতে পারবেন না। এমনকি রোগীকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া স্টেরয়েড ও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে খুব শীগ্রই আমি এসমস্ত পল্লী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবো।
Leave a Reply