1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
  3. editorsobujbangladesh@gmail.com : sumona akter : sumona akter
মেহেরপুরে কারারক্ষী নিজেই মাদক পৌঁছে দেন বন্দীদের নিকট - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৮:৫৮ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

মেহেরপুরে কারারক্ষী নিজেই মাদক পৌঁছে দেন বন্দীদের নিকট

বন্দী শালা এখন মাদকের আখরা

মেহেরপুরে কারারক্ষী নিজেই মাদক পৌঁছে দেন বন্দীদের নিকট

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ
মেহেরপুর জেলা কারাগারের কারারক্ষী আকাশ, গত দেড় বছরের অধিক সময় ধরে তিনি মেহেরপুর জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে চাকুরীরত আছেন। আকাশ যশোর এলাকার বাসিন্দা হলেও সদর উপজেলার বুড়িপোতা এলাকায় ফেলা নামের এক চিহ্নিত মাদক কারবারীর মেয়ের সাথে বিয়ে করেছেন। বিয়ের সুবাদে তিনি বুড়িপোতায় অবস্থান করেন এবং সেখান থেকেই নিয়মিত কারাগারে ডিউটি করেন। আকাশের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক বহন ও কারা অভ্যন্তরে মাদক বিক্রির অভিযোগ। এছাড়াও বন্দীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মাদকদ্রব্য গাঁজা ও ঘুমের ওষুধ বন্দীদের কাছে সরবরাহ করেন তিনি।
কারগারের প্রধান ফটকে বড় অক্ষরে লেখা আছে রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ। কিন্তু আকাশের মত কারারক্ষীদের মাদক সরবরাহের কারণে মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে কারাগার। কারারক্ষী আকাশের মাদক সরবরাহের বিষয়ে অনুসন্ধানে এর সত্যতা পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে উঠে আসে আকাশসহ আরও দুই কারারক্ষীর নাম। ওই দুইজন কারারক্ষীর বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান থাকায় এই পর্বে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আকাশ বন্দীদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে গাঁজা ও ঘুমের ওষুধ ভিতরে নিয়ে সেই বন্দীর কাছে পৌছে দেয়। এই মাদক পৌছে দিতে বন্দীদের পরিবারের কাছ থেকে নেন টাকা। আকাশ সপ্তাহে প্রায় দিনই ডিউটি যাওয়ার আগে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ নিয়ে যান।
অনুসন্ধানে আকাশের গাঁজা ও ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ ক্রয়ের একটি ভিডিও ক্লিপ হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা যায় গত ২৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে তাকে ঘুমের ওষুধ কিনছেন। এছাড়াও ২৯ জুলাই ইয়ামাহা মোটরসাইকেল চড়ে আকাশ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসে। তার কাছে এক যুবক এগিয়ে যায়। পরে ওই যুবক ও আকাশ ফার্মেসীর সামনে একত্রিত হয়। এসময় একপাতা ওষুধ ও কাগজের একটি পোটলা আকাশের কাছে দিয়ে দেয়। আকাশ সেগুলো তার প্যান্টের ডান পকেটে ঢুকিয়ে রাখে। পরে অন্য এক যুবকের সাথে কথা বলে চলে যায়। ওই ওষুধ ও কাগজের পোটলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একপাতা (ডিসোপেন—টু) ঘুমের ওষুধ ও কাগজে মুড়িয়ে গাঁজা আকাশের মাধ্যমে এক বন্দীর কাছে পাঠানো হয়।
এছাড়াও গত বছরের ১৮ অক্টোবর মেহেরপুরে ৯৫০ পিস ইয়াবাসহ চট্টগামের দু’জনকে আটক করে পুলিশ। সেসময় স্থানীয় একটি পত্রিকায় বুড়িপোতা সীমান্ত থেকে নিয়মিত ফেন্সিডিল এনে কারা অভ্যন্তরে ব্যবসা করার নাম উঠে আসে আকাশের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন্দী বলেন, জেলে ঘুমের ওষুধ মাদকসেবীদের কাছে অমূল্য সম্পদ। আমি যখন কারাগারে ছিলাম তখন আকাশের বড়ি (ঘুমের ওষুধ) বিক্রি করতাম। আকাশ ডিউটির সময় ঘুমের ওষুধ ও গাঁজা কারা অভ্যন্তরে নিয়ে আমার কাছে পৌছে দিতো, আবার কারাগারের পিছনের প্রাচীর দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে মাদক ফেলে রেখে আমাকে সিগন্যাল দিতো আমি সেগুলো সংগ্রহ করে অন্যান্য বন্দীদের কাছে বিক্রি করতাম। তিনি আরও বলেন, জেলে সরাসরি টাকার লেনদেন হয় না তাই বেনসন ও গোল্ডলীফ সিগারেটের বিনিময়ে এসব মাদক বিক্রি হয়ে থাকে। দুটি ডিসোপেন—টু’র (ঘুমের ওষুধ) ফার্মেসীতে মূল্য ২৪—২৬ টাকা হলেও কারা অভ্যন্তরে তা ছোট এক প্যাকেট বেনসন সিগারেটের বিনিময়ে বিক্রি হয়। যার মূল্য ২১০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারারক্ষী জানান, আকাশের শশুর ও শাশুড়িও চিহ্নিত মাদক কারবারি। জেলখানায় যত মাল (মাদক) ঢোকে সব আকাশের হাত দিয়ে সাপ্লায় হয়। মেহেরপুর জেলে তো বড় পার্টি নাই। যখন কোন বড় পার্টি ঢোকে তখন যে যা ইচ্ছা করে সেটাই তাকে দেওয়া হয়। তবে ঘুমের ওধুষ ও গাঁজা সরবারহ আকাশের নিত্যদিনের কাজ।
মুক্তি পাওয়া কয়েকজন বন্দীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেনসন বা গোল্ডলীফ সিগারেটের বিনিময়ে ঘুমের ওষুধ ও গাঁজা পাওয়া যায় কারাগারে। বতর্মানে একপাতা ডিসু (ডিসোপেন—টু ঘুমের ওষুধ) দুই প্যাকেট সিগারেট দিয়ে মিলছে না। দুই প্যাকেট সিগারেটের সাথে ছোট এক প্যাকেট ডারবি বা রয়েল সিগারেট দিতে হচ্ছে। কারাগারে গাড়ি আছে তারা সরাসরি এসব মাদক নিয়ে যায়। গাড়ি কি এমন প্রশ্নে একজন বলেন, যে কারারক্ষী মাদক সরবরাহ করে তাকে কারাগারের ভাষায় গাড়ি বলা হয়। আপনি এসব মাদক কিনেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি প্রতিনিয়ত ওষুধ ও গাঁজা নিয়ে সেবন করতেন বলে জানান।
এবিষয়ে আকাশ বলেন, আপনাদের কাছে তথ্য থাকলে যদি কিছু করতে ইচ্ছা হয় তাহলে করতে পারেন। আই ডোন্ট কেয়ার। আমার কোন সমস্যা নেই।
এবিষয়ে জেল সুপার দেব দুলাল কর্মকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একজন কারারক্ষীর ওপেনলী মাদক নিয়ে কারাগারে প্রবেশ করে তা বন্দীদের নিকট পৌছিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র মেহেরপুর জেলা জুরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »