৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১০:০৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
বিশেষ প্রতিবেদক:
সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার সদর থানার গিয়াসনগর ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের আনসার আলীর বাড়ীতে তার পুত্রবধুকে ২ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে পরিবারের সদস্যরা। মাস পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি স্থানীয় থানা পুলিশ সে কারনে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পরিবারটি।
জানা যায়, পপি বেগমের স্বামী মামুন কিছুদিন আগে বিদেশে যাওয়ার সময় পপিকে তার বাপের বাড়ী থেকে টাকা এনে দিতে বলে। পপি টাকা এনে দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তার স্বামী মামুনের নির্দেশে তার বড় দুই ভাই, বোন, মা ও বাবা একত্রিত হয়ে পপি বেগম (২০) কে তার শরীরে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে পপি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে জ্ঞান ফেরার পর পপির শাশুড়ী পানির সাথে মরিচের গুড়া মিশিয়ে তার সারা শরীরে লাগিয়ে দেয় এমনকি তার লজ্জাস্থান ও বাদ যায়নি। মরিচের গুড়ার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে সে চিৎকার দিলে তাকে জোড়পূর্বক একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে। তালাবদ্ধ থাকাবস্থায় সে তার বাবার বাড়ীর কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি । পরে তারই ননদের মোবাইল থেকে লুকিয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে অবহিত করে। পরে পপির মা ২৭ জুলাই ২০২৩খ্রি: মৌলভীবাজার সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার জন্য গেলে সদর থানার এস আই রতন ঘটনাস্থলে গিয়ে পপিকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়নের দুই মেম্বার কে ডেকে তাদের সহযোগীতায় পপিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেন। যা কিনা শিযালের কাছে মুরগি বগা দেয়ার মতো আচরন, সেই পুলিশ কর্তা এটা পারেন কিনা সে প্রশ্ন সচেতন মহলের? পুলিশের উচিত ছিলো ভিকটিমকে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে তার চিকিৎসা করানো কিন্তু তিনি তা করেননি এমন কি অভিযোগও থানায় নথিভুক্ত করেননি তারমানে কি তিনি টাকার কাছে অসহায়ত্ববোধ করেছেন এ প্রশ্ন পরিবারের সদস্যদের।
শরীরের ব্যাথা ও মরিচের গুড়ার জ্বালার সহ্য না করতে পারার কারণে তাকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে চিকিৎসা প্রদান করে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশ কেইস হওয়ায় তারা মৌলভীবাজার সদর থানায় মামলা করতে গেলে তাকে থানায় তার মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। তাকে মৌলভীবাজার আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে নির্যাতিত পপির সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর পরও নিস্তার নেই আমার ভাসুর মাসুম ও পারভেজ প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি এতে প্রতিবাদ করায় আমার উপর তারা আবার যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমার উপর নানা ভাবে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে।
পপি বেগম আরও বলেন, আমাকে শশুড়-শাশুড়ী প্রায়ই নির্যাতন করত কিন্তু অনেক সময় মুখ বুঝে সহ্য করেছি কিন্তু এখন আর পারছি না, তাই বাধ্য হয়ে আমার পরিবারকে জানাই।
৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার কয়েস আহমেদের ফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শশুড়বাড়ী থেকে পপি বেগম চলে আসার পরও বিভিন্নভাবে শশুড়বাড়ীর লোকজন কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বলে জানান ভুক্তভোগী পপি ও তার পরিবার।
পপি ও তার পরিবার বলেন, আমরা ন্যায় বিচারের আশায় স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ ও থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলে এখনও কোন সুরাহা না পেয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমি আমার পরিবারকে বাঁচাতে ও ন্যায় বিচার পেতে সংশিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply