৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৮:৩৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের বাসায় ঢুকে হামলার চেষ্টা ও সপরিবারের হত্যার হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১১ ও ১২ জুলাই যুগান্তরের অনলাইন ও প্রিন্ট ভার্সনে ইউএনওর বদলি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া ইউএনও, জাদুকাটা নদী সেতু, ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্য সংবলিত জাদুকাটা নদীতে ড্রেজার জব্দ ও ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতারের নির্দেশ, বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ি জব্দ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদীর বালু উত্তোলন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ১২ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দলবল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট কলেজ রোডের বাসায় প্রবেশ করেন। যুগান্তরে এসব প্রতিবেদন প্রকাশের কারণ জানতে চেয়ে কেঁচি গেট খুলে হামলার অপচেষ্টা করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হতে দেখে ভবিষ্যতে যুগান্তরে কোনো ধরনের সংবাদ প্রকাশ কিংবা তথ্যের জন্য থানার ওসি-ইউএনওকে ফোন করলে পরিবারের সব সদস্যসহ সাংবাদিক আজাদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চেয়ারম্যান আফতাব তার দলবল নিয়ে চলে যান।
বক্তারা বলেন, এরপর থেকেই চেয়ারম্যান আফতাব ও তার দলবলের হুমকির মুখে সাংবাদিক আজাদ ও তার সহধর্মিণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ দাবি করে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। যাতে ভবিষ্যতে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিক-শিক্ষক দম্পতিকে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখার অপচেষ্টা করতে না পারে।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক আজাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা জোরদার করা ও অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের করে আনার দাবি তুলেন সরকার প্রধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- এলাকাবাসীর পক্ষে সমাজসেবক সামসু মিয়া, ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, সারোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আলীম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক এমএ রাজ্জাক, হাসান বশির, রাহাদ হাসান মুন্না, আব্দুল মান্নান, রোকন উদ্দিন, সাবজল হোসাইন প্রমুখ।
এছাড়া উপজেলার কামড়াবন্দ, বাদাঘাটবাসীসহ উপজেলার একাধিক গ্রাম থেকে আসা মানুষজন, সাংবাদিক, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ইউএনওর বদলি সংক্রান্ত প্রতিবেদন ছাড়াও এর পূর্বে ধারাবাহিকভাবে দৈনিক যুগান্তরে ‘জাদুকাটা নদীর উপর নির্মাণাধীন সেতুতে ড্রেজারের ধাক্কায় প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি, ড্রেজার মেশিন জব্দ ও ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতারে ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশ, বাদাঘাট বাজারে ভারতীয় বিড়ির চালান জব্দ, কলাগাঁও সীমান্ত ছড়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং নৌপথে চাঁদাবাজির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর থেকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব নিজেই মুঠোফোন এবং বিভিন্ন সময় তার লোকজন দিয়ে বিভিন্নভাবে হাবিব সরোয়ার আজাদকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার সাংবাদিক আজাদের সহধর্মিণী জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার মুখেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে গেল শুক্রবার বিকালের পর থেকেই আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর রাতেই সাংবাদিক আজাদ নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাবসহ তার দলবলে থাকা অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন।
সুনামগঞ্জ, সিলেট, ঢাকা:১৭.০৭.২৪
Leave a Reply