১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৪:০২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার কুঠি সাত বাড়ীয়ায় এ.এন.এগ্রোভেট নামক একটি কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে, প্রাণীসম্পদ অফিসের নীরব ভূমিকা!
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পশুখাদ্য আইন,২০১০ এবং পশুখাদ্য বিধিমালা-২০১৩ এর আলোকে এ.এন.এগ্রোভেট নামক প্রতিষ্ঠান কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর হতে পশুখাদ্য উৎপাদক/প্রক্রিয়াজাত কারক/ সংরক্ষক/বাজারজাতকারক (ক্যাটাগরি-১) হিসেবে শর্ত সাপেক্ষে লাইসেন্স প্রধান করেন, যার লাইসেন্স নং ৩৪৪(ক্যাটাগরি-১:ভেট প্রিমিক্স)অনুমোদন লাইসেন্স এর শর্ত অনুযায়ী এক হতে পাঁচ পর্যন্ত পণ্য গুলো প্রাথমিকভাবে অনুমোদন থাকলেও এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটি কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে একাধিক পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাত করে আসছে।
সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির নানান রকম অনিয়ম। অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দেখা যায়, অত্যন্ত নোংরা পরিবেশের দুটি কক্ষে ঔষধ তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল,মোড়ক,লেভেল সঙ্গে গাদাগাদি করে ফেলে রেখেছে। এছাড়াও ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে বিভিন্ন অনিয়মের দৃশ্য! প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোন ল্যাব ও প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি,এমনকি মিক্সার মেশিনটি দেখা যায় নষ্ট ! প্লাস্টিকের বালতিতে কাঁচামাল নিয়ে হাত দিয়ে তা মিশিয়ে বোতলে ভরা হচ্ছে আর এভাবেই মোড়ক/লেবেল লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল গবাদি পশুর ঔষুধ! এছাড়াও অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে ঔষধ তৈরি ও প্যাকিং করা হচ্ছে।
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার ক্ষেত্রে একজন দক্ষ কেমিস্ট ভেটেরিনারি মেডিসিন ডাক্তার(ডিভিএম) এর তত্ত্বাবধানে এ ধরনের ঔষধ তৈরি বাধ্যতামূলক হলেও এখানে-ও কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছে না প্রতিষ্ঠানটি।
এবিষয়ে,এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ নুরুল ইসলাম এর সঙ্গে কথা হলে তিনি সবুজ বাংলাদেশ কে জানান,তিনি নিজেও একজন সাংবাদিক!
কি এমন বিষয়ে আমার প্রতিষ্ঠানে এসেছে বা কে পাঠিয়েছে এমন প্রশ্ন করতে থাকেন, এক পরাজয় তিনি নিজেই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে যায়।
তিনি বলেন,আমি দৈনিক বাংলা খবর প্রতিদিন পত্রিকার শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে আছেন এবং শাহজাদপুর উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য তিনি এভাবেই নিজের পরিচয় দিতে থাকেন।
এরপর,তার প্রতিষ্ঠান এ.এন.এগ্রোভেট এমন অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদকের কাছে সকল অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, এক ব্যক্তি মাসে দু-একবার এসে কোন কেমিক্যাল এর সঙ্গে কোনটি মেশাতে হবে সেটি দেখিয়ে দিয়ে যায়। তার দেখা কৌশল মোতাবেক আমি এই ভেজাল ঔষধ তৈরী করে বোতল ও প্যাকিং এবং বাজারজাত করি। এছাড়াও তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ কারখানাটি আমি চালিয়ে আচ্ছি কোন সমস্যা হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, শাহজাদপুরের অনেকেই এই গবাদিপশুর ঔষধ উৎপাদন করছে তাদের ঔষধ ও প্রশাসনের অনুমোদন ও পরীক্ষা ছাড়াই তৈরি হচ্ছে এ-ক্যালবেট প্লাস ও হেপাটোলিভ -এন ঔষধ তৈরীসহ বিভিন্ন ঔষধ তৈরী ও বাজারজাত করে যাচ্ছে তারা-ও আইন অনুযায়ী অপরাধ করছে নিজ মুখেই তিনি সকল অনিয়মের বিষয়ে স্বীকার করেন তার ভিডিও রেকর্ড ও সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার সংরক্ষণে রয়েছে।
এরপর,এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোঃ নুরুল ইসলামের সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হওয়ায় কারনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকতা আমি বুঝি না ও এই পেশায় ও আমার কোন অভিজ্ঞতাও নাই তবে,আমার সাংবাদিকতার কার্ড বানানোর উদেশ্য হলো আমার প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ সুবিধা ও বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সু-সম্পর্ক খুব সহজেই গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি এছাড়াও অনেক সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানে এসে ঝামেলা করে যখন তারা জানতে পারে আমিও সাংবাদিক তখন তারা আমার কিছুই করতে পারবেন না। তিনি আরো বলেন,শাহজাদপুরে আমার মত সাংবাদিকতার কার্ড ঝুলিয়ে অনেকেই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে খুব সহজেই আপনি নিজেও তাদের কিছু করতে পারবেন না।
এরপর তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবেদক চলে আসার সময় পকেট থেকে টাকা বের করে প্রতিবেদক কে ম্যানেজ করার চেষ্টাও করে তবে প্রতিবেদক টাকা গ্রহণ করেনি বলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন,আপনি কত বড় সাংবাদিক হয়েছেন সেটিও আমি দেখে নিবো। এছাড়াও তিনি বলেন,আপনি যা পারেন করেন আমি বড় বড় সাংবাদিকসহ শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব ও উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসারের সবাইকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে-ই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি আপনি নিউজ করে যা পরেন করেন কোন সমস্যা নেই।
এবিষয়ে,শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বেল্লাল হোসেনের মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এ.এন.এগ্রোভেট প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নিবেন। এরপর গত ১৮/৩/২০২৫ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলেই, কিছু না বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
Leave a Reply