1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
শিশুদের ভালোবাসতেন তিনি - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ভোর ৫:১৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
স্বতন্ত্র সাংসদ ওয়াহেদের বেপরোয়া আট খলিফা চৌদ্দগ্রামে পুকুরের মালিকানা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলা ঋণ খেলাপী রতন চন্দ্রকে কালবের পরিচালক পদ থেকে অপসারন দাবি নীরব ঘাতক নীরব লালমাই অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি নিউজ করতে গিয়ে হুমকি, থানায় জিডি বিশ্বনাথের পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে সাত কাউন্সিলরের পাহাড়সম অভিযোগ বিশ্বনাথে ১১ চেয়ারম্যান প্রার্থী’সহ ২০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল মুখে ভারতীয় পণ্য বয়কট, অথচ ভারতেই বাংলাদেশি পর্যটকের হিড়িক শার্শায় সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের উপর হামলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের মহা দূর্নীতিবাজ ডিপ্লোমা মাহাবুব আবার ঢাকা মেট্রো ডিভিশনে!

শিশুদের ভালোবাসতেন তিনি

চয়ন সেনগুপ্ত ॥
পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর তার সবটুকুই শিশুদের দিতে হবে। ওরা ভোরের আলোর মতো কোমল। কবি ও লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘ভোরের আলো হলো সূর্যের শস্যকণা।’ মূলত এ শস্যকণার মতোই আমাদের শিশুরা। বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুব ভালোবাসতেন। ভীষণ স্নেহ করতেন। শিশুদের হাসিমাখা উজ্জ্বল মুখ দেখলে তার সারাদিনের ক্লান্তি যেন নিমিষেই উধাও হয়ে যেত। আবার কেউ কখনো শিশুদের কষ্ট দিলে, নির্যাতন করলে, হত্যা করলে বঙ্গবন্ধুর অন্তরাত্মা কেঁদে উঠত। তিনি প্রতিবাদী হতেন। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী কর্তৃক বাংলার দুগ্ধপোষ্য শিশুদের ওপর হত্যাযজ্ঞ এবং পরবর্তীকালে শিশুদের ওপর কোনো অমানবিক আচরণ তিনি সহ্য করেননি।

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার জরুরি আইনের পাশাপশি ডিপিআর আইন চালু করে। ডিপিআর আইন হলো কুখ্যাত দেশরক্ষা আইন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু জেলে। সে সময় সেলে তার সঙ্গে আরও ছিলেন আব্দুল জলিল অ্যাডভোকেট, নূরে আলম সিদ্দিকীসহ কিছু ছাত্র। এছাড়া ১০ মাস ধরে বিনা বিচারে ডিপিআর আইনে জেলে বন্দি ছিল ৮ বছর বয়সি কুমিল্লার রতন। তার অপরাধ তার বাবা থাকেন ভারতে। বঙ্গবন্ধু এ খবরে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই দুধের বাচ্চাকে এভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে কেন?

বঙ্গবন্ধুর আদরের ছোট ছেলে তিন-চার বছরের রাসেল যতবার মা, বোন, ভাইদের সঙ্গে জেলগেটে যেত, বঙ্গবন্ধুর পিতৃহৃদয় এক মহা শূন্যতায়, বেদনায় ভরে উঠত। তিনি জানতেন রাসেলকে পিতা হিসাবে ততটা আদর-স্নেহ দিতে পারেননি তিনি। কারণ তিনি প্রায়ই থাকতেন জেলে। স্বাধীনতার পর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু পিতা হিসাবে ছোট্ট রাসেলকে তার প্রাপ্য সবটুকু স্নেহ-ভালোবাসা উজাড় করে দিতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, সভায়, দেশ-বিদেশ সফরে রাসেলকে সঙ্গে রাখতেন। ১৯৭৩-এর ১৮ অক্টোবর শেখ রেহানা ও রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু জাপান সফর করেন।

১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে এসে দেখলেন ইয়াহিয়া খান দম্ভ করে যা বলেছিলেন তা-ই সত্য। পাকিস্তানি বর্বর বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় আলবদর-রাজাকার বাহিনী মিলে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, ২ লাখ মা-বোনের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, ঘরবাড়ি লুটতরাজ করেছে, রাস্তাঘাট-হাটবাজার-স্কুল-কলেজ ধ্বংস করেছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ঘুরে ঘুরে জনসভায় এমন শ্মশান বাংলার বর্ণনা দিয়ে ক্ষোভে-দুঃখে ফুঁসে উঠতেন। আর বলতেন, অসভ্য খুনি পাকবাহিনী আমার ‘দুগ্ধপোষ্য’ শিশদেরও নির্মমভাবে হত্যা করেছে। দেশে-বিদেশে বঙ্গবন্ধু যত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সর্বত্র তিনি শিশুদের ওপর মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের কথা বলেছেন। ১৯৭৩ সালে পাবনায় এক নির্বাচনি জনসভায় বঙ্গবন্ধু মঞ্চে বসা। তিনি দেখতে পান শামিয়ানার অনতিদূরে একদল ছোট্ট ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকরা। বঙ্গবন্ধু গম্ভীর হয়ে ওঠেন। শিশুদের সঙ্গে এমন আচরণ তিনি সহ্য করতে না পেরে মঞ্চ থেকে চিৎকার করতে করতে নেমে আসেন। শিশুদের মাটি থেকে তুলে, গায়ের ধুলা মুছে তাদের মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দেন। তারপর ওদের মঞ্চের সামনে বসিয়ে দেন। সেই জনসভায় এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী ছিলেন ড. মযহারুল ইসলাম।

চয়ন সেনগুপ্ত : উপ-পরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর

chayan21263@gmail.com

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »