১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১২:২১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদক:
সরকারের শেষ সময়ে এসে যেন সরকারী কর্মকর্তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যাস্থ হযে পরেছে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের অত্যন্ত দাপুটে ক্ষমতাশীল ও একরোখা বলে খ্যাত ঢাকা সার্কেলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান। গত ২০০৯ সালের পর থেকে ঘুরেফিরে মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা—এই তিন কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন সবুজ। ক্ষমতাবলে আট বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও একই অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে। যেটি এই অধিদপ্তরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এলাকা বলে পরিচিত । তাঁর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাথে প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খানের বোঝা পড়ার কথা এখন সবার মুখে মুখে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
সওজ সূত্রে জানা যায় বিগত পাঁচ বছরের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন লিমিটেড—সংখ্যা ৩ হাজার ১০০টির মতো। এককভাবে তারা পেয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার কাজ। আবেদ মনসুরের অধীনে এখন চলমান কাজ ২১৮টি। এগুলোর মূল্য প্রায় ১৭৬ কোটি টাকা।
সূত্রটি আরো জানায়, প্রকৌশলী সবুজ উদ্দীন খানের হাত ধরেই আবেদ মনসুরের কোম্পানির অগ্রযাত্রা শুরু হয়। আবেদ মনসুরের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি সওজ অধিদপ্তরে ঠিকাদারি শুরু করেন বছর সাতেক আগে। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান এর আওতায় গাজীপুর ও মানিকগঞ্জে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনের বেশির ভাগ কাজ পাওয়ার বিষয়টি তিনি এর আগেও বিভিন্ন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খানের সাথে আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের এতটাই দহরম মহরম সম্পর্ক, যে অনেকেই প্রকৌশলী সবুজকে কনস্ট্রাকশন ফার্মটির অঘোষিত মালিক মনে করেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্র হতে জানা যায় রাজধানীর উত্তরায় সেক্টর নং ১১, রোড নং ৪ এর বাড়ি নং ২৫ এর প্লট এবং বাড়ির মালিক সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান নিজেই। বাড়িটির নকশাও তার নামে। যদিও প্লটটি বুকিং দিয়েছে সবুজ উদ্দিন তার স্ত্রী মোছাম্মৎ মাহমুদ আক্তার পান্না, ও তার শালিকা নুরজাহান আক্তার ও নারগিস আক্তার হীরার নামে। কোন কোন সূত্র বলছে বিদেশ পড়ুয়া সন্তানের মাধ্যমে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলেছে মালয়েশিয়া ও কানাডায়। করছে টাকা পাচার। সরজমিন অনুসন্ধানে জানা যায় বিলাসবহুল বাড়িটিতে সবুজ উদ্দিন নিজে অবস্থান খুব কম করে, সেখানে তার স্ত্রী শালিকা এবং শ্যালিকার স্বামী বসবাস করে। আরো জানা যায় রাজধানীর গুলশান/বারিধারায় রয়েছে তার বাডিও ফ্ল্যাট সেখানকার যেকোনো একটিতে বসবাস করে সবুজ উদ্দিন। সবুজ উদ্দিনের স্ত্রী পান্না একটি অনিবন্ধিত এনজিও পরিচালনা করেন। যেটি তার মেয়ের নামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদিত। নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক তার দপ্তরের সহকর্মীরাই বলেন উল্লেখিত মানব কল্যাণ সংগঠনটির নামে বিভিন্ন কার সাজি দেখিয়ে কালো টাকা কে সাদা করার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন।
সূত্রটি আরো জানায় ঠিকাদার সখ্যতা, কমিশন বাণিজ্য, আয় বহির্ভূত সম্পদ নিয়ে কোন সাংবাদিক সবুজ উদ্দিন কে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করলেই সবুজ উদ্দিন সাবেক এক জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং কিছু কতিপয় সাংবাদিক নেতার মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়া, গণমাধ্যম কর্মীদের নানান ভাবে বল প্রয়োগ করে নেগোশিয়েট করার চেষ্টা করে থাকে। নিজেকে নাকি মন্ত্রীর ভাইয়ের খুব কাছের লোক হিসেবে হর হামেশাই বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় দেয় এই সবুজউদ্দিন। রাষ্ট্রের এমন কোন সংস্থা নাই যারা আপটু-বটম সবুজ উদ্দিনের সাথে সম্পর্ক নাই, কেউ তার বিরুদ্ধে কলম ধরলেই নাকি তার গুষ্টি শুদ্ধ শেষ হতে হবে এমন ভয়ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন। ধরা খেয়ে সরা জ্ঞান ছড়ানো তার রীতিমত অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন এর একাধিক সূত্র জানায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান এর বিরুদ্ধে তথ্যবহুল কোন অভিযোগ আসলে তা দ্রুত আমলে নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ সমূহের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খানের বক্তব্য জানতে তাকে মুঠোফোন একাধিক বার ফোন করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এদিকে আয়ের চেয়ে অধিক ব্যায়ে সম্পাদ গড়ে তোলার মাধ্যমে যারা সমাজকে কলুষিত করছে। বিশেষ করে ঘুষ ও দূর্নীতির মাধ্যমে আয় করেন তাদের বিষয়ে দেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন জিরো টলারেন্স,তাদের বিষয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন দূর্নীতিবাজ যেই হোকনা কেনো ছাড় নয়, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন দূর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় নাই, ধরা হবে। সওজ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান এর বিষয় নানান গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ যাচাই-বাছাই চলছে, যা প্রকাশিত হবে পরবর্তী পর্বে।
Leave a Reply