১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১১:৩৪ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
গত ১৩ই এপ্রিল কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে মাদক কারবার ও বড় চোরাচালানের তথ্যা দেয়ার কথা বলে সুপরিকল্পিত ভাবে একজন পুলিশ কর্মকর্তার পূত্র ও সাংবাদিক (মহিউদ্দিন সরকার নাঈম)’কে সীমান্তে ডেকে নিয়ে নৃশংশ ভাবে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পূর্ব ঘোষণা দিয়ে সাংবাদিককে হত্যার ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যপক আলোচিত হয়। আন্দোলন ও নানা কর্মসূচি পালন করে সারা দেশের সাংবাদিক মহল। এ হত্যাকান্ডে জড়িত প্রধান আসামী’র (র্যাবের সাথে ভারত সীমান্তের গোলাবাড়ি এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত) পিতা কর্তৃক নিহত সাংবাদিক নাঈম এর কাছের সহকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট চাঁদাবাজির মামলা যা বিন্দুমাত্র সত্যতা না থাকায় থানায় গিয়ে দায়ের করতে ব্যার্থ হয়।
অবশেষে আদালতে মনগড়া কাহিনি সাজিয়ে গুছিয়ে মামলাটি দায়ের করেন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে! আদালত মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা গোয়েন্দা শাখাকে। জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) সহ-পরিদর্শক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা অভিযোগটি তদন্ত করেন। উল্লেখিত স্বাক্ষীদের কয়েকজন সরাসরিই বলেন এবং বলছেন এমন কোন চাঁদাবাজির ঘটনার কথা জানেন না বা দেখেননি তারা তেমন কিছুই।
বিবাদীদের সাথে কোন আলোচনা তো করেনইনি আপসোসজনক হলেও সত্যি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফোনালাপকালে জানান, তিনি জানেনই না বিবাদীরা কে এবং কি করেন!! ২৮সেকেন্ডের একটি ভিডিও চিত্র যেখানে অর্ধশতাধিক লোক ভিডিওটিতে দৃশ্যমান, সেই ভিডিও চিত্রই নাকি মামলার প্রমাণ!! যেখানে মমলায় কথিত আসামীদের তেমন কোন কিছুই প্রকাশ পায়নি৷ অথচ মূল ঘটনা হলো (ভিডিও রয়েছে), একজন তরুণ সাংবাদিক কে হত্যার পরপর ভারতীয় অবৈধ পথে আনা চোরাই পণ্য ও মোটরসাইকেল পার্টস বিক্রেতা এবং সাংবাদিক হত্যাকান্ডে জড়িতরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিব্বি ব্যবসা করছিলো। আর তৎকালীন বুড়িচং থানায় দায়েরকৃত সাংবাদিক হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ওসি কে জানিয়ে, প্রধান আসামীর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে, দোকানে থাকা অভিযুক্তের পিতা ও কর্মচারীরা উল্টো নিহতের সহকর্মী সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়ে তাদের মারধর ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে!! সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম হত্যার প্রধান আসামী ক্রসফায়ারে নিহতের দুদিন আগে ক্যান্টনমেন্ট মার্কেট এবং সংলগ্ন নামার বাজার এলাকায় সেদিনের মুল ঘটনা এতটুকুই।
তবে মজার বিষয় হলো, দিনে দুপুরে ক্যান্টনমেন্ট মার্কেট ও মার্কেট সংলগ্ন দোকানে চাঁদা চাওয়া বা চাঁদাবাজী ও লুটপাট করা কি করে সম্ভব? পাঠকের কাছে প্রশ্ন আপনার কি মনে হয়? এসব কথা বা অভিযোগ কোন ভাবেই কারো কাছে বিশ্বাস বা গ্রহণ যোগ্য…?
ইতিপূর্বেইও সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈম হত্যা মামলায় জড়িত পালাতক আসামিরা মিথ্যা মামলা হামলা এবং নাঈমের মত হত্যা করে পথেঘাটে ফেলে রাখার হুমকি দিচ্ছে, দিয়েছে। অবশ্য এসব বিষয় একজন সাংবাদিকের জন্য নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। (প্রশিক্ষণ কালে এক সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রশিক্ষক বলেছিলেন যে সাংবাদিকের কোন শত্রু নেই কিংবা কখনোই মিথ্যা ষড়যন্ত্র, হামলা, মামলার শিকার হননি তিনি আর যাই হোক সাংবাদিক নন)
মূল বিষয় হলো, দেশের সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা হলো থানা পুলিশ এবং আদালত। আমিও গর্বিত এই কারনে, আমার আপন ছোট দুই ভাই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর শতভাগ সৎ পুলিশ হিসেবে কর্মরত রয়েছে। আমার মরহুম পিতা ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশের সার্জেন্ট।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ৭১এর রণাঙ্গন থেকে শুরু করে, সর্বত্র দেশের পুলিশ বাহিনীর রয়েছে বিশেষ অবদান। পুলিশ ব্যতিত দেশের স্বাভাবিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভাবাও যায় না।
ডিপার্টমেন্টের গুটি কয়েক অসাধু সদস্যদের কারনে পুরো বাহিনীকে যেমন দায়ী করা যায় না, তেমনি দু চারজন বুভুক্ষু অসাধু অর্থলোভী সদস্যের কারনে যেন সকলের ভাবমূর্তি নষ্ট না হয় সেদিকে কঠোরতা অবলম্বনও প্রয়োজন।
নবনিযুক্ত আইজিপি মহোদয় দেশের প্রতিটি থানাকে নির্যাতিত নিপিরীত পুলিশী সেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা হিসেবে রুপান্তরের যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তা বাস্তবায়নে এই বাহিনীর সকলেই আন্তরিক ভাবে কাজ করবেন, এমনটাই দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে সাধারণ মানুষ।
পরিশেষে দেশের আইন ও আদালতের ওপর আস্থা ও সত্যের ওপর ভরসা রেখেই আশা করছি শীঘ্রই বানোয়াট এ মামলাটি আদালতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় খারিজ হবে। এবং সেই সাথে সাংবাদিক মহিউদ্দিন হত্যায় জড়িত প্রতেকেই তাদের প্রাপ্য সাজা ভোগ করবেই। (ইনশাআল্লাহ)
Leave a Reply