১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ১:৩৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
কক্সবাজার প্রতিনিধি ॥
সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফায় সোমবার আরও একজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এ মামলার ৯ নং ও চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে কামাল হোসেন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
বরখাস্ত ওসি প্রদীপ-লিয়াকতসহ এ মামলার ১৫ আসামিদের উপস্থিতিতে সোমবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে আদালতের কার্যক্রম।
এ সময় চাঞ্চল্যকর এই মামলার অন্যতম সাক্ষী কামাল হোসেন আদালতকে বলেন, ঘটনার সময় তারা কয়েকজন ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন। গুলি খেয়ে সিনহা মো. রাশেদ খান মাটিতে (রাস্তায়) লুটিয়ে পড়েন। তখনও তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি (সিনহা) তখন পানি পানি বলে ছটফট করছিলেন। কিন্তু কেউ তাকে পানি দেয়নি। উল্টো টেকনাফের দিক থেকে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনাস্থলে এসে সিনহার বুকে লাথি মারেন। গামবোট দিয়ে গলা চেপে সিনহার মৃত্যু নিশ্চিত করেন ওসি প্রদীপ।
এরপর বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ ১৫ জন আসামির পক্ষে আইনজীবীরা পৃথকভাবে কামাল হোসেনকে জেরা করেছেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, সোমবার তিনজন সাক্ষী হাজির ছিলেন। কিন্তু একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরাতেই আদালতের সময় শেষ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বিচার কাজের প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনে মাত্র ৪জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ করা সম্ভব হয়েছে।
মঙ্গলবার পঞ্চম সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এ সময় আসামি পক্ষ ‘অপ্রাসঙ্গিক’ জেরা করে সময় ক্ষেপণ করছেন বলে অভিযোগ করেন (পিপি) ফরিদুল আলম।
এদিকে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, সাক্ষী কামাল হোসেন আদালতকে বলেছেন, খুব কাছ থেকে সেদিনের সংঘটিত ঘটনাটি তিনি দেখেছেন। অথচ তা ইতোপূর্বে তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি। আর সাক্ষী নিজেকে সিএনজিচালক দাবি করলেও তার কোনো প্রমাণ নাই।আসামি পক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত আরও দাবি করেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরই প্ররোচনায় সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিনদিনে মামলার বাদী মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ও ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। রোববার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন এই হত্যা মামলার ৩ নম্বর সাক্ষী মোহাম্মদ আলী।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যা্ব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।
Leave a Reply