১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । দুপুর ১২:২৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
সূচনা ফাউন্ডেশন এবং সেন্টার ফর ডিজএ্যাবিলিটি ইন্ ডেভেলপমেন্ট (সিডিডি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-এর সাথে যৌথভাবে একটি ভার্চুয়াল কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত প্রতিবন্ধী মানুষ ও তাদের পরিচর্যাকারীরা দূর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কি ভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছে ও অবদান রাখছে সে বিষয়টি বুঝার জন্য একটি জরিপ ফর্ম পরিচিতি করানো এবং তথ্য পূরণে সহযোগিতা প্রদান করা হয়। যার আলোকে আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত তারা উক্ত জরিপ ফর্ম পূরণ করে তাদের মতামত জানাবেন।
২০১৫ সালে যখন সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক গৃহীত হয়েছিল সেই সময়ের তুলনায় এখনকার সময়ে সারা বিশ্বে দুর্যোগ ঝুঁকির সাথে বসবাসরত একশ কোটি প্রতিবন্ধী মানুষ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বা দুর্যোগের সহনশীলতা বৃদ্ধিতে নেয়া পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সাথে অধিকতর জড়িত কিনা তা পর্যালোচনা করাই এই জরিপের উদ্দেশ্য।
প্রায় এক দশক আগে ২০১৩ সালে UNISDR (বর্তমানে UNDRR) এই সমীক্ষাটি সারা বিশ্বব্যাপী পরিচালনা করে। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল যেকোনো দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কিভাবে খাপ খাইয়ে নিতে চেষ্টা করেন তা জানা। সমীক্ষাটিতে বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অংসগ্রহণ করেছিলেন যা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
২০১৩ সালের সমীক্ষার মূল ফলাফলে বেরিয়ে এসেছিলো- সারা বিশ্বে দুর্যোগ ঝুঁকিতে থাকা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কেন অধিক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তারা কিভাবে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করেন। এছাড়া যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে তাদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তাদের সাথে খুব কম পরামর্শ করা হয়। সমীক্ষার প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছিলো যেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তভূক্ত করে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের জন্য গৃহীত অনুশীলনের বিকাশ করা যায়।
বিগত দশক ও বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে দুর্যোগঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং সারাবিশ্ব ব্যাপী বাংলাদেশ এক্ষেত্রে “রোল মডেল” এর স্বীকৃতি অর্জন করেছে। একারণে দুর্যোগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গৃহীত যেকোন পদক্ষেপে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশের অংশগ্রহণকে বিশেষভাবে উৎসাহিত ও মূল্যায়ণ করা হয়। তারই ফলশ্রুতিতে UNDRR কর্তৃক গৃহীত ২০২৩ সালের এই ফলোআপ সমীক্ষায় বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রতিবন্ধী মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আজকের এই কর্মশালা।
কর্মশালায় স্টিফানি ডানেনমান-ডি পালমা, এক্সটার্নাল রিলেশন্স অফিসার এন্ড ইউএন স্ট্র্যাটেজি ফর পারসন্স উইথ ডিজএ্যাবিলিটি ফোকাল পয়েন্ট, ইউএনডিআরআর কর্মশালা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এই জরিপে অংশ নিচ্ছে এবং বাংলাদেশ ও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ প্রতিবন্ধিতা বান্ধব দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ব্যবস্থাপনায় সারা বিশ্বে রোল মডেলের ভূমিকা পালন করছে। ফলে, এই জরিপে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সমান অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এর মাধ্যমে ২০১৩ সালের মতো এক দশক পরে ২০২৩ সালে গৃহীত এই ফলোআপ সমীক্ষাতেও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিবন্ধী মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। এই সমীক্ষার ফলাফল সেন্দাই কর্মকাঠামো বাস্তবায়নের অবশিষ্ট সাতটি বছরে ব্যবহার করা হবে। একইসাথে এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের বৈশ্বিক দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থবহ অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করবে যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১০ নং লক্ষ্য- বৈষম্য হ্রাস তথা সার্বিক প্রতিশ্রুতি Leaving no one behind রক্ষায় অবদান রাখবে।
Leave a Reply