1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
এনসিটিবিতে চলছে ই- টেন্ডার বাণিজ্য; ঝুঁকিতে মুদ্রণ শিল্প - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৩:২৬ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
বিবাহিত হয়েও বীরগঞ্জ উপজেলা ছাত্র লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান অন্তুু! পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতির অভিযোগে পল্টনে ২ ট্রাভেল ব্যাবসায়ী গ্রেফতার! মেহেরপুরে গাঁজাসহ দুজন মাদক আটক ব্যবসায়ী আটক প্রতিবেশি ভাবিকে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কাণ্ড যুবকের ৩০ বস্তা সার কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে যাবেন চেয়ারম্যান বায়োফার্মা পেলো ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড” নরসিংদীতে আবারো পল্লী বিদ্যুতের হরিলুট, মাঠকর্মী আটক ! কেরানীগঞ্জে পরিত্যক্ত ট্রাঙ্কে যুবকের লাশ কুমিল্লায় মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার সাগরদাঁড়ীতে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষর সমাধি’র পাশে অশ্লীল নৃত্য, সুশীল সমাজের ক্ষোভ
এনসিটিবিতে চলছে ই- টেন্ডার বাণিজ্য; ঝুঁকিতে মুদ্রণ শিল্প

এনসিটিবিতে চলছে ই- টেন্ডার বাণিজ্য; ঝুঁকিতে মুদ্রণ শিল্প

স্টাফ রিপোর্টার:

শিক্ষা খাতের দুর্নীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডারের তথ্য ফাঁস, সমঝোতার নামে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাপোর্টিং বা এজেন্ড ঠিকাদার নিয়োগের কথা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক বেনামে বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা করাসহ বহু অভিযোগ। বিশেষ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহে হয় মহাচুরি। মূলত এনসিটিবিতে দুর্নীতির মূল জায়গায় হলো পাঠ্যবই ও কাগজ কেনার দরপত্র প্রক্রিয়া এবং বিভিন্ন কাজের কমিটি গঠনে দাবি করেছে দুনীতি দমন কমিশন। ২০২২ সালের জুলাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইইডিকে পাঠানো সুপারিশপত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। সেই সুপারিশে বোর্ডে কর্মরত কর্মকর্তাদের কেউ কেউ স্বনামে ও বেনামে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মালিক বনে গেছেন বলেও উল্লেখ করেছে দুদক।

২০২২ সালের সুপারিশ আমলে না নিয়ে একই কায়দায় এখনো এনসিটিবিতে চলছে ই- টেন্ডার বাণিজ্য। ফলে  ঝুঁকিতে পড়েছে  মুদ্রণ শিল্প। মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন এ শিল্পের সাথে জড়িত হাজারো ব্যবসায়ি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু এনসিটিবি কর্মকর্তাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।

মুদ্রণ শিল্পের সাথে জড়িত একাধিক ব্যবসায়ি জানিয়েছেন, আমরা বিগত দশ (১০) বছর যাবৎ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহের কাজ দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সফলতার সাথে করে আসছি। এ শিল্পের সাথে জড়িত প্রায় ছোট-বড় ৪০০টি প্রতিষ্ঠান সরকারের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে কাজ করে যাচ্ছি, ফলে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী মুদ্রণ শিল্প তৈরি হয়েছে। কিন্তু ২০২০-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত দরপত্রে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত হিসেবে কোয়ালিফিকেশন ক্রাইটেরিয়ায় পূর্ববর্তী বছরের কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় কাজের মূল্যের ৩০-৪০ শতাংশ। বিগত ৫ বছরের দরপত্রে যেসব অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিলো তা সব মুদ্রণ ব্যবসায়িদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিলো। ফলে দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে সকলেই। দরপত্রের সুসম প্রতিযোগিতা ও সমঅধিকার নিশ্চিত হয়েছে।

অথচ ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ১ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির দরপত্রে পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে লটের মূল্যের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ অধিক, যা অধিকাংশ মুদ্রণ ব্যবসায়ির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে, হাতে গোনা ৫-১০ টি প্রতিষ্ঠান ছাড়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে।  ফলে এইসব মুদ্রণ ব্যবসায়িরা মনে করছেন, হাতে গোনা ৫-১০টি প্রতিষ্ঠানের কাছে এনসিটিবি জিম্মি হয়ে যাবে, যথাসময়ে কাজ উঠানো চ্যালেঞ্জিং হবে এবং বাকি ব্যবসায়িরা কাজ না পাওয়ার ফলে এ মুদ্রণ শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পাশাপাশি সিন্ডিকেট করে দরপত্রের দর বিগত সময়ের চেয়ে প্রায় ২০-৩০% বেশি অর্থাৎ, প্রায় ২ শত কোটি হতে ৩ শত কোটি টাকা লুটপাটের নীল নকশা আঁকা হয়েছে বলেও মনে করছেন মুদ্রণ শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়িরা।  ব্যবসায়িদের দাবি, এটি  অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের সাথে সমআচরণের পরিপন্থী।

ব্যবসায়িরা বলছেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর উদ্দেশ্য হলো সরকারী তহবিলের অর্থদ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং উক্তরূপ ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সব ব্যবসায়ির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চত করা। কিন্তু এনসিটিবির উর্ধতন কমকর্তা বর্তমান নির্দেশে দরপত্র দলিল প্রস্তুত কমিটি, উৎপাদন নিয়ন্ত্রক ও আইসিটি সেলের সহকারী মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার (ভারপ্রাপ্ত প্রোগ্রামার) নির্দিষ্ট সংখ্যক ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য যোগসাজসে এ ধরনের শর্ত আরোপ করেছে। সহকারি মেইনট্যানেন্স ইঞ্জিনিয়ার মো: সালাউদ্দিন লেনদেনের বিনিময়ে এ শর্ত দেওয়ার বিষয়ে সকলকে প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুর্নীতির মাধ্যমে গত বছর এ সিন্ডিকেটটি অনেককে কাজ পাইয়ে দিয়েছে এবং এ থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারি মেইনট্যানেন্স ইঞ্জিনিয়ার মো: সালাউদ্দিন প্রতিবেদককে বলেন, প্রথমত আমার কথা বলা নিষেধ। উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া আমি কথা বলতে পারবো না। আপনি আমার উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলুন। দ্বিতীয়ত. আমি যা করেছি, তার অফিসের নির্দেশেই করেছি। ব্যক্তিগতভাবে কোন উদ্যোগ নেই নাই।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোডের সদস্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব, চেয়ারম্যান) প্রফেসর মশিউজ্জামান প্রতিবেদককে জানান, নির্দেশিকা মোতাবেক টেন্ডার ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা সচেতনভাবেই সকলেই যাতে সমানভাবে বিড করতে পারে সে ব্যবস্থা রেখেছি। আর পক্ষপাতিত্বের কোন সুযোগ এখনো তৈরি হয় নি। আগামী ২৫ জুনের পর আমরা জানবো কতজন টেন্ডারে অংশ নিয়েছেন। পক্ষপাতিত্বে অভিযোগ তাই অমূলক বলে প্রতিবেদককে তিনি জানান।

এদিকে, ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকল ব্যক্তির প্রতি সম-আচরণ ও অবাধ প্রতিযোগিতা নিশ্চত করতে এবং এ দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরূদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়িরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »