সন্দ্বীপ, (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
"নিজেরা থাকেন চট্রগ্রাম শহরে , স্কুল চালান ‘প্রক্সি শিক্ষিকা’ দিয়ে। নিজের খেয়াল খুশি মতো মাসে দুই-একদিন বিদ্যালয়ে যান শিক্ষিকা । তার পরিবর্তে ক্লাস নিতে রেখেছেন একজন প্রক্সি শিক্ষিকা। বিগত ১২-১৪ বছর যাবত এমনই ঘটনা ঘটে আসছে চট্রগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের মধ্য মাইটভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এসব অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কিশোয়ারা সুলতানা সুমি'র বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, স্কুলটিতে সরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষিকা না পড়িয়ে তিনি থাকেন শহরে। আর দীর্ঘ ১২বছর স্কুল চালান প্রক্সি শিক্ষিকা জমিলা বেগম কে দিয়ে। এতে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মধ্য মাইটভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঘরে বসে বেতন ভাতা সহ ভোগ করে আসছেন অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা এই শিক্ষিকা। স্কুলে নিয়মিত না এসে ‘অন্য’কে দিয়ে এভাবে ক্লাস করানোয় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, এই শিক্ষিকার বাড়ি মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন (৮) নং ওর্য়াডে, তিনি একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সহধর্মিনী। শিক্ষিকার স্বামী প্রভাবশালী হওয়ায় এই বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেন না প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্যরা । তিনি নিয়মিত স্কুলে না আসায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রক্সি শিক্ষিকা দিয়ে স্কুলের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন বাকি শিক্ষকরা। বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা অফিসের দূরত্ব হওয়ার কারণে সেখানে শিক্ষা অফিস বা প্রশাসনের তেমন নজরদারি না থাকায় এমন সুযোগ নিচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বললে তারা জানায়, ‘বহুবার বলা হয়েছে শিক্ষকদের, তারা নিজেদের মতো করে স্কুল চালাচ্ছেন। শহর থেকে দূরে বলে এখানে দেখার কেউ নেই। আমাদের শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষকরা আমাদের কথা শোনেন না। ভাড়াটিয়া শিক্ষিকা দিয়ে বাচ্চাদের লেখাপড়া করাচ্ছে । কী শিক্ষা পাচ্ছে ওরা, একবার ভাবেন। বহুদিন আগে শহর থেকে একবার অফিসাররা আসছিল, তারপর আর খোঁজ নিতে আসেনি কেউ।’
এই বিষয়ে প্রক্সি শিক্ষিকা জমিলা বেগমের কাছে জানতে চেয়ে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি একটু ব্যস্ত আছি, আমি আপনাকে এই বিষয় নিয়ে মোবাইলে কথা বলতে পারবো না, আপনি কোথায় আছেন সরাসরি দেখা করেন। প্রক্সি শিক্ষিকা দিয়ে ক্লাস নেওয়ার কথা টি তিনি এড়িয়ে যান এবং পরে কল দেবে বলে ফোনের লাইন কেঁটে দেন। এরপর একাধিকবার কল করেও ওনাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম বলেন : বিষয়টি আমরা অভিযোগ পেয়েছি, আমাদের সহকারী শিক্ষা অফিসার কে তদন্তর দায়িত্বে দিয়েছি , তিনি আরও বলেন তদন্তে প্রামাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রক্সি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
সম্পাদক: মোহাম্মদ মাসুদ। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: আজাদ টাওয়ার, ৪৭৬/সি-২, ডি,আই,টি রোড (৭ম তলা), মালিবাগ রেলগেইট, ঢাকা -১২১৯। ফোনঃ ০২-৪৮৩২২৫২১, ০১৫১১-৯৬৩২৯৪,০১৭২৪৭৯৯৫১৬ ই-মেইলঃ dailysobujbangladesh@gmail.com
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 2008-2023