1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
সার কেলেঙ্কারিতে জড়িত মানুষরুপী রাসেল ভাইপার - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ১:৩৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে দ্বিতীয় মেয়াদে জেনিথ লাইফের শিক্ষার্থী বিমা চুক্তি স্বাক্ষর সখিপুরের ১’৭২ মিটার কাঁচা রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন বহিরাগতদের প্রতিহিংসার শিকার উত্তরা প্রেসক্লাবের নেতারা আলাদীনের চেরাগ সাব-রেজিস্ট্রার অসীম কল্লোলের হাতে! দেড় মাসে আড়াই হাজারের বেশি অবৈধভাবে মোবাইল এনেছে তারা কুমিল্লা মিডিয়া ফোরামের নতুন নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে যে কোন পরিণতির জন্য তৈরি থাকুন- ফখরুল ইসলাম  টঙ্গীর কেরানীরটেক বস্তির মাদক ব্যবসা নারীদের নিয়ন্ত্রনে, জনমনের প্রশ্ন তারা কি আইনের উর্দ্ধে? পূর্ব শত্রুতার জের ধরে  দোকানে চুরি, গ্রেফতা গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড বাসস্ট্যান্ডে হকার আলম অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড বসিয়ে করছেন চাঁদাবাজি
সার কেলেঙ্কারিতে জড়িত মানুষরুপী রাসেল ভাইপার

সার কেলেঙ্কারিতে জড়িত মানুষরুপী রাসেল ভাইপার

আজিজুর রহমান বাবু, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

দেশের প্রতিটি সেক্টরে দূর্নীতি স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাবে ছেয়ে গেছে। সচিবালয় থেকে তৃনমূলের কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত সর্বত্র দূর্নীতির কালো থাবা গ্রাস করে আছে।

এসব অনিয়ম থেকে মুক্তির জন্য তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে। এঁদেরকে সহযোগিতা করবে শক্তিশালী প্রশাসন ব্যবস্থা। জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে — নিতে হবে যুগোপযোগী পদক্ষেপ।

পদক্ষেপ নেওয়ার সাথে সাথে সঠিক মনিটরিং ব্যবস্থার পদ্ধতিগত গতানুগতিক ধারা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক খবরদারি মু্‌ক্ত প্রশাসন সরকারী দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সতর্কতা সহ সর্বক্ষেত্রে কঠোর নজদারি বৃদ্ধি করলে দূর্নীতির লাগাম কিছুটা হলেও কমতে বাধ্য।

সম্প্রতি ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরকুমারিয়া ইউনিয়নে ৩০ বস্তা সার কেলেংকারীর ঘটনায় যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তা চরম ভাবে লোক সমাজে নিন্দিত হয়েছে।
সাংগঠনিক ভাবে বলেন আর সামাজিক ভাবেই বলেন বিষয়টি বিতর্কিত। এসব অবান্চিত ঘটনা বিজ্ঞমহলে নিন্দার ঝড় বইয়ে দিয়েছে । প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে জনসেবকের সার্বিক চরিত্র নিয়ে। বাস্তবতায় কোন পক্ষের জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না । হবে শুধু মুখরোচক সংবাদ মাত্র।

তারপরও কিছু কিছু ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথেই।

” রিভেঞ্জ অব নেচার ” বলে ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার সময়ের পরিবর্তনে সেই ক্ষমতাই আপনাকে প্রতিশোধ নেয় – এটিই প্রকৃতির নিয়ম।সময় থাকতে জনসেবকরা সেটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন।

সার কেলেংকারীর সূত্রপাত যে যেভাবে শুরু হলো —

চরকুমারিয়ার মোল্লার বাজারে ৩০ বস্তা সরকারী সার বিক্রির উদ্দেশ্যে আনা হয়। নসীমন চালক মনির প্রধান সড়কে পৌছালে প্রত্যক্ষদর্শী জনৈক মনোয়ার মোল্লা ফলো করেন। চালকের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাত্ক্ষণিক চ্যালেঞ্জ ছুড়লে ৩০ বস্তা সার সহ নসিমন আটকিয়ে রাখেন । পাশ্ববর্তী দোকানদার সহ উৎসুক জনতা বিষয়টি গভীর ভাবেই পর্যবেক্ষণ করছেন ।

আটক ৩০ বস্তা ও নসিমন সহ রাস্তার পাশেই অবস্হান ছিল। ইতিমধ্যে মনোয়ার হোসেন মোল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুল হক মোল্লাকে মোবাইলে সংবাদ দিয়ে ঘটনাস্থলে আসার জন্য অনুরোধ করেন এবং তিনি তাত্ক্ষণিক হোন্ডা যোগে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন।

যখন স্হানীয় জনতা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে আনিত ৩০ বস্তা সার সহ আটকায়। তখন নসিমন চালক মনির মোল্লা পালিয়ে যায়। চালকের মনে ভয় ছিল বলেই আটককৃত সারের বস্তা রেখেই দ্রুত স্হান ত্যাগ করে।

এই সংবাদ চাউর হওয়ার সাথে সাথে বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল মোল্লা ঘটনাস্হলে না এসে তাঁর ই সহোদর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সখিপুর থানা আওয়ামি লীগের সভাপতি হুমায়ুন কবির মোল্লা ঘটনা স্হলে হাজির হন। স্হানীয় জনতা কতৃক আটককৃত সার এবং নসিমনকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়ার জন্যে তিনি উদ্যত হলে, স্হানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুল মোল্লা বলেন – ” ৩০ বস্তা সারসহ ও নসিমন রাস্তার একপাশে থাকবে, প্রশাসনকে খবর দিয়েছি যথারীতি তাঁরা আসলে আটককৃত বস্তা ও নসিমন হস্তান্তর করবো “। এমন কথায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্লা সহমত পোষণ না করে দাম্ভিকতা পূর্ণ আচরণ প্রদর্শন পূর্বক অনেকটা ধমকের সুরে বলেন – ” আমি নসিমন নিয়ে যাবো পারলে ঠেকাইয়েন “। তখনই সৃষ্টি হয় জটিলতা বাকবিতন্ডা। পাশ্ববর্তী উপস্থিত জনতা প্রতিবাদ করলে তাঁদেরকেও কঠোর ভাষায় নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। ঘটনার এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা ধাওয়া করলে হুমায়ুন কবির মোল্লার আস্হাভাজন কথিত ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার দানু হাওলাদারসহ অজ্ঞাত সমর্থকরা নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।

ঘটনার শুরু হতে – হুমায়ুন মোল্লা ধাওয়া খাওয়ার হওয়ার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত কোথাও বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মোল্লার উপস্হিতি পাওয়া যায়নি ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন — নীতিগত ভাবে বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মোল্লা উত্তেজিত জনতার কাছে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দেওয়ার অধিকার ছিল।পরিস্হিতি শান্ত করা একান্ত কর্তব্য ছিল। বাস্তবে সেটি না হয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হুমায়ুন কবির মোল্লা কঠোর ভাষা প্রয়োগ করেন এবং উত্সুক জনতাকে ক্ষিপ্ত করে তোলেন যা মোটেও শোভনীয় হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে স্হানীয় জনমতে জানা গেছে মোজাম্মেল মোল্লা কাগুজে কলমে চেয়ারম্যান হলেও নেপথ্যে চরকুমারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানশীপ নেপথ্যে পরিচালনা করেন স্বয়ং হুমায়ুন কবির মোল্লা।

বিষয়বস্তুর আলোকে এবং সিসিটিভি ফুটেজে নিশ্চিত ভাবে প্রতীয়মান হয়েছে আদতে বিক্রির উদ্দেশ্যেই সারের বস্তা বাজারে আনা হয়েছিল । দেখে শুনে এমন অপকর্মকে তিনি কেন প্রক্সি দিতে গেলেন যা মোটেও আইনসিদ্ধ ছিলো না। স্বাভাবিক বিবেচনায় সেখানে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্লার ঘটনাস্হলে যাওয়াই মোটেও উচিত হয়নি। আত্ম-সম্মান বোধের তাগিদে হলেও সংগঠনের কথা ভেবে উক্ত স্হান থেকে সরে যাওয়াই একান্ত কর্তব্য ছিল। কেননা তাঁর ব্যক্তিগত আচরণ জনগনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল বিধায় স্হানীয় জনতা পাত্তা দিত না।

অবস্হা দৃষ্টে দেখা যায় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সার বিতরণ না করে বাজারে সার বিক্রির পূর্বাপর কৌশলগত আলোচনা ৭নং ওয়ার্ডের দানু মেম্বার মোবাইল ফোনে আগেই সেরে রেখেছিলেন। নসিমন চালক মনির মোল্লা ছিলো হুকুমের চাকর মাত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক প্রত্যক্ষ দর্শী জানান, ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার দানু হাওলাদার হওয়ার আগে হুমায়ুন কবির মোল্লার ব্যক্তিগত হোন্ডা চালক ছিলেন । তাঁর ই সান্নিধ্যে এবং আনুকল্যে থেকে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন।

উপজেলা উপসহকারী পাট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ডিবিসি নিউজে বলেছেন ৬৭ বস্তা সার প্রেরণের অসুবিধা কারণে তিন ভাগে সার প্রেরণ হয় আজকের ৩০ বস্তা তারই অংশ । ডিবিসি’র জবাবদিহিতে তাঁর স্বচ্ছতা পাওয়া যায়নি। উক্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফেলতি করার কারণে অপকর্মে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি কোন ভাবেই এই অবহেলার দায় এড়াতে পারেন না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন – উপযুক্ত মনিটরিং এর অভাবে এসব কান্ড অহরহ ঘটে থাকে এবং উপজেলার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এমন অপকর্মের সুযোগ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি কর্মকর্তাদেরও পকেট ভারী হয়।

বর্তমান সরকারের চাষীদের কৃষি উত্পাদনে বিনামূল্যে বীজ ও নানাবিধ সার বিতরণের কর্মকান্ডকে নেতিবাচক প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করছেন দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা যা তৃনমূল প্রান্তিক চাষীদের নিরুৎসাহিত করার সামিল।

বিজ্ঞমহলে প্রশ্ন উঠেছে – চরকুমারিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মোল্লা ঘটনাস্হলে কেন উপস্হিত থাকতে পারলেন না ? তাঁর অনুপস্থিতি সামাজিক ভাবে কী বার্তা বহন করে ? তা সহজেই অনুমেয়। ৩০ বস্তা সার নিয়ম মেনে বিতরণ না করে জনগনের সাথে যে প্রতারণা করেছেন সেই লক্ষ্যে মোজাম্মেল হক মোল্লা কী জবাব দেবেন ?

প্রতিবেদকের ভাষ্য –

প্রাথমিক ভাবে ভিডিও ক্লিপ এবং সিসিটিভি ফুটেজে প্রতীয়মান হচ্ছে সার কেলেঙ্কারির কুশীলবরা অত্যন্ত পরিপক্কতার সাথেই তাদের বানিজ্যে সফল হতে চেয়েছিলেন কিন্তু নসিমন চালক মনির মোল্লার নির্বুদ্ধিতার কারণে সব ভেস্তে গেলো।

ঘটনার হিরো হিসাবে মনোয়ার হোসেন মোল্লার সাহসী উচ্চারণ ও ভিডিও ক্লিপে স্বীকারোক্তি আদায়ের কৌশল স্হানীয়দের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

আমাদের সমাজে এমন সাহসী তরুন দৃঢ়তার সাথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হলে দূর্নীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার সক্ষম হবেন – এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »