তারিখ লোড হচ্ছে...

সাবেক মেয়র আতিক রিমান্ড শেষে কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার: 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর বাসস্ট্যান্ডে বকুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহতের মামলায় তার বিরুদ্ধে এই আদেশ দেন আদালত।

শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত এ আদেশ দেন।

এদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আতিককে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা জোনাল টিমের পরিদর্শক মাহমুদুর রহমান।

আবেদনে বলা হয়, এ আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াধীন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আতিকুল ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থনপুষ্ট ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ছিলেন। ঘটনার দিন ১৭ জুলাই এ আসামির নির্দেশে তার অধীনস্থ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্রজনতার মিছিল বানচালের চেষ্টায় শান্তিপূর্ণ মিছিলে আন্দোলন চালিয়ে আসামিদের কাছে থাকা বৈধ-অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি গুলি চালিয়েছে মর্মে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। মামলার তদন্ত চলমান। এ অবস্থায় জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। উত্তরা পূর্ব থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর আতিকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ১৬ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা থেকে আতিককে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। পরদিন মোহাম্মদপুর থানার পৃথক তিন হত্যা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর বকুল মিয়া হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর বাসস্ট্যান্ডে বকুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। ১৯ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বকুল মিয়া। এ ঘটনায় তার স্ত্রী মোছা. মনিকা আক্তার উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন।

 

সবা:স:জু-১৬৫/২৪

আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই

স্টাফ রিপোর্টার//

মা মারা গেছে, আব্বুকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমরা কার কাছে থাকব? কে আমাদের দেখাশোনা করবে?

এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে নিজেদের দুঃখের কথা বলছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার ১৩ বছরের ছেলে সাজ্জাদ মিয়া। ছয় বছর বয়সী বোন আফসানা আক্তার, এক মাস বয়সী যমজ বোন আনিশা ও তানিশাকে নিয়ে এখন দিশেহারা শিশুটি।

জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর যমজ সন্তান জন্মের এক সপ্তাহ পর মারা যান সাজ্জাদের মা সাথী বেগম। মায়ের মৃত্যুর পর তাদের বাবা জামাল মিয়া তার ৪ সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে দেখাশোনা করতেন। তবে গত ৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় দিনমজুর জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায় পুলিশ। এরপর মা হারা শিশু সাজ্জাদদের আশ্রয় এখন অশীতিপর অসুস্থ দাদি গোলজান বেগমের কাছে। তবে শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের ভারে নিজেই ভালোভাবে চলতে পারেন না গোলজান বেগম। ফলে তিন বোনদের নিয়ে দিশাহারা সাজ্জাদ। অভিভাবক না থাকায় পড়ালেখাও বন্ধ হতে চলেছে স্থানীয় এম এম খান উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাজ্জাদ ও ৪৭ নম্বর চিত্রাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা আক্তারের।

শিশু সাজ্জাদ মিয়া বলে, কয়েক দিন পরেই আমার বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। আমার স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি কে দেবে? আমার এক মাস বয়সী দুই বোনের দুধের টাকা কে দেবে? বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাদের খাবার দিচ্ছে, এভাবে কত দিন চলবে? আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই।

সাজ্জাদের নানি শাহিনুর বেগম বলেন, মাস খানেক আগে আমার মেয়ে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ছয় দিন পর মারা যায়। মেয়ে মারা যাওয়ার পর আমার জামাতা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। চার ছেলে-মেয়ে ও তার মাকে দেখাশোনা করত। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। কী অপরাধ করেছিল আমার জামাতা? সে দিনমজুরের কাজ করত। এ দেশে কোটি কোটি টাকা যারা লুটে খেয়েছে, তারা তো দিব্যি ভালো আছে। অবুঝ চারটি বাচ্চা নিয়ে কী করব আমরা? আল্লাহ এই মাসুম বাচ্চাদের কপালে এত কষ্ট দিয়ে পাঠাল?

সাজ্জাদের চাচা মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই। একসময় সে আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। এখন জামালের চার শিশুসন্তানকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে আমরা জেনেছি।

সবা:স:জু-১১০/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম