তারিখ লোড হচ্ছে...

চার দিনে ভারত থেকে ৪১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারত থেকে আরও ৬ ট্রাক (১০০ মেট্রিক টন) চাল আমদানি হয়েছে। এ নিয়ে গত চার দিনে ভারত থেকে ৪১০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) থেকে চাল আমদানি শুরু হয় এ বন্দর দিয়ে। এভাবে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলে দেশের বাজারে দাম কমে আসবে বলে দাবি আমদানিকারকদের।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে ভারত থেকে চাল বোঝাই ৬ টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১৪ জন আমদানিকারকের অনুমতি থাকলেও তিনদিনে মেসার্স মাহবুবুল আলম ফুড প্রোডাক্ট, মেসার্স অর্ক ট্রেডিং, মেসার্স এস এম এস এন্টারপ্রাইজ এবং মেসার্স সর্দার ইন্টারন্যাশনাল নামের চারটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চাল আমদানি করছেন। যা ভারতের সুধারাম আয়াত নিরায়াত প্রা: লি:, কৃষ্ণা ট্রেডার্স এবং তপন ট্রেডার্স নামের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান চাল পাঠাচ্ছে। তিনদিনে ১৫টি ট্রাকে ৫২০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। আরও আসার কথা রয়েছে। প্রতি টন চাল ৪৩০ মার্কিন ডলার মূল্যে আমদানি করা হয়েছে।

সারাদেশে খুচরা বাজারে খাদ্যশস্যের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার বেসরকারি খাতকে এক মাসের মধ্যে ৫ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করার অনুমতি দিয়েছেন।

গত ১৩ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. লুৎফর রহমানের সই করা এক অফিস আদেশে এ অনুমতি দেওয়া হয়। মোট ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে এই চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, মোট চালের মধ্যে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করতে হবে। যা ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে চাল বাজারজাত করতে হবে ।

বেনাপোল স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, চাল আমদানিতে শুল্ক আরোপ থাকার কারণে বন্দর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকার চাল আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলে আমদানির উদ্যোগ নেন আমদানিকারকরা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। আমরা আইপি হাতে পাওয়ার পরই এলসি খুলে ভারতে সেই কপি দেওয়ায় বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে দেশের বাজারে চালের দাম কমে আসবে।

উল্লেখ্য, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সর্বশেষ গত ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর চাল আমদানি হয়েছিল। আগে চাল আমদানিতে শুল্ক ৬২.৫ ভাগ থাকার পরে তা কমিয়ে আমদানি শুল্ক ২৫ ভাগ নির্ধারণ করে সরকার। সর্বশেষ গত ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে বিরাজমান শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করে নেয় সরকার।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, চাল আমদানির অনুমতির আইপি দেওয়ায় সারাদেশে ১০২ জন আমদানিকারক চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে। তার মধ্যে যশোরের মেসার্স মাহবুবুল আলম ফুড প্রডাক্ট এবং মেসার্স অর্ক ট্রেডিং কোম্পানি ১০৫ মেট্রিক টন করে দুইশ ১০ মেট্রিক টন, এস এম এম এন্টারপ্রাইজ ১০০ মেট্রিক টন চাল ইতোমধ্যে বন্দর থেকে খালাস নিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সর্দার ইন্টারন্যাশনাল নামে এক আমদানিকারকের ৬ ট্রাক চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। যা আগামীকাল বন্দর থেকে খালাস নিবেন বলে জানা গেছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী রতন জানান, গত চার দিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৪১০ মেট্রিক টন চাল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। কাস্টমস থেকে শুল্কায়নের পর কাগজপত্র দেখে দ্রুত ছাড় দেয়া হচ্ছে।

সবা:স:জু-১৬৮/২৪

বড় পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ডেস্ক রিপোর্ট: ‎

দেশের ব্যাংকখাতের তদারকিতে সময়োপযোগী এবং মৌলিক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। লক্ষ্য হচ্ছে তদারকি ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, কার্যকর ও আধুনিক করে তোলা। এ জন্য ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (রিস্ক বেসড সুপারভিশন) ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে পর্যায়ক্রমে এ নতুন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে।

এরই মধ্যে কিছু ব্যাংকে পরীক্ষামূলকভাবে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি চালু করা হয়েছে এবং তা ইতিবাচক ফল দিয়েছে। তাই আসছে জুলাই থেকে ধাপে ধাপে সব তফসিলি ব্যাংকে এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই নতুন তদারকি কাঠামোর আওতায় প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক, বাজার, পরিচালনাগত, আইনগত এবং কৌশলগত ঝুঁকি আরও সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। সেই ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও দ্রুত নেওয়া যাবে। এতে প্রতিটি ব্যাংকের কার্যক্রম আলাদাভাবে মূল্যায়ন এবং ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোয় দ্রুত হস্তক্ষেপ করা সহজ হবে।

নতুন কাঠামো বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সংগঠনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। নতুনভাবে গঠন করা হবে একাধিক তদারকি বিভাগ, যেমন — তদারকি নীতিমালা ও সমন্বয় বিভাগ, তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ব্যাংকিং তদারকি বিভাগ, এবং অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধবিষয়ক ঝুঁকি তদারকি বিভাগ। এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য থাকবে পৃথক তদারকি দল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এই পরিবর্তন সফল করতে তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি তফসিলি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের জন্যও বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাগুলো কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।

তদারকিকে তথ্যনির্ভর করতে তৈরি করা হচ্ছে নতুন তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থা। একটি কেন্দ্রীয় তদারকি তথ্য প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে যার মাধ্যমে দেশের যে কোনো ব্যাংকের ঝুঁকির চিত্র সহজে বিশ্লেষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা, এই রূপান্তরের ফলে ব্যাংক খাতে জবাবদিহিতা আরও শক্ত হবে। একই সঙ্গে তদারকি কার্যক্রম হবে ফলপ্রসূ এবং প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তিও আরও মজবুত হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনে সব অংশীজনের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ কামনা করেছে। যাতে সম্মিলিতভাবে একটি আধুনিক, ঝুঁকিসচেতন এবং টেকসই ব্যাংকিং পরিবেশ গড়ে তোলা যায়।

 

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম