তারিখ লোড হচ্ছে...

গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে  তদন্ত শুরু 

স্টাফ রিপোর্টার:

গোপালগঞ্জে দূর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন  কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার শপথ বৈরাগী এর কার্যালয়ে সকাল ১১টায় এ তদন্ত কার্যক্রমের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অভিযুক্ত পিআইও আলাউদ্দিন স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন। এর পূর্বে গত ২০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ০৫.৩০.৩৫০০.০০৫.৩২.০৯১.১৯-৯২৬ নং স্বারকে সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে পিআইও মোঃ আলাউদ্দিনকে তার স্বপক্ষের স্বাক্ষী প্রমাণ সহ শুনানীতে উপস্থিত থাকতে নোটিশ দিয়েছিলেন।

এছাড়াও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠা এই পিআইওকে ইতিমধ্যেই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা হতে
ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় বদলির নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার শপথ বৈরাগী জানান  আমি জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর হওয়া অভিযোগের তদন্ত করছি। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে অভিযোগের বাদী ফোরহাদ হোসেন এবং বিবাদী মোঃ আলাউদ্দিনকে নোটিশ করে ছিলাম উভয় পক্ষই উপস্থিত হয়েছিলেন। এর মধ্যে অভিযোগকারী তার মতামত জানাতে এক সপ্তাহের সময় নিয়েছেন।

আলোচিত এই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)’র বিরুদ্ধে গত ২৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ফোরাদ হোসেন নামের এক ইট ভাটা ব্যবসায়ী বিভিন্ন পর্যায়ের দূর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক, দূর্নীতি দমন কমিশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

অভিযোগ পত্রের বর্ণনা থেকে জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আলাউদ্দিন  ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে মুজিব বর্ষের ঘর নির্মাণের জন্য ফোরাদ হোসেনের মালিকানাধীন ইটের ভাটা থেকে ইউএনও এর নির্ধারণ করা মূল্যে নগদ ও বাকিতে ইট সরবরাহ করেন। যার হিসাব-নিকাশ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে অফিসিয়াল ভাবে শেষ হয়।  কিন্তু মাদকাসক্ত, দূর্নীতিবাজ ও প্রতারক পিআইও আলাউদ্দিন দুই বছরের ইট বিক্রয়ের লভ্যাংশের কমিশন নেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতারণার আশ্রয় নেয়। ব্যবসায়ী ফোরাদকে ১০লক্ষ টাকা ধার দেওয়ার মন গড়া গল্প সাজায়। গত ৯ আগস্ট তার অফিসের কার্য-সহকারী মোঃ কামরুল ইসলাম এর ০১৭১০৫২২১৫৪ মোবাইল নম্বর থেকে ফোরাদ হোসেনকে ফোন করে ১০ লক্ষ  টাকা ফেরত চান। ফোরাদ টাকা ধার নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলে পিআইও আলাউদ্দিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, আমি তোর কাছে ধারের টাকা পাবো ১০ লক্ষ। তোর পুরো ১০ লক্ষ টাকাই দিতে হবে। যদি ভালোভাবে টাকা না দিস তোর চেহারা পাল্টে যাবে। এভাবে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪-৫ মিনিট কথা বলে ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত ঐ ব্যবসায়ী কে গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন চিহ্নিত মাস্তান ও রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে ফোনে ও সরাসরি ভয়-ভীতিসহ বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।

অভিযোগে আরো জানা যায়, প্রভাবশালী এই পিআইও দীর্ঘদিন ধরে গোপালগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ ও নিজ দপ্তরের বড় বড় কাজের ঠিকাদারি করছেন। কৌশল হিসেবে তিনি বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স এর নাম ব্যবহার করে আসছেন। এছাড়াও পিআইও আলাউদ্দিন ২০২০ সালে মুজিব বর্ষের ঘর তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছিল। তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তার দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর একাধিক তদন্ত হলেও আলাউদ্দিনের দূর্নীতির চেরাগ কেউই নিভাতে পারেনি। অবৈধ টাকার গরমে উল্টো বেড়েছিল তার নারী নেশা ও মাদক সেবনের আড্ডা। এছাড়াও ২০২২ সালে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিজ দপ্তরের পিয়ন আলী আহাম্মদ শিকদারের সুন্দরী স্ত্রী খাদিজা বেগম কে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ১৫১/২২ নং মামলা হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও তার পোষা মাস্তান বাহিনীর সহায়তায় ভিকটিম পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করে ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে মামলার দফারফা করেন।

গোপালগঞ্জ জেলা জুড়ে জনশ্রুতি আছে পিআইও মোঃ আলাউদ্দিন প্রথমে কাশিয়ানী ও পরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় এসে অবৈধভাবে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ ও চেয়ারম্যান – মেম্বরদের কাছ থেকে উৎকোচ নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। যা তিনি গোপালগঞ্জ ও নিজ জেলা কুষ্টিয়ায় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও ব্যবসায়ী বন্ধুদের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। ঢাকায় কিনেছেন ফ্লাট, কুষ্টিয়ায় রয়েছে একাধিক প্লট ও গ্ৰামে কিনেছেন প্রচুর পরিমাণে কৃষি জমি। তার  নামে বে-নামে রয়েছে একাধিক ব্যাংক একাউন্ট। এছাড়াও স্ত্রী সন্তান ও নিজ নামে রয়েছে বড় অংকের ফিক্সড ডিপোজিট থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন।

চুলা জ্বলছে না, গ্যাস সংকটের উন্নতি হতে পারে আজ থেকে

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গ্যাস সংকটে ঢাকা শহরের অধিকাংশ বাসাবাড়িতেই ঠিকমতো চুলা জ্বলছে না। পাশাপাশি কলকারখানা, সিএনজি স্টেশন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সব খাতেই ভয়াবহ সংকট চলছে। পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ বলছে, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের জন্য একটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্যাস সরবরাহ কমেছে। তবে আজ রোববার থেকে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, রামপুরা, আজিমপুর, উত্তরা, বনশ্রী, ধানমিন্ড, শংকর, বাসাবো, পুরান ঢাকা, মিরপুর, নাখালপাড়া, ফার্মগেট, আগারগাঁও, কলাবাগান, খিলগাঁও, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুরসহ ঢাকার অধিকাংশ এলাকার বসতবাড়িতেই গ্যাস সংকট চলছে। বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডার কিংবা বৈদ্যুতিক চুলার ব্যবহার বাড়ছে।

মালিবাগের বাসিন্দা ফারজানা ইয়াসমিন জানান, দিনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় রাতেই পরের দিনের সব রান্না শেষ করতে হয়। এর পর ভোরে উঠে তাড়াতাড়ি রাতের রান্না গরম করতে হয়। কারণ, সকাল ৭টার পরই চুলা জ্বলে না। লাইনে গ্যাস সরবরাহ প্রায় নাই হয়ে যায়। এই গ্যাস আসে বিকেল ৩-৪টার দিকে। কিছুক্ষণ থেকে ফের চলে যায়, আসে রাত ১০টার দিকে। কিন্তু গত তিন দিন ধরে রাতেও গ্যাস থাকছে না। ইলেকট্রিক চুলায় রান্না করতে হচ্ছে।

শুধু বাসাবাড়িতেই নয়, সংকট চলছে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ৭৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৮৫ কোটি ঘনফুট। গ্যাস ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। ফলে এই শীতেও অনেক এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে বলে জানা গেছে।

গ্যাস সংকটে দুর্ভোগের কথা জানিয়ে রাজধানীর পল্লবীর বাসিন্দা রেজিনা খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় গ্যাস নাই হয়ে যায়। সন্ধ্যায় ছিল দেড় ঘণ্টা। শুক্রবার সকাল ৭টায় উঠে আধা ঘণ্টায় কোনো রকমে তিন কাপ চা করা গেছে। তার পর থেকে গ্যাস হাওয়া! গত কয়েক দিন ধরে গ্যাসের এমনই অবস্থা, রান্না করাই মুশকিল হয়ে গেছে।’

দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলা দিনে সরবরাহ করে ২৮৫ কোটি ঘনফুট। অর্থাৎ, ঘাটতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ঘনফুট। কক্সবাজারের মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান দুটি টার্মিনালের মধ্যে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য একটি থেকে টানা তিন দিন (গতকাল পর্যন্ত) এলএনজি সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে গ্যাস সংকট আরও বেড়ে যায়। তিন দিন ধরে ৩৫ কোটি ঘনফুট সরবরাহ কমেছে। শনিবার ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিয়েছে পেট্রোবাংলা।

জানতে চাইলে শনিবার সন্ধ্যায় তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ সমকালকে বলেন, ঘাটতির মধ্যেই একটি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় সংকট আরও বেড়ে গেছে। তবে শনিবার টার্মিনালটি চালু হওয়ায় গ্যাস সরবরাহ ধীরে ধীরে বাড়ছে। রাতেই মধ্যেই এলএনজি সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।

রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির (আরপিজিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) শাহ আলম বলেন, শনিবার সকালে এলএনজি টার্মিনালটি চালু হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ হয়েছে।
সবা:স:জু- ৬৪৯/২৫

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম