তারিখ লোড হচ্ছে...

ইমরান ও বুশরা বিবিসহ ৯৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্টাফ রিপোর্টার:

 

পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান, তার স্ত্রী বুশরা বিবি ও খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গন্ডাপুরসহ দলটির সংশ্লিষ্ট ৯৬ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ইসলামাবাদের একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি)।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে সম্প্রতি তার দল পিটিআইয়ের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সোমবার (২ ডিসেম্বর) এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।

বিগত এক বছরের বেশি সময় ধরে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে আরও অনেক মামলা রয়েছে যেগুলোতে এখনও তিনি জামিন পাননি। এছাড়া তাকে আরও ৭টি নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

সোমবার ইমরান খানকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে নতুন সাতটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে পুলিশের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনায় দেশটির বিভিন্ন থানায় ইমরান খান ও পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীদের আসামি করে এসব মামলা হয়েছে।

ইমরান খানের ‘শেষ ডাক’-এ সাড়া দিয়ে গত ২৪ নভেম্বর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বিক্ষোভ শুরু করে তার সমর্থক ও পিটিআইয়ের কর্মীরা। কিন্তু গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর রেড জোনে পিটিআই কর্মী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব ও সমর্থকরা দ্রুত পিছু হটেন।

তিন দিনের এই বিক্ষোভে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য এবং তিনজন রেঞ্জার্স কর্মকর্তা রয়েছেন।

পরবর্তী অভিযানে পিটিআইয়ের বহু কর্মী গ্রেপ্তার হন এবং একাধিক মামলা দায়ের করা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একটি মামলা কোহসার থানায় ২৬ নভেম্বর থানার স্টেশন হাউজ অফিসার (এসএইচও) মোহাম্মদ ইমরানের অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়।

পুলিশ মামলায় ৯৬ জন সন্দেহভাজনের একটি তালিকা জমা দেয়, যাতে ইমরান, বুশরা বিবি, মুখ্যমন্ত্রী গন্ডাপুর, সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি, জাতীয় পরিষদের সাবেক স্পিকার আসাদ কায়সার, পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর, জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুব এবং আরও অনেক নেতার নাম রয়েছে।

শুনানিতে এটিসি বিচারক তাহির আব্বাস সিপরা পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে এই ৯৬ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, পিটিআই নেতারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের আক্রমণ করেন এবং তাদের বিক্ষোভে সরকারি কর্মচারীদের ব্যবহার করেন। বিক্ষোভকারীদের কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িতে আটকা পড়েন এবং এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

 

সবা:স:জু-১৫৫/২৪

আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই

স্টাফ রিপোর্টার//

মা মারা গেছে, আব্বুকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমরা কার কাছে থাকব? কে আমাদের দেখাশোনা করবে?

এভাবেই কাঁদতে কাঁদতে নিজেদের দুঃখের কথা বলছিল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের চিত্রাপাড়া গ্রামের জামাল মিয়ার ১৩ বছরের ছেলে সাজ্জাদ মিয়া। ছয় বছর বয়সী বোন আফসানা আক্তার, এক মাস বয়সী যমজ বোন আনিশা ও তানিশাকে নিয়ে এখন দিশেহারা শিশুটি।

জানা গেছে, গত ১২ অক্টোবর যমজ সন্তান জন্মের এক সপ্তাহ পর মারা যান সাজ্জাদের মা সাথী বেগম। মায়ের মৃত্যুর পর তাদের বাবা জামাল মিয়া তার ৪ সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে দেখাশোনা করতেন। তবে গত ৯ নভেম্বর গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় দিনমজুর জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায় পুলিশ। এরপর মা হারা শিশু সাজ্জাদদের আশ্রয় এখন অশীতিপর অসুস্থ দাদি গোলজান বেগমের কাছে। তবে শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের ভারে নিজেই ভালোভাবে চলতে পারেন না গোলজান বেগম। ফলে তিন বোনদের নিয়ে দিশাহারা সাজ্জাদ। অভিভাবক না থাকায় পড়ালেখাও বন্ধ হতে চলেছে স্থানীয় এম এম খান উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া সাজ্জাদ ও ৪৭ নম্বর চিত্রাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা আক্তারের।

শিশু সাজ্জাদ মিয়া বলে, কয়েক দিন পরেই আমার বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। আমার স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি কে দেবে? আমার এক মাস বয়সী দুই বোনের দুধের টাকা কে দেবে? বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাদের খাবার দিচ্ছে, এভাবে কত দিন চলবে? আমি আমার বাবাকে ফেরত চাই।

সাজ্জাদের নানি শাহিনুর বেগম বলেন, মাস খানেক আগে আমার মেয়ে যমজ কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার ছয় দিন পর মারা যায়। মেয়ে মারা যাওয়ার পর আমার জামাতা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। চার ছেলে-মেয়ে ও তার মাকে দেখাশোনা করত। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। কী অপরাধ করেছিল আমার জামাতা? সে দিনমজুরের কাজ করত। এ দেশে কোটি কোটি টাকা যারা লুটে খেয়েছে, তারা তো দিব্যি ভালো আছে। অবুঝ চারটি বাচ্চা নিয়ে কী করব আমরা? আল্লাহ এই মাসুম বাচ্চাদের কপালে এত কষ্ট দিয়ে পাঠাল?

সাজ্জাদের চাচা মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই। একসময় সে আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে, তা আমাদের জানা নেই। এখন জামালের চার শিশুসন্তানকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন বলে আমরা জেনেছি।

সবা:স:জু-১১০/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম